ফ্রোজেন রুটি বা পরোটা কি স্বাস্থ্যকর
ক্লাস কিংবা অফিসের তাড়ায় ব্যস্ত সকাল। ঝটপট সকালের নাশতার জোগাড় করতে ফ্রোজেন বা হিমায়িত রুটি-পরোটা কিনে নেন অনেকেই। খাওয়ার আগে সেঁকে নিলেই হলো। ঝক্কি কমে যায় অনেকটাই। তবে এই ফ্রোজেন রুটি বা পরোটা খাওয়া কি আসলেই স্বাস্থ্যকর?
ভাত, রুটি, পরোটা শর্করার ভালো উৎস। রুটি বা পরোটা হিমায়িত করা হলে তাতে শর্করার পরিমাণের কোনো পার্থক্য হয় না। দেহের শর্করার চাহিদা মেটাতে তাই ফ্রোজেন রুটি বা পরোটা কাজে আসবে। আর লাল আটার রুটি হলে তাতে আঁশও থাকে ঠিকঠাক। তারপরও ফ্রোজেন রুটি আর পরোটাকে ঠিক স্বাস্থ্যকর নাশতা হিসেবে ধরা যাবে না বলে জানালেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
ফ্রোজেন রুটি কেন ক্ষতিকর
বাজারে যে ফ্রোজেন রুটি পাওয়া যায়, তা দেখতে বেশ ভালো হয়। কারণ, এসব রুটি তৈরি হয় ময়দা কিংবা পরিশোধিত আটা দিয়ে। উপকরণ যত পরিশোধিত হবে, রুটিতে আঁশের পরিমাণ ততই কম থাকবে। ফ্রোজেন রুটি নরম রাখার জন্য অনেক সময় ময়দা ব্যবহার করা হয়। তার মানে এসব রুটি খেলে আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ হুট করে বেড়ে যাবে।
আবার কিছু সময় পর শর্করার মাত্রা কমেও যাবে। রক্তের শর্করার পরিমাণ হুট করে বাড়ার বিষয়টি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য তা বেশ ক্ষতিকর। রক্তের শর্করা হুট করে কমে গেলে ক্ষুধাও পেয়ে যায়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তা ছাড়া অনেক কোম্পানিই ফ্রোজেন রুটিতে খানিকটা প্রিজারভেটিভ দেয়।
প্রয়োজনে লাল আটার রুটি খেতে পারেন
ফ্রোজেন রুটি খেতে চাইলে লাল আটার রুটি বেছে নিন, যাতে থাকে পর্যাপ্ত আঁশ। এই রুটি খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা হুট করে বাড়ে না বা কমে না। তাই সহজে ক্ষুধাও পায় না এবং তা তুলনামূলক স্বাস্থ্যকরও বটে। খানিকটা প্রিজারভেটিভ থাকলেও প্রয়োজন মেটাতে লাল আটার ফ্রোজেন রুটি মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতে পারে।
সুস্বাদু ফ্রোজেন পরোটায় যা থাকে
বাসায় পরোটা বানালে আপনি স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করার সুযোগ পান। কিন্তু ফ্রোজেন পরোটা তৈরির সময় স্বাস্থ্যকর তেলের ব্যবহার না-ও হয়ে থাকতে পারে। ফ্রোজেন পরোটায় থাকে ট্রান্সফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। ভাজার জন্য তেল ব্যবহার না করলেও আপনি এসব উপাদান ঠিকই পাচ্ছেন ফ্রোজেন পরোটা থেকে। আর হুট করে রক্তের শর্করা বাড়া বা কমার ব্যাপারটা তো আছেই।
এ ছাড়া ফ্রোজেন পরোটায় প্রিজারভেটিভও থাকতে পারে। তাই কালেভদ্রে পরোটা খেতে চাইলে ঘরেই বানিয়ে নিন। অবশ্য নিয়মিত কোনো পরোটা খাওয়াই উচিত নয়, তা ঘরেই বানানো হোক কিংবা হোক প্যাকেটজাত পরোটা।