ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পরিবারের ভূমিকা সবার আগে

ক্লান্তি, অবসন্নতা, ওজন হ্রাস, পিপাসা ও ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব ডায়াবেটিসের লক্ষণ। এ ছাড়া বারবার সংক্রমণ, ফোড়া, যোনিপথে চুলকানি, হাত–পায়ের জ্বলুনি, যৌনক্ষমতা হ্রাস ইত্যাদি উপসর্গও থাকতে পারে। আবার কোনো লক্ষণ না–ও থাকতে পারে। লক্ষণ থাকলে রক্তে শর্করা পরীক্ষা করুন। আর লক্ষণ না থাকলেও ৪০ বছরের পর সবারই উচিত বছরে এই পরীক্ষাটি করা।
যাঁদের পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে, তাঁরা বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে আছেন। তাই পরিবারের জীবনযাত্রা পাল্টাতে হবে। কম বয়স থেকেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করুন। উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ওজন যেন না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। পরিবারে শিশু–কিশোরদের মুটিয়ে যাওয়া ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়া প্রতিরোধ করতে মা–বাবার ভূমিকা অনেক বেশি। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয়ে পরিবার বড় ভূমিকা রাখতে পারে। পরিবারের সব সদস্যের বেলায় নিয়মিত চেকআপ বা রুটিন স্ক্রিনিংয়ের কথা মনে রাখুন।
যেকোনো গর্ভধারণের ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। বাড়ির নারী সদস্যটি অন্তঃসত্ত্বা হলে স্বামী ও অন্য সদস্যরা বিষয়টি খেয়াল করবেন। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। অন্তঃসত্ত্বা নারীকে খাদ্যরুটিন মেনে চলা, ইনসুলিন নেওয়া, নিজে নিজে রক্তের শর্করা পরীক্ষা করার বিষয়ে সাহায্য করুন। সন্তান ধারণ ও প্রসবের সময় কী কী জটিলতা হতে পারে, সে বিষয়ে জানুন ও সচেতন হোন। প্রসবের পরও নিয়মিত চেকআপ ও সুষম খাদ্যাভ্যাস চালিয়ে যান।
পরিবারের বয়স্ক সদস্যরাই সাধারণত ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন। বয়স্কদের যেন রক্তে শর্করা হঠাৎ কমে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। ডায়াবেটিসের রোগীর পায়ের যত্ন, হৃদ্‌যন্ত্র বা কিডনির দেখভাল গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের একজন দায়িত্ববান সদস্য হিসেবে প্রত্যেকের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি, নিয়ন্ত্রণ এবং জটিলতা প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় আপনাকেই ভূমিকা রাখতে হবে।