লিচুর পুষ্টিগুণ

ছবি: পেকজেরসডটকম

রসাল ফল লিচু। এতে রয়েছে প্রচুর মিনারেল ও ভিটামিন। ডায়েট চার্টে রাখা যেতে পারে পর্যাপ্ত পরিমান লিচু।

ষড়ঋতুর এ দেশে বিভিন্ন ঋতুতে পাওয়া যায় নানা পুষ্টিকর মৌসুমি ফল। যেগুলো মানুষের শরীরের পুষ্টিচাহিদা পূরণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনই একটি ফল লিচু। এ রসাল ফলে রয়েছে প্রচুর মিনারেল। এর বাইরে এতে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট থাকে খুব অল্প পরিমাণে। ফ্যাট না থাকয় সবার জন্য উপকারি একটি ফল। পাশপাশি এতে ক্যালরিও কম, তাই সবার জন্যে উপযুক্ত। তবে যারা ডায়াবেটিস রোগী, তাদের জন্য এই ফল কিছুটা কম খাওয়াই ভালো।

লিচুতে এপিকেচিন ও রুটিনের মতো দুটি অ্যান্টি–অক্সিজেন্ট যৌগ রয়েছে, যা এ গরমে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে। লিচুতে রয়েছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫০, যার ফলে ধীরে ধীরে রক্তের মধ্যে সুগার প্রবেশ করে। আর গ্লাইসেমিক লোডের পরিমাণ ৭.৬, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ। এ ছাড়া এতে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা ধরে রাখে। ডায়াবেটিস ব্যক্তিদের সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকলে ডায়েটে ৪০ গ্রাম লিচু বা বড় আকারের ৬টি লিচু খেতে পারবেন। এতে প্রায় ২৫ গ্রাম ক্যালরি পাওয়া যাবে। ডায়াবেটিস রোগীরা এর বেশি লিচু খেতে চাইলে, রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করে নিতে হবে। আবার খেয়াল রাখতে হবে, সেই দিন তিনি কী পরিমাণ শর্করা গ্রহণ করেছেন। পুষ্টিবিদের মতে, শুধু ডায়াবেটিস রোগীই নয়, একজন সুস্থ মানুষেরও বেশি লিচু খাওয়া উচিত নয়। আর মনে রাখতে হবে, খাওয়ার পর ও ঘুমানোর আগে ফল খাওয়া উচিত নয়। কারণ, এতে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

ছবি: প্রথম আলো

লিচুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-সি, ক্যালসিয়াম থাকে। এ ছাড়া এতে থাকা অন্য খনিজ উপাদানগুলো হচ্ছে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম; যা লিচুতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। এ কারণে দৈনন্দিন পুষ্টিচাহিদা মেটাতে লিচু অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। তাই মৌসুমি ফলগুলো যতটা সম্ভব, আমাদের জন্য খাওয়াটা খুবই উপকারী। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে লিচু খেলে ওজন বৃদ্ধি, সুগার লেভেল বাড়ার পাশাপাশি পেট খারাপও হতে পারে। কারও কারও লিচুতে অ্যালার্জি থাকে, এমন ব্যক্তিদের ফলটি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। তাই নিয়ম মেনে পরিমাণমতো মৌসুমি ফল খাওয়া উচিত। প্রয়োজনে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন। কারণ, এতে আপনার ডায়েট চার্টে কতটা মৌসুমি ফল প্রয়োজন, তার সঠিক পরিমাণ জানতে পারবেন।


লেখক: পুষ্টিবিদ, ঠাকুরগাঁও ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল