অ্যানাল ফিসারের চিকিৎসা

অ্যানাল ফিসার মলদ্বারের একটি রোগ, যাতে মলদ্বারের নিচের অংশ ফেটে গিয়ে তীব্র ব্যথা হয়। ব্যথার কারণে রোগী মলত্যাগে ভয় পায়। কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ায় পরে মলদ্বার আরও বেশি ছিঁড়ে যায়। আমাদের দেশে এ রোগের চিকিৎসার জন্য অনেকেই হাতুড়ে চিকিৎসক কিংবা কবিরাজের কাছে ছোটেন। অ্যানাল ফিসারকে পাইলস ভেবে মলদ্বারে ইনজেকশন বা গাছের পাতা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে রোগটি আরও জটিল হয়ে ওঠে। অ্যানাল ফিসারের আধুনিক কাটাছেঁড়াবিহীন চিকিৎসা বাংলাদেশেই সম্ভব।

অ্যানাল ফিসার আর পাইলস এক জিনিস নয়। অ্যানাল ফিসারকে অনেকে বাংলায় গেজ বলে। এ রোগে মলত্যাগের সময় কিংবা মলত্যাগের পর কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত কিংবা সারা দিন ব্যথা থাকে। ব্যথার কারণে রোগী ঠিকভাবে বসতেও পারে না। ফোঁটায় ফোঁটায় রক্ত বের হতে পারে। অনেকের অ্যানাল ফিসার থেকে পরে অ্যানাল ফিস্টুলা হতে পারে। তখন ব্যথার সঙ্গে মলদ্বারে চুলকানি হতে পারে।

অ্যানাল ফিসারের অনেক রকম চিকিৎসা আছে। প্রথম চিকিৎসা হলো জীবনাচরণে পরিবর্তন। চর্বিযুক্ত মাংস কম খাওয়া, শাকসবজি, ফলমূল ও পানি বেশি করে পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এতে মলদ্বারে চাপ কমে। অনেক ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে অ্যানাল ফিসার সম্পূর্ণ নিরাময় হয়।

অ্যানাল ফিসার দীর্ঘমেয়াদি হলে মলদ্বারের ঘায়ে আঘাত লাগতে লাগতে চামড়া বেড়ে যায়। একে ক্রনিক অ্যানাল ফিসার বলে। এ ধরনের সমস্যায় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের সঙ্গে ব্যথার ওষুধ ও নাইট্রোগ্লিসারিন মলম ব্যবহার করা যায়। এতেও নিরাময় না হলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি অ্যানাল ফিসারে মলদ্বার চেপে সরু হয়ে যায়, ঘা অনেক গভীর হয় বা চামড়া অনেক বেড়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার ছাড়া রোগ নিরাময় সম্ভব হয় না।

অস্ত্রোপচারের অনেকগুলো পদ্ধতি আছে। এর মধ্যে ল্যাটারাল ইন্টারনাল স্ফিংকটারোটমিতে মলদ্বারের অন্তর্দরজা কেটে দেওয়া হয়। আরেক ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি হলো লেজার চিকিৎসা। এ চিকিৎসায় চিকন ফাইবারের সাহায্যে সামান্য ছিদ্র করে রে বা আলোর মাধ্যমে অন্তর্দরজা কাটা হয়। ঘায়ের ওপর লেজার প্রয়োগ করলে ওপরের আবরণটি নতুন করে গজিয়ে ঘা সারাতে সহায়তা করে। লেজারে কাটাছেঁড়া না থাকায় সাধারণত রক্তক্ষরণ হয় না, ব্যথাও কম হয়। এ ছাড়া মলদ্বারের ধারণক্ষমতার কোনো ক্ষতিও হয় না।

ডা. মো. আহসান হাবিব, কলোরেক্টাল সার্জন ও সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী

আগামীকাল পড়ুন: বেলস পালসিতে মুখের ব্যায়াম

প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন: আমার বয়স ২০ বছর, উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি, ওজন ৪৫ কেজি। ওজন বাড়ানোর উপায় কী?

উত্তর: ওজন না বাড়ার কোনো কারণ আছে কি না, খেয়াল করুন। ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণে ওজন কমে যায়। খাবার যেন যথেষ্ট পুষ্টিকর হয়। সঠিক অনুপাতে শর্করা, আমিষ ও ফ্যাট খেতে হবে; সঙ্গে যথেষ্ট মিনারেল ও ভিটামিন। প্রয়োজনে সঠিক ক্যালরি চার্টের জন্য একজন পুষ্টিবিদের সাহায্য নিতে পারেন।

আখতারুন নাহার, পুষ্টিবিদ