১ বছর ৬ মাস ২৩ দিনে সিএর কোর্স শেষ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিয়াজ

রিয়াজ উদ্দিন
ছবি: রিয়াজের সৌজন্যে

চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হওয়ার পথটা নাকি বেশ লম্বা। অনেকেই বলেন, বারবার পরীক্ষা দিয়েও পাস করা যায় না। এমনকি যাঁরা পড়ালেখা নিয়ে বেশ ‘সিরিয়াস’, তাঁদেরও লেগে যায় ৩ থেকে ৫ বছর।

এসব ধারণা যে সত্য নয়, প্রমাণ করেছেন রিয়াজ উদ্দিন। কীভাবে মাত্র দেড় বছরে সিএর পড়ালেখা শেষ করলেন তিনি?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে ক্লাসের ব্যস্ততা, টিএসসির আড্ডা, আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তা—এসবের মধ্যেই জীবনের পরবর্তী ধাপের পথ খুঁজছিলেন রিয়াজ। কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনেই কানে এসেছিল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি বা সিএ পেশার কথা, কিন্তু তখনো স্পষ্ট ধারণা ছিল না। বিবিএ শেষে সরকারি চাকরি বা করপোরেট জগতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় শিক্ষক সালাহউদ্দীনের পরামর্শ আর ফাইন্যান্সের প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে সিএ হওয়ার পথ বেছে নিতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন

শুরুটা ছিল ভয় আর সংশয়ে ভরা। কানে এসেছিল, বিবিএর পর আরও নাকি অন্তত তিন বছর লেগে থাকতে হবে। এত ধৈর্য হবে তো? তিনি বলেন, ‘সপ্তাহে দুই দিনের বন্ধটাই ছিল আমার মূল ভরসা। সেই সময়টুকু কাজে লাগাতাম সর্বোচ্চভাবে। সিএর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সময় ব্যবস্থাপনা, আর বিপুল সিলেবাসের ভেতর থেকে পরীক্ষার জন্য দরকারী বিষয় বেছে নেওয়া। আমি সেটা খুব মন দিয়ে করেছি।’

‘মন দিয়ে করা’র পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন। মাত্র ১ বছর ৬ মাস ২৩ দিনে শেষ করেছেন সিএর কোর্স। তার মাস দু-এক পর হাতে পেয়েছেন ফল। আইসিএবি স্বর্ণপদকের মনোনয়নও পেয়ে গেছেন রিয়াজ উদ্দিন। কেমন লাগছিল তখন? বললেন, ‘আমি কখনো কোনো মেডেল পাইনি। জীবনের প্রথম মেডেলের জন্য মনোনীত হওয়ার অনুভূতি ছিল অবিশ্বাস্য। বিশ্বাস করতে পারিনি এত দ্রুত আমি পাস করতে পারব।’

এত অল্প সময়ে সিএ করতে পারাটা বিরল ঘটনা কি না, রিয়াজ জানেন না। তবে নিজেকে যে নিজের কাছে প্রমাণ করতে পেরেছেন, এটাই তাঁর চোখে বড়। বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। ভবিষ্যতে নিজেকে দেখতে চান একজন সফল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে। যাঁরা সিএ হতে চান, তাঁদের জন্য রিয়াজের পরামর্শ, ‘ধৈর্য নিয়ে লেগে থাকতে পারলে সফলতা আসবেই। সঙ্গে পরিশ্রম করার মানসিকতাও থাকতে হবে। পথটা একটু কঠিন। তবে লেগে থাকলেই সেই কঠিন পথ সহজ হবে।’

আরও পড়ুন