জ্বরে গোসল করা কি খারাপ?

অনেকের ধারণা, জ্বর হলে গোসল করা নিষেধ। গোসল করলে ঠান্ডা বসে যাবে, তাতে জ্বর আরও বাড়বে। আমাদের দেশে জ্বর হলে জলপট্টি দেওয়া, মাথায় পানি ঢালা বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু জ্বরের রোগীর গোসল করা কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে একেবারেই নিষেধ নয়।

গোসল না করলে এমনিতেই অস্বস্তি হয়। শরীর ম্যাজম্যাজ করে। উপরন্তু জ্বরের কারণে খারাপ লাগার অনুভূতি কাজ করে। জ্বর ছাড়ার সময় শরীর ঘামে এবং গোসল না করলে আরও বেশি অস্বস্তি হয়। বরং গোসল করলে জ্বরের তীব্রতা সাময়িকভাবে কমে, রোগী সতেজ বোধ করেন। পরিচ্ছন্নতাও বজায় থাকে।

জ্বরের রোগীর গোসল করা কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে একেবারেই নিষেধ নয়
ছবি: প্রথম আলো

পানির তাপমাত্রা

অনেক সময় জ্বরের রোগী ঠান্ডা বোধ করেন, শীত লাগে। পানিপ্রবাহের সংস্পর্শে আরও শীত বা কাঁপুনি হতে পারে। তাই স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানির সঙ্গে সামান্য গরম পানি মিশিয়ে নিলে ভালো। তাপমাত্রা রোগীর জন্য সহনীয় হতে হবে। খুব বেশি গরম বা খুব ঠান্ডা হবে না।

খেয়াল রাখুন

জ্বরের রোগীর মাথা ঘুরতে পারে, দুর্বল লাগতে পারে। শোয়া অবস্থা থেকে চট করে উঠে দাঁড়িয়ে হেঁটে গোসলখানা পর্যন্ত যেতে রোগী সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই রোগীকে সাবধানে ধীরে ধীরে উঠে বসতে হবে। হাঁটাচলায় তাড়াহুড়া করা যাবে না। প্রয়োজনে বাড়ির অন্য কারও সাহায্য নিতে হবে। গোসল করলে ভেজা শরীরে দীর্ঘ সময় থাকা উচিত নয়। গোসল করার পর শরীর ও মাথা ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে।

জ্বর হলে প্রচুর পানি ও তরল খাবার খাওয়া প্রয়োজন। ডাবের পানি, টাটকা ফলের রস, নানারকম স্যুপ বা দুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে প্রিজারভেটিভ মেশানো পানীয় (যেমন প্যাকেটের জুস) বর্জনীয়। কোমল পানীয় বা চিনি মেশানো অন্যান্য পানীয়ও বর্জনীয়। একবারে অধিক পরিমাণ খেতে না পারলেও বারবার অল্প অল্প করে পানি বা তরল খাবার খেতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ ও কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে চিনি, লবণ প্রভৃতি মেশানো পানীয় গ্রহণের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। কিডনি রোগীর পানির পরিমাণও পরামর্শ অনুযায়ী সীমিত রাখতে হয়।