যদি ঘুম না আসে

সুস্থ শরীর ও মনের জন্য ভালো ঘুমের বিকল্প নেই। প্রত্যেক পূর্ণবয়স্ক মানুষের দিনে সাত-আট ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। কেউ পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য সময় না পেলে দিনে হালকা ন্যাপ নিতে পারেন। দীর্ঘ ঘুমের মতো উপকার না হলেও ন্যাপে শরীর ঝরঝরে লাগবে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভালো ঘুমের জন্য ওষুধের প্রয়োজন নেই। দরকার কেবল কিছু অভ্যাসের বদল। জেনে নিন প্রশান্তির গাঢ় ঘুমের জন্য আপনার কী করতে হবে।

  • ঘুমের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। সব সময় আলো বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। শোবার ঘরে খুব শব্দ হয় না, এমন ব্যবস্থা করুন।

  • ঘুমানোর আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো বন্ধ করে রেখে কাজ দূরে সরিয়ে রাখুন।

  • ভালো ঘুমের জন্য বালিশও গুরুত্বপূর্ণ। বিছানা বা ম্যাট্রেস আরামদায়ক হওয়া চাই। একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গে ঘুমালে পর্যাপ্ত জায়গা লাগবে।

ক্লান্তি, অবসাদ, দুশ্চিন্তা, কাজ, সংসার আর সন্তানদের ঝামেলা অনেক সময় ঘুমকে কঠিন করে তোলে। অর্থনৈতিক কষ্ট, বেকারত্ব, বন্ধুত্ব বা প্রেমে ফাটল অথবা কোনো কঠিন অসুখ ঘুমের ক্ষতি করে। এসব বিষয়কে হয়তো দ্রুত আয়ত্তে আনা কঠিন। কিন্তু কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন, যা আপনাকে ঘুম আনতে সহায়তা করবে।

  • প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যান এবং একই সময় ঘুম থেকে উঠুন। ছুটির দিনগুলোতেও ঘুমের একই রুটিন বজায় রাখুন।

  • পানি ও তরল সন্ধ্যার পর থেকে কমিয়ে দিন। ঘুমের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার সেরে ফেলুন। ঘুমের আগে বেশি পানি বা পানীয় গ্রহণ রাতে ঘুম ভাঙাবে।

  • নিকোটিন, কফি মস্তিষ্ককে জাগ্রত রাখে। কফি ঘুমের সাত-আট ঘণ্টা আগে খেতে হবে।

  • প্রতিদিন অল্পবিস্তর ব্যায়াম করুন। হালকা অ্যারোবিক ব্যায়াম আপনাকে একটা ভালো ঘুম উপহার দিতে পারে।

  • দুপুরে যদি ভাতঘুম নিতে হয়, তবে সেটি আধা ঘণ্টার বেশি নয়।

  • ভালো ঘুমের জন্য হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা, বই পড়া বা কোনো হালকা গান শোনা ভালো।

  • আলোটাও হতে হবে স্নিগ্ধ। যখন আপনি ক্লান্ত ও ঘুমে ভেঙে পড়ছেন, তখনই আলো বন্ধ করে ঘুমাতে যান। যদি ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে ঘুম না আসে, তাহলে আবার উঠে পড়ুন এবং আগের কাজ করুন।

  • ঘুম নিয়ে অযথা কোনো দুশ্চিন্তা ঠিক নয়। ঘুমের দুশ্চিন্তা আপনাকে ঘুমাতে দেবে না।

  • ঘুমের ওষুধ শুধু শেষ অবলম্বন হিসেবে রাখুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনো ঘুমের ওষুধ খাবেন না।

ডা. এ টি এম রফিক, রেজিস্ট্রার, শিশুরোগ বিভাগ, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল