চোখ পিটপিট করে কেন? চোখ পিটপিট করলে কী করব

দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার, মুঠোফোন, টিভি দেখার কারণে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়েছবি: পেক্সেলস

অনেকেরই চোখ পিটপিট করা বা অনিচ্ছাকৃতভাবে চোখের পাতায় কম্পন (আইলিড টুইচিং) হওয়ার সমস্যা আছে। কথ্য বাংলায় আমরা অনেক সময় একে ‘চোখ লাফানো’ও বলি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি সাময়িক এবং বিপজ্জনক নয়, তবে কখনো কখনো এটি বড় কোনো সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে।

চোখ পিটপিট করার সাধারণ কারণ

  • চোখের ক্লান্তি: দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার, মুঠোফোন, টিভি দেখার কারণে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

  • চোখের শুষ্কতা: বিশেষ করে যাঁদের বয়স বেশি বা যাঁরা লেন্স ব্যবহার করেন, তাঁদের চোখে শুষ্কতা হতে পারে।

  • মানসিক চাপ: অতিরিক্ত টেনশন বা দুশ্চিন্তা থাকলে চোখে কম্পন দেখা দেয়।

  • ঘুমের অভাব: পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে স্নায়ু দুর্বল হয় এবং চোখ পিটপিট করতে পারে।

  • ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল: অতিরিক্ত চা, কফি বা অ্যালকোহল গ্রহণ করলে স্নায়ুর উত্তেজনা বাড়ে।

  • পুষ্টির ঘাটতি: বিশেষ করে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতির কারণে এই সমস্যা হতে পারে।

আরও পড়ুন

চোখ পিটপিট করার পাশাপাশি যেসব লক্ষণ থাকলে সতর্ক হওয়া জরুরি

  • পিটপিট করা বন্ধ না হওয়া বা অনেক দিন ধরে চলা

  • পুরো চোখের পাতা বা মুখের একপাশ কেঁপে ওঠা

  • চোখ লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া বা ব্যথা অনুভব করা

  • দৃষ্টিশক্তি কমে আসা

  • এসব ক্ষেত্রে এটি ব্লিফেরোস্প্যাজম, হেমিফেশিয়াল স্প্যাজম বা অন্য কোনো স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

প্রতিকার কী কী

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।

  • চোখকে বিশ্রাম দিন: দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে প্রতি ২০ মিনিটে একবার ২০ ফুট দূরের কিছু দেখুন, ২০ সেকেন্ডের জন্য (২০-২০-২০ নিয়ম)।

  • চোখ আর্দ্র রাখুন: প্রয়োজনে আইড্রপ ব্যবহার করতে পারেন (চিকিৎসকের পরামর্শে)।

  • মানসিক চাপ কমান: রিলাক্সেশন বা মেডিটেশন চেষ্টা করতে পারেন।
    পুষ্টিকর খাবার খান: ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার (বাদাম, কলা, পালংশাক) বেশি খান।

  • ক্যাফেইন খাওয়া কমিয়ে দিন: চা-কফি কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।

  • চোখ ঠান্ডা রাখুন: মাঝেমধ্যে চোখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন।

  • চোখ পিটপিট করা সাধারণত গুরুতর কিছু নয়। নিজের যত্ন নিলে ঠিক হয়ে যায়। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্য উপসর্গ দেখা দেয়, দেরি না করে একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

লেখক: ডা. গোলাম রাব্বানী, কনসালটেন্ট, বাংলাদেশ আই হাসপাতাল, জিগাতলা লিমিটেড