বাতাসে ভাসা পরাগরেণু কি আপনার সর্দি-কাশির কারণ
ফুল, গাছ, ঘাস কিংবা আগাছা সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম পরাগরেণু ছড়ায়। এটি উদ্ভিদের বংশবৃদ্ধির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এই কণা একই প্রজাতির অন্যান্য উদ্ভিদকে নিষিক্ত করে। তবে বাতাসে ভাসা পরাগরেণু কারও কারও অ্যালার্জি বা নানা অপ্রীতিকর উপসর্গের কারণ হতে পারে।
পরাগ অ্যালার্জি কী
পরাগ অ্যালার্জির তিনটি প্রধান ধরন আছে।
১. গাছের পরাগ অ্যালার্জি: বাতাস মাইলের পর মাইল গাছের পরাগ বহন করতে পারে। এমনকি অল্প পরিমাণে শ্বাস নিলেও অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যে গাছগুলো প্রায়ই অ্যালার্জির কারণ হয়, তার মধ্যে রয়েছে ছাই, অ্যাসপেন, মালবেরি, ওক, পেকান ও উইলো।
২. ঘাস পরাগ অ্যালার্জি: ঘাসের পরাগ থেকে অনেক লোকের অ্যালার্জি হতে পারে। বারমুডা, জনসন, অর্চার্ড, রেডটপ ও টিমোথির মতো বিভিন্ন ধরনের ঘাস রয়েছে, যা প্রায়ই অ্যালার্জি সৃষ্টি করে।
৩. আগাছা পরাগ অ্যালার্জি: আগাছার অ্যালার্জি আছে যাঁদের, তাঁরা শুষ্ক, গরম, বাতাসের দিনগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভোগেন। রাগউইড সবচেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে।
পরাগ অ্যালার্জির লক্ষণ কী কী
সর্দি
গলা ভেঙে যাওয়া
কাশি
চুলকানি
চোখের নিচে ফোলা
নীলাভ ত্বক
স্বাদ বা গন্ধের অনুভূতি হ্রাস
অ্যাজমা বা হাঁপানি বেড়ে যাওয়া।
পরাগ অ্যালার্জির চিকিৎসা কী
অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ: যাঁরা পরাগ অ্যালার্জিপ্রবণ, অ্যালার্জির মৌসুম শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে তাঁদের এই ওষুধগুলো গ্রহণ করা শুরু করা উচিত।
অ্যালার্জি শট: যদি ওষুধ উপসর্গগুলোকে সহজ না করে, তবে চিকিৎসকেরা অ্যালার্জি শটের পরামর্শ দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে রোগী অ্যালার্জেনের একটি সিরিজ ইনজেকশন গ্রহণ করেন।
নাকের কর্টিকোস্টেরয়েড স্প্রে: এগুলো নাকের প্রদাহ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত লক্ষণগুলো হ্রাস করতে কার্যকর।
দীর্ঘমেয়াদি অ্যালার্জি ব্যবস্থাপনার জন্য সহায়ক হতে পারে ইমিউনোথেরাপি। তবে চিকিৎসার সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
অনেকগুলো ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, যা পরাগ অ্যালার্জির উপসর্গ উপশমে সাহায্য করতে পারে। যেমন হাই ইফিসিয়েন্সি পার্টিকুলার এয়ার (এইচইপিএ) ফিল্টার বা ডিহিউমিডিফায়ার।
কীভাবে পরাগ অ্যালার্জি প্রতিরোধ করা যায়
অন্যান্য অ্যালার্জির মতো, পরাগ অ্যালার্জির লক্ষণগুলো প্রতিরোধ করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো অ্যালার্জেন এড়ানো।
শুষ্ক এবং বাতাসের দিনে বাড়ির ভেতরে থাকা বা বাইরে গেলে মাস্ক পরা।
পরাগ সংখ্যা বেশি হলে দরজা এবং জানালা বন্ধ রাখা।