বর্ষায় দেশের অনেক এলাকায় চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। চোখ ওঠা আসলে চোখের কনজাংটিভার প্রদাহজনিত সমস্যা। এতে চোখ লাল হয়ে যায়, একটু ফুলে যায়, রোদে তাকালে জ্বালা করে, চুলকায় ও আঠা আঠা হয়ে থাকে। বেশির ভাগ চোখ ওঠাই ভাইরাসজনিত। কিন্তু কখনো কখনো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে চোখের কিনারে পুঁজ জমতে পারে ও সমস্যা জটিল হতে পারে।
চোখ ওঠা সমস্যা নিজে নিজেই এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি সেরে যায়। চিকিৎসা যা দেওয়া হয় তা উপসর্গভিত্তিক। যেমন: বেশি চুলকানি থাকলে অ্যান্টিহিস্টামিন। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ বা অয়েন্টমেন্ট লাগবে। অয়েন্টমেন্ট দিলে ১৫-২০ মিনিটের মতো দৃষ্টি ঝাপসা থাকবে।
অস্বস্তি কমাতে কিছু পদ্ধতি:
* একটা পরিষ্কার পাতলা কাপড়ের টুকরো পানিতে ভিজিয়ে চিপে নিন ও তারপর বন্ধ করে চোখের পাতার ওপর আলতো করে চাপ দিন। ঠান্ডা পানিতে ভেজালে আরাম পাবেন। তবে অনেকে হালকা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে সেঁক নিতেও আরাম পান। এতে চুলকানি, ব্যথা, অস্বস্তি কমবে।
* একই কাপড়ের টুকরো দিয়ে দুই চোখে সেঁক দেওয়া যাবে না। চোখের কোণ ভিজে উঠলে বা আঠালো হয়ে এলে টিস্যু পেপার দিয়ে আলতো করে মুছে নেবেন, ঘষবেন না।
* এই সময় কনটাক্ট লেন্স, চোখের প্রসাধনী ব্যবহার নিষেধ।
* রোদচশমা পরলে চোখে ধুলাবালু ও রোদ কম লাগে। তাতে কিছুটা আরাম বোধ হয়। তাই বাইরে গেলে রোদচশমা পরে নিন।
* নিজের ব্যবহৃত রুমাল, তোয়ালে, বালিশ ও ব্যক্তিগত জিনিস আলাদা করে রাখবেন।
* প্রতিদিন গোসল করবেন ও পরিচ্ছন্ন থাকুন।
* চোখে প্রচণ্ড ব্যথা হলে, লালচে ভাব খুব বেশি বেড়ে গেলে বা পুঁজ জমা হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডা. পূরবী রাণী দেবনাথ
চক্ষুবিভাগ, বারডেম হাসপাতাল