শিশুরা শাকসবজি না খেলে কী করবেন

অনেক বাচ্চা শাকসবজি খেতে চায় না; কিন্তু আমরা জানি, ভিটামিন ও খনিজের উৎস হচ্ছে শাকসবজি। সুতরাং বাচ্চারা শাকসবজি খেতে না চাইলে কী করবেন। 

শাকসবজি আমরা কেন খাই

খাদ্য উপাদানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান হচ্ছে ভিটামিন ও মিনারেল। আর এই দুই উপাদানের ভান্ডার শাকসবজি। শরীরের প্রতিদিনের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা মেটায়, রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে শাকসবজি। বাচ্চাদেরও একই কারণে শাকসবজি খাওয়ানোর চেষ্টা করা উচিত। 

শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা মেটাতে ভাত/রুটি/মুড়ি, প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মাছ/মাংস/ডিম/ডাল এবং চর্বির চাহিদা মেটাতে ঘি/মাখন/তেল/চর্বি খাই আমরা। একইভাবে ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা মেটাতে আমরা শাকসবজি খাই।

ভিটামিন ও মিনারেলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে তাজা ফলমূল। শাকসবজির মতো ফলমূলেও প্রায় সব ভিটামিন বা মিনারেল পাওয়া যায়; বরং ফলমূলে শাকসবজির চেয়ে একটু বেশি ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। 

শিশু শাকসবজি খেতে না চাইলে নানা ধরনের ফলমূল খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। এতে বাচ্চার ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব পূরণ হবে।

খোসাসহ আপেল, আম, লাল আঙুর, তরমুজ ইত্যাদি ফল ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস। আবার লালশাক, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, কাঁকরোলও ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস। তাই শিশু লালশাক, মিষ্টিকুমড়া না খেয়ে পরিমাণমতো আপেল বা তরমুজ খেলে তাতেও ভিটামিন এ-এর চাহিদা পূরণ হবে।

আবার টমেটো, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, লেটুসপাতা ইত্যাদিতে ভিটামিন সি আছে। অন্যদিকে পেয়ারা, আমলকী, আনারস, স্ট্রবেরি ইত্যাদি ফলেও ভিটামিন সি রয়েছে। 

ফলে শিশু শাকসবজি খেতে না চাইলে তাকে অন্তত নানা ধরনের ফলমূল খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। এতে বাচ্চার ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব পূরণ হবে। শাকসবজি খাওয়াতে শিশুর জন্য রঙিন সবজি রান্না করতে হবে। এগুলো খেলে কী উপকার, না খেলে কী ক্ষতি, তা বোঝাতে হবে।

একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ শাকসবজি ও ফলমূল মিলিয়ে ৪০০ গ্রামের মতো খেলেই সারা দিনের শরীরের ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। প্রতিদিন ৪০-৫০ গ্রাম ফলমূল খাওয়া উচিত। এটা শরীরের জন্য খুব জরুরি। 

শাকসবজি রান্না করলে কিছু পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। কিন্তু ফলমূল সরাসরি খাওয়া হয়, তাই এর পুষ্টিগুণ অক্ষত থাকে। তাই বাচ্চা শাকসবজি খেতে না চাইলে পরিমিত ফলমূল খাওয়ান। 

সতর্কতা 

● অতিরিক্ত শাক খেলে বাচ্চার পেটের পীড়া হতে পারে। 

● রাতের খাবারে শাক না দেওয়া উত্তম। এতে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে।

●গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি, বাচ্চাকে এমন সবজি বেশি খাওয়াবেন। যেমন লাউ, পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদি।

মো. ইকবাল হোসেন, সিনিয়র পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল