মনো ডায়েট কী, তারকারা কীভাবে এই ডায়েট মেনে ওজন কমান
কিছুদিন আগে ইউকে টেলিগ্রামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ডায়েট নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন ভিক্টোরিয়া বেকহাম। গত ২৫ বছর তিনি বেছে নিয়েছেন একই ধরনের খাবার। ভাজা মাছ আর সেদ্ধ তরকারি খেয়ে নিজেকে রেখেছেন ফিট। একই কথা বলেছেন বলিউড তারকা আনুশকা শর্মাও। ঘুরেফিরে তাঁরা বেছে নেন একই বা এক ধরনের খাবার। তারকাদের পছন্দের তালিকায় থাকা এই ডায়েটের মূল রহস্য কী?
মনো ডায়েট কী
ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত একই বা এক ধরনের খাবার খাওয়াকে বলে মনোট্রফিক বা সিঙ্গল–ফুড বা মনো ডায়েট। একই বা এক ধরনের খাবার বলতে কেউ হয়তো শুধু আলু কিংবা আপেলই খান; আবার কেউ কেউ হয়তো শুধু ফল বা মাংসই খান। এ ধরনের ডায়েট সাধারণত তারকারাই বেছে নেন। এই ডায়েটে যেহেতু একই বা এক ধরনের খাবার খাওয়া হয়, তাই মাথা থেকে দূর হয়ে যায় বেশ কয়েকটি চিন্তা। প্রতিদিন কী খাব, কতটুকু ক্যালরি গ্রহণ করছি—এসবের চিন্তা থাকে না। দ্রুত ওজন কমাতে এই ডায়েট সাধারণের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মনো ডায়েটের সুবিধা
সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো শুরুতেই ডায়েটের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা সম্ভব। অনেকের কাছেই ডায়েট মানে বিশাল ঝক্কি; তালিকা ধরে, নিয়ম মেনে প্রতি বেলায় খাবার খাওয়া। মনো ডায়েটে এমন কোনো তালিকা নেই। ফলে খাবারের তালিকা মেনে চলার চিন্তাও এতে থাকে না। বরং একই ধরনের খাবারে থাকার কারণে মাথা থেকে ডায়েটের চিন্তা নেমে যায় অনেকখানি। সব মিলিয়ে ডায়েটের সঙ্গে যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়, সেটা অনেকটা দূর হয়ে যায়।
আর নিয়মিত একই ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে শরীরও খাবারের সঙ্গে মানিয়ে নেয়। হজমে নতুন করে কোনো সমস্যা তৈরি হয় না। শরীরে কতটুকু শক্তি দরকার, প্রতিদিনের কাজ করতে কতটুকু শক্তি খরচ হয়, মনো ডায়েটে সেটাও খুব ভালোভাবে বোঝা যায়।
মনো ডায়েটের অসুবিধা
মনো ডায়েটের সুবিধা শুনে ঝাঁপিয়ে পরে ডায়েট শুরু করবেন, ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়। বরং মনো ডায়েট করার আগে সতর্কতার প্রয়োজনও আছে বৈকি। মনো ডায়েটে দ্রুত ওজন কমলেও এর প্রভাব বেশ ক্ষণস্থায়ী। যেহেতু মনো ডায়েটে এক রকম খাবার নিয়মিত খাওয়া হয়, সেহেতু শরীরে বাকি উপাদানগুলোর অভাব দেখা দিতে পারে। এর প্রভাব পরতে পারে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায়। এ ছাড়া অনেক দিন মনো ডায়েট চালিয়ে গেলে শরীর বিভিন্ন রকম খাবারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় নিতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে হজমে। হরেক রকমের খাবারে থাকে ভিন্ন ভিন্ন উপাদান। বিভিন্ন প্রকার উপাদান খাবার হজমে সাহায্য করে। যেটা মনো ডায়েটে পাবেন না।
মনো ডায়েট শুরুর আগে
সব ধরনের ডায়েট যে সবার জন্য কাজ করবে, ব্যাপারটা তেমন নয়। বরং একেকজনের শরীরে একেক ধরনের ডায়েট ভালো কাজ করে। যে কারণে ডায়েট শুরুর আগে উচিত একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া। আপনার শরীর ও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনা করে তিনি একটি ডায়েট ঠিক করে দেবেন। এতে আপনার যদি ডায়াবেটিস অথবা বড় কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে, তবে তা সহজে কাটানো যাবে। মনো ডায়েট চালিয়ে যেতে চাইলে চেষ্টা করবেন শাকসবজি, ফলমূল কিংবা আঁশজাতীয় উপাদান যাতে বেশি থাকে। এ ছাড়া নিয়মিত পানি খেতে ভুলবেন না।
তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট