খালি ভুলে যান? এই চার নিয়ম মেনে চলুন
ভুলে যাওয়া সব সময় খারাপ নয়। ধরুন, আপনার স্মৃতিশক্তি একদম নিখুঁত, যা দেখেন সব মনে থাকে। কিন্তু তা প্রয়োগ করতে গেলে লাগবে আরেক দক্ষতা। স্মৃতি দিয়ে ভবিষ্যতের একটা সম্ভাব্য ঘটনা সাজাতে হবে। কিন্তু সবই যদি আপনার মনে থাকে, মস্তিষ্ক সেগুলো দিয়ে কল্পিত ঘটনা বানাতে হিমশিম খাবে। কারণ, মস্তিষ্ক এই চর্চাটা করে আপনার বিস্মৃতি থেকে।
ধরুন, আপনি একটি বন দেখছেন। মস্তিষ্ক তার প্রতিটা গাছের সব খুঁটিনাটি বিবরণ মনে রাখবে না। মোটাদাগের কিছু দৃশ্য নিয়ে বনের একটা চিত্র দাঁড় করাবে। পরে যখন আপনি সেটা কল্পনা করবেন, মস্তিষ্ক সেই দৃশ্যগুলো জোড়া লাগাতে বাকি বিবরণগুলো কল্পনা করে নেবে। পরবর্তী সময় যদি আপনি অন্য গাছের বন ভাবেন, মস্তিষ্ক আগের স্মৃতিটাকে সেভাবে তৈরি করবে। এভাবে যতবার আপনি যতভাবে ভাববেন, মস্তিষ্ক বনের স্মৃতিটাকে ততভাবে কাজে লাগাবে। সোজা কথায়, মস্তিষ্ক যে খুঁটিনাটি দৃশ্যগুলো ভুলে গেল, সেটাই আপনার কাজে লাগবে।
তাই বলে সবকিছু ভুলে যাওয়া আবার কাজের কথা নয়। আর গোলটাও তখনই লাগে। দেখা যায়, যেটা দরকার নেই, মস্তিষ্ক সেটা মনে রেখেছে। অথচ আপনার সবচেয়ে জরুরি তথ্যটাই আর মনে রাখেনি! পাসওয়ার্ড, গোপন নম্বর, আলমারির চাবিটা কোথায় রেখেছিলেন ভুলে গেছেন। হয়তো প্রেজেন্টেশন দিতে দাঁড়িয়েছেন কিংবা বক্তৃতা দিতে, পরের কথাটা আর কিছুতেই মনে পড়ছে না। এমন পরিস্থিতি এড়াতে মেনে চলতে পারেন এই চার নীতি।
মনোযোগ ধরে রাখুন
কথা বলতে বলতে বা কাজ করতে করতে মনোযোগ সরে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু যেটা আপনি মনে রাখতে চান, সেটা পড়া, শোনা বা করার সময় পুরো মনোযোগ দিন। অন্য কিছু মাথায় এলেও দ্রুত তা ঝেরে ফেলে মনোযোগ ফেরান। সে জন্য মনোযোগ দিন রাতের ঘুমে। ঠিকঠাক ঘুম না হলে মনোযোগ ঠিক রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে।
সাজিয়ে নিন
এলোমেলো কোনো কিছুই মনে রাখা কঠিন। তাই আগে সাজিয়ে নিন। তারপর মনে রাখার চেষ্টা করুন। ধরুন, আপনি কোনো সংখ্যা মনে রাখতে চাইছেন, সেটাকে কয়েক ভাগে সাজিয়ে নিন। সাজাতে পারেন তারিখের মতো করে কিংবা খেলার ফলের মতো। তাহলে সেই তারিখগুলো বা খেলাগুলো মনে করলেই চলবে। আবার নামের ক্ষেত্রে তাদেরকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে নিতে পারেন।
আগে বুঝুন
পড়াশোনার ক্ষেত্রে আগে বিষয়টা বুঝে নিন। মূল বিষয়বস্তু কী, সঙ্গে প্রাসঙ্গিক আরও কী কী বলা হয়েছে। আর সময় মনে রাখতে তাতে ঘটা ঘটনাটা বোঝার চেষ্টা করুন। সেটা আপনার মনে কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল বা আপনার আশপাশের মানুষদের মনে, সেটা উপলব্ধি করুন।
স্মৃতির সঙ্গে মিলিয়ে নিন
নতুন কোনো তথ্য মনে রাখতে আপনার জানা কোনো তথ্য বা ঘটনার সঙ্গে সেটা মিলিয়ে নিন। ধরুন, আপনি ৫২ নম্বর বাড়ির ঠিকানা মনে রাখতে চাইছেন, সেটাকে মিলিয়ে নিতে পারেন ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে। আবার বয়স্কদের জন্য মুঠোফোন বা কম্পিউটারে কাজের প্রক্রিয়া মনে রাখা বেশ কঠিন। তাঁরাও এভাবে সেই কাজের প্রক্রিয়াকে হাতে-কলমে কাজ করার প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করে মনে রাখতে পারেন।
তথ্যসূত্র: বিগ থিঙ্ক