নখের যত্নে যা করবেন

প্রতীকী ছবি

বিভিন্ন রোগে নখের রং, পুরুত্ব ও বৃদ্ধিতে পরিবর্তন হয়। কোনো পরিবর্তনই অবহেলা না করে প্রতিকার করা উচিত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে নখ পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। গর্ভবতী নারীদের নখ নরম হয় ও সহজে ভেঙে যায়। নখে কোনো আঘাত লাগলে নখের রং বদলে যেতে পারে। আঘাতের মাত্রা বেশি হলে নখ মাংস থেকে আলগা হয়ে পড়ে। তবে ছয় মাসের মধ্যে সুস্থ নখ তৈরি হয়ে যায়।

দাঁত দিয়ে নখ কামড়ালে নখের ক্ষতি হয়, স্বাভাবিক আকৃতি নষ্ট হয়ে যায়। আবার মুখ থেকে জীবাণু নখ ও নখের আশপাশের ত্বকে প্রবেশ করে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ায়। দীর্ঘ সময় নেইলপলিশ রেখে দিলে নখের কেরাটিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেইলপলিশ ওঠানোর জন্য নখে ব্যবহৃত রিমুভারে অ্যাসিটোন নামের কেমিক্যাল নখের উপরিভাগের আবরণ ক্ষয় করে নখ দুর্বল করে ফেলে। তাই অ্যাসিটোনমুক্ত নেইলপলিশ রিমুভার ব্যবহার করতে হবে।

ধূমপায়ীদের নখ হলুদ হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত পানি ও ডিটারজেন্ট নখ ক্ষয় করে। নিয়মিত নখ না কাটলে, নখ বেশি কেটে ফেললে কিংবা নখের কোনা অতিরিক্ত কাটলে সমস্যা হতে পারে। ওয়ার্ট নামের চর্মরোগ হলে নখ ও নখের আশপাশে ছোট ছোট গোটা ওঠে। নখের কিউটিকল ফুলে যায় ও নখ দেবে যায়। নখ ও নখের আশপাশের ত্বক ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক দিয়ে আক্রান্ত হলে নখের রং বদলে যেতে পারে।

সোরিয়াসিস, আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা, ডায়াবেটিস, হার্ট, লিভার, ফুসফুসের রোগ ও থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা থাকলে বা কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও নখের নানা পরিবর্তন আসতে পারে।

পরামর্শ

গোসলের পরে নখ কাটুন। নখ সব সময় পরিষ্কার ও শুকনা রাখুন। নরম ব্রাশ অথবা কাপড় দিয়ে নখ নিয়মিত পরিষ্কার করুন। পানি ও ডিটারজেন্ট কিংবা অন্য কোনো সাবানজাতীয় জিনিস অতিরিক্ত ব্যবহার করলে রাবারের গ্লাভস পরে নিন। হাতের নখ ও আঙুলের জন্য ক্রিম কিংবা লোশন ব্যবহার করুন।

পরিষ্কার মোজা পরবেন। কোনো সেলুনে নখের পরিচর্যার জন্য গেলে ব্যবহৃত যন্ত্র অথবা দ্রব্যগুলো ঠিকমতো জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে কি না, সেই বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখুন। সম্ভব হলে নিজের ব্যবহারের জন্য আলাদা জিনিসপত্র নিয়ে যেতে পারেন। ছত্রাকজনিত কোনো সংক্রমণ (যেমন অ্যাথলেটস ফুট) হলে তা উপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

যা করবেন না

নখের দুই পাশের কোনার অংশ কাটা যাবে না। নখ কাটার সময়ে শুধু নখের মাথা বা সামনের বাড়তি অংশ কাটতে হবে। নখ বেশি কেটে ফেললে নখকুনি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ধারালো কিছু দিয়ে নখের নিচের ময়লা পরিষ্কার করা যাবে না। নখে ব্যথা কিংবা চাপ লাগে এমন জুতা পরা যাবে না। দাঁত দিয়ে নখ ও নখের আশপাশের চামড়া কামড়ানো যাবে না। খালি পায়ে হাঁটা যাবে না।

ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম, যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।