মাথার ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়

মাথার স্ক্যাল্প বা ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ হলে চুলকানি, ফুঁসকুড়ি, ব্যথা ও জ্বলুনির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ থেকে খুশকিও হতে পারে।

অনেক ধরনের ছত্রাক মাথার ত্বকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তবে তিন থেকে চার ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ খুব বেশি দেখা যায়, যেমন মেলাসিজিয়া। এই ছত্রাক মাথার ত্বকে চুলের গোড়ায় বসবাস করে।

মাথার ত্বকে সিবাম নামক একধরনের তেল নিঃসৃত হয়, যা চুল সুন্দর ও মসৃণ রাখার কাজ করে থাকে। মেলাসিজিয়া এই সিবাম খেয়ে বেঁচে থাকে।

  • মেলাসিজিয়া সিবামের ওপর একধরনের এনজাইম প্রয়োগ করে, যেটা তেলকে ভেঙে ফেলে মেলাসিজিয়ার খাদ্য উপযোগী করে তোলে। তেলের যে অংশ মেলাসিজিয়া খায় না, তা জমাট বেঁধে আমাদের মাথার ত্বক ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করলে চুলকানি ও জ্বলুনি হয়। মাথার ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের নিচে নতুন ত্বক তৈরি হয় ও ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক খসে যেতে থাকে। একেই খুশকি বলে।

  • যাঁদের মাথার ত্বকে তেল নিঃসরণ বেশি, তাঁদের খুশকিও বেশি হয়। খুশকি মাথার ত্বক ছাড়া মুখ, নাক, কান, ভ্রু ইত্যাদি জায়গায়ও দেখা দিতে পারে।

  • মাথার ত্বকে ময়লা জমা, মৃত ত্বক উঠে আসা, ত্বক থেকে আঁশের মতো ওঠা, কপালে ও ঘাড়ে সাদাটে আবরণ পড়া, ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়া, চুলকানি, ত্বক ফাটা ও রক্ত বের হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয় ছত্রাক সংক্রমণ হলে।

চিকিৎসা

  • মাথার ত্বকে নানা ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। ধরন নিশ্চিত না হয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না। এতে মাথার ত্বকের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হবে। নিয়মিত গোসল করা ও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। অনেক সময় সাধারণ সাবান বা শ্যাম্পুসহ নিয়মিত গোসলেই এটি সেরে যায়। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম ও শ্যাম্পু ব্যবহারের মাধ্যমে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

  • ঘরোয়া চিকিৎসায় কাজ না হলে বা অস্বস্তি বাড়লে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। ছত্রাকের সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।

  • ঘরোয়া উপকরণ দিয়েও মাথার ত্বকের সংক্রমণ কমানো যায়। অ্যালোভেরা, বেকিং সোডা, নারকেল তেল, অলিভ তেল ও ভিনেগার ব্যবহারের মাধ্যমে সংক্রমণ কমে।

ডা. মো. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম, যৌন ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল