ইনহেলার ঠিক ঠিক ব্যবহার করছেন তো

হাঁপানির রোগীদের নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করতে হয়

শ্বাসকষ্টজনিত রোগে অনেককেই ইনহেলার ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু অনেক সময় সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় না বলে এর সুফল পুরোপুরি পাওয়া যায় না। ইনহেলার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি এখানে তুলে ধরা হলো।

মডেল: ফোয়ারা

১. প্রথমে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার ইনহেলারটি বুড়ো আঙুল ও তর্জনী দিয়ে ধরুন। ব্যবহারের আগে ইনহেলারটি তিন থেকে চারবার ঝাঁকিয়ে নিন।

২. প্লাস্টিকের বহিরাবরণ বা অ্যাকচুয়েটরের মাউথপিস থেকে ঢাকনাটি সরিয়ে ফেলুন।

৩. মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে বাতাস বের করে দিতে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত ফুসফুস খালি হয়, অতঃপর নিশ্বাস ধরে রাখুন।

৪. ইনহেলারটি দুই পাটি দাঁতের মাঝে রাখুন। প্লাস্টিকের বহিরাবরণের মাউথপিস নিজের ঠোঁট দিয়ে এমনভাবে ধরুন যেন কোনো ফাঁক না থাকে।

৫. ধীরে ধীরে শ্বাস টানুন এবং একই সঙ্গে ইনহেলারের উপরিভাগের ধাতব পদার্থে বা ক্যানিস্টারে একটি চাপ দিন। চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গভীরভাবে শ্বাস টানুন। শিশু, বৃদ্ধ ও অন্যান্য রোগী, যাদের হাতে জোর কম; তারা এক হাত দিয়ে উপরিভাগে ভালোভাবে চাপ প্রয়োগ করতে পারে না। ফলে ইনহেলার থেকে ওষুধ ঠিকমতো বের হয় না। সে ক্ষেত্রে তাদের দুই হাত একসঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।

৬. ইনহেলার মুখের ভেতর থেকে বের করুন এবং পাঁচ সেকেন্ডের জন্য শ্বাস ধরে রাখুন। তারপর শ্বাস ছাড়ুন।

মনে রাখবেন, ওষুধটা শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসের ভেতর টেনে নিতে হবে, খেয়ে ফেলা যাবে না।

জরুরি বিষয়

স্টেরয়েড ইনহেলার অথবা স্টেরয়েডযুক্ত ইনহেলার ব্যবহারের পর পানি দিয়ে মুখ কুলি করুন। না হলে মুখে ঘা হতে পারে। সুফল পেতে ইনহেলারের সঙ্গে স্পেসার (একটি যন্ত্র) ব্যবহার করুন। শুধু ইনহেলার ব্যবহার করার চেয়ে স্পেসারের মাধ্যমে ব্যবহার করলে ওষুধ ফুসফুসের ভেতর যায় প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে। ফলে ওষুধের কার্যকারিতা অনেক বেশি মেলে। আবার শ্বাসের মাধ্যমে স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ নিলে মুখে বা গলায় ক্যানডিডা নামের ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে, কারও কারও গলার স্বর মোটা হয়ে যায়। এসব ক্ষতির আশঙ্কা স্পেসার ব্যবহার করলে থাকে না বললেই চলে।

ইনহেলার না নেবুলাইজার?

হাঁপানির রোগীদের নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু যখন অ্যাকিউট অ্যাটাক হয়, মানে অকস্মাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়, তখন নেবুলাইজার যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। তীব্র শ্বাসকষ্টের জন্য নেবুলাইজার, এটি নিয়মিত ব্যবহারের জন্য নয়। আর মনে রাখবেন, করোনায় সংক্রমিত রোগীদের ইনহেলার ব্যবহারে নিষেধ নেই কিন্তু নেবুলাইজার ব্যবহার করা নিষেধ। কারণ, নেবুলাইজার যন্ত্রে অ্যারোসল তৈরি হয়। এতে জীবাণু চারপাশের বাতাসে সহজে ছড়িয়ে পড়ে অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে।

ইনহেলারের যত্ন

প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার আপনার ইনহেলার পরিষ্কার করুন। অ্যাকচুয়েটর ও মাউথপিস কভার বা ঢাকনাটি গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শুকানোর জন্য কোনো শুষ্ক স্থানে রাখুন। ক্যানিস্টার ও মাউথপিসের ঢাকনাটি সঠিক জায়গায় স্থাপন করুন। ক্যানিস্টার কখনোই পানিতে ভেজাবেন না।