ল্যাবএইডে জটিল অস্ত্রোপচার শেষে হাঁটতে পারছেন জান্নাতুল

গাজীপুরের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস এখন স্বাভাবিকভাবে হাঁটছেন
ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের সৌজন্যে

গাজীপুরের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের বয়স তখন ২২ বছর। এক সন্তানের মা। সন্তানের বয়স সবে দুই বছর পেরিয়েছে, সে সময়ই হঠাৎ তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে। নন-হজকিন লিম্ফোমা। দেশেই চিকিৎসা নিয়েছিলেন। কেমোথেরাপির অসহ্য যন্ত্রণা পার হয়ে শেষ পর্যন্ত জিতলেনও সেই লড়াই।

কিন্তু দুই বছর পর ২০১২ সালে আবার নতুন এক যুদ্ধে নামতে হলো। দুপাশের হিপ জয়েন্টেই প্রচণ্ড ব্যথা। ব্যথা এতটাই তীব্র যে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হতো। ক্যানসারের বিরুদ্ধে অত বড় লড়াইটা শেষ করেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারলেন না জান্নাতুল।

আরও পড়ুন

নতুন যুদ্ধ

চিকিৎসার পরও হিপ জয়েন্টের (ঊরুসন্ধি) ব্যথা রয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারতেন না
ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের সৌজন্যে

অসহ্য যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেন জান্নাতুল। তবে অবস্থার উন্নতি হলো না। চিকিৎসার জন্য নানা জায়গায় গেলেন। তবে ফলাফল আশানুরূপ হলো না। পরে দেশের একটি স্বনামধন্য হাসপাতালে বড় ধরনের শল্যচিকিৎসা করা হলো। তাতেও ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলল না। চিকিৎসার পরও হিপ জয়েন্টের (ঊরুসন্ধি) ব্যথা রয়ে গেল। স্বাভাবিকভাবে হাঁটতেও পারছিলেন না। সেই শল্যচিকিৎসার পর যন্ত্রণার মধ্যেই পেরিয়ে গেল দেড় বছর।

কষ্টের দিন পেরিয়ে

ল্যাবএইডে শল্যচিকিৎসার পরের বছরই ১০ বছর আগে আবার মা হন জান্নাতুল
ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের সৌজন্যে

২০১৪ সালে এক চিকিৎসক বন্ধুর কাছে অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেনের খোঁজ পান জান্নাতুল। তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারির প্রধান। তিনিই নতুনভাবে জান্নাতুলের শল্যচিকিৎসা করলেন। একই দিনে দুপাশের হিপ জয়েন্ট প্রতিস্থাপন করা হলো। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই শল্যচিকিৎসার নাম টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট। তারপর? জান্নাতুলের মুখেই শুনুন, ‘এক মাস পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হয়েছিল। তারপর আবার হাঁটতে শুরু করি। ধীরে ধীরে একদম স্বাভাবিক হয়ে যায় আমার হাঁটাচলা।’

ল্যাবএইডে শল্যচিকিৎসার পরের বছরই আবার মা হন জান্নাতুল। সে–ও আজ ১০ বছর। সংসার আর দুই সন্তান নিয়ে এখন দারুণ ব্যস্ত জান্নাতুল। বড় সন্তান এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছোটটিরও পড়ালেখা চলছে। জান্নাতুল এখনো মাঝেমধ্যে ফলোআপে যান অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেনের কাছে।

আরও পড়ুন