জরায়ুতে সিস্ট হলে সার্জারি ছাড়াও সহজ সমাধান আছে

১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হলো ভয়েস অব এন্ডোমেট্রিওসিসের ২২তম পর্ব। এ দিনের আলোচনার বিষয় ছিল ‘এন্ডোমেট্রিওসিস (মাসিকের ব্যথা): ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা’। উপস্থিত ছিলেন চারজন অতিথি। ইএএসবির ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক রওশন আরা বেগম, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান শাহীন রহমান চৌধুরী, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাজনীন আহমেদ ও ডা. মেহেরুন নেসা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এন্ডোমেট্রিওসিস সোসাইটি অব বাংলাদেশের সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি ডা. শারমিন আব্বাসি।
এ দিনের আলোচনার বিষয় ছিল ‘এন্ডোমেট্রিওসিস (মাসিকের ব্যথা): ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা’
ছবি: সংগৃহীত

ডা. রওশন আরা বেগম জানান, এন্ডোমেট্রিওসিস ভীষণ বেদনার ব্যাপার। কিন্তু নারীরা এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটটি এমনই। এই ব্যথা মাঝেমধ্যে এমনই অসহনীয় হয়ে যায় যে সেটা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। অনেকেই আলট্রাসনোগ্রামে জরায়ুতে সিস্ট দেখতে পেয়ে অপারেশন করে ফেলেন। তবে অপারেশন ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে কেবল ওষুধে এটি পুরোপুরি সেরে ওঠে।

ডা. শাহীন রহমান চৌধুরী এই বিষয়ে দেশের বাইরেও কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এন্ডোমেট্রিওসিসে দুই ধরনের চিকিৎসা, ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা আর সার্জারি। তবে এর বাইরেও অবজারভেশন আরেকটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এখানে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং তাঁকে কাউন্সেলিং করা হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে অবজারভেশনের সুযোগ নেই। যে রোগীর বয়স কম, সবে বিয়ে হয়েছে, বাচ্চা নিতে চান, সেক্ষেত্রে আমরা পর্যবেক্ষণে রাখি। ছোট সিস্ট বা সিরিয়াস কিছু নয়—এমন ক্ষেত্রেও আমরা ওষুধ বা সার্জারির দিকে যাই না। আবার যে নারীরা মেনোপজের কাছাকাছি চলে এসেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও আমরা দেখি। অপেক্ষা করি। বিদেশে তো নারীরা তাঁদের শরীরে কিছুই করতে চান না। সার্জারি তো নয়–ই।’

এখন এন্ডোমেট্রিওসিসের রোগীর সংখ্যা অনেকটা বেড়ে গেছে। এর অনেক কারণ আছে। ডা. নাজনীন আহমেদ বললেন, এর ফলে পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা হয়, ব্লিডিংও বেশি হতে পারে। ওষুধে ব্যথা কমে। এমন সমস্যাও পুরোপুরি সমাধান করা যায়। চিকিৎসা হিসেবে কপার টির মতো করে হরমোনও দেওয়া হয়। এগুলো সবই বাংলাদেশে পাওয়া যায়। ডা. মেহেরুন নেসা জানান, কিশোরী (১৩ থেকে ১৮ বছর) মেয়েরাও এন্ডোমেট্রিওসিসে ভোগে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগেও এই ব্যথা শুরু হতে পারে। এ সময় কাউন্সেলিংটাই সবচেয়ে বড় সাপোর্ট।

পরামর্শ দিয়েছেন চার ডাক্তার
ছবি: সংগৃহীত

মেয়েদের মাসিকের সময় ওভারি থেকে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন নামে দুটি হরমোন নিঃসৃত হয়। এগুলো মাসিকের পর্দার ওপরে কাজ করে। ঠিক এই হরমোনগুলোই এন্ডোমেট্রিওসিসের স্পটের ওপরে কাজ করে। এক্ষেত্রে ওরাল পিলে যে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন আসে সেটিই এন্ডোমেট্রিওসিসের স্পটের ওপরে কাজ করে। ফলে ওভারি থেকে যে হরমোন নিঃসৃত হয়, সেটি মাসিকের পর্দার ওপরেই ঠিকমতো কাজ করে। তাই অবিবাহিত কিশোরীকে ওরাল পিল দিলে ভয়ের কিছু নেই। আর বিয়ের পর যদি বাচ্চা নিতে না চান, সেক্ষত্রেও ওরাল পিল ভালো কাজ করবে। একই সঙ্গে দুটি কাজ করবে।