বাচ্চারা গর্ভে থাকতেই খাবারের স্বাদ আর গন্ধ পায়

অন্তঃসত্ত্বা নারীকে কোন উপদেশটা দেওয়া হয় সবচেয়ে বেশি? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। দ্বিগুণ খেতে বলা। কেউ অন্তঃসত্ত্বা হলেই আশপাশের মানুষ বলতে শুরু করে, ‘এখন তো তোমাকে দুজনের খাওয়া খেতে হবে।’ প্রশ্ন হলো, একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী যা খান, গর্ভের সন্তান কি তার স্বাদ–গন্ধ পায়?

গাজরের জুস খাওয়ার পর দেখা গেছে, বাচ্চাদের মুখের ভঙ্গি হয় অনেকটা হাসিমুখের মতো
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

এ প্রশ্ন নিয়েই যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণায় অংশ নেন ৮ ও ৯ মাসের গর্ভবতী ১০০ নারী। এই নারীদের বিভিন্ন স্বাদের ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। আর দেখা হয়, গর্ভের বাচ্চার মুখভঙ্গি। পরে এই নারীদের গাজরের জুস আর পাতাকপির জুস দেওয়া হয়। গাজরের জুস খাওয়ার পর দেখা গেছে, বাচ্চাদের মুখের ভঙ্গি হয় অনেকটা হাসিমুখের মতো। আর পাতাকপির জুস খাওয়ানোর পর তারা ‘ক্রাইং ফেস’ বা কান্নার মতন চেহারা করে।

পাতাকপির জুস খাওয়ানোর পর তারা ‘ক্রাইং ফেস’ বা কান্নার মতন চেহারা করে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

গবেষণা দলের প্রধান গবেষক বেইজা উসতুন বলেন, ‘একাধিক গবেষণা একটা দিকেই নির্দেশ করে। গর্ভে থাকা অবস্থায়ও বাচ্চারা খাবারের স্বাদ আর গন্ধ পায়। তারা কী খাবার খেতে ভালোবাসে, গর্ভে থাকতেই তারা তা জানে। আমরা সেটি বুঝতে পারি জন্মের পর।’ এই নারী গবেষক আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাচ্চারা হয়তো জন্মের পর প্রথমবারের মতো নানা কিছুর স্বাদ পায়। তবে বাস্তবতা হলো অন্তত অষ্টম মাস থেকেই মা যা কিছু খায়, সেসব খাবারের গন্ধ আর স্বাদ পায় তারা। তাই জন্মের পর প্রথমবার নয়, জন্মের আগে থেকেই তারা জানে কী খাবার তাদের পছন্দ, আর কী অপছন্দ।’ এই গবেষক আরও বলেন, হবু মায়ের উচিত অন্তত শেষ সময়ে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে ঘরের বানানো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। কেননা, সেই সময় থেকেই বাচ্চার খাদ্যাভ্যাস তৈরি হয়। আর বাচ্চার খাবারের অভ্যাস তৈরিতে এভাবে জন্মের আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মা।

পাতাকপি ও গাজরের জুস খাওয়ার পর গর্ভে থাকা বাচ্চার চেহারা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

এ গবেষণা ‘সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স’-এ প্রকাশিত হয়েছে। আর এটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড।