আপনার রাশি

মেষ ২১ মার্চ-২০ এপ্রিল। ভর # ৬
সব গীতিকার কবি, কিন্তু সব কবি গীতিকার নন, কেউ কেউ গীতিকার। গানের ‘কথা’ অনেক সময় কবিতার চেয়েও মর্মস্পর্শী হতে পারে। মান্না দের গাওয়া সেই গানটির কথাই ভাবুন, যে গানের মাঝখানে আছে অনবদ্য দুটি লাইন: আমি মানুষ চেয়ে করেছিলাম ভুল/ তুমি ছিলে শুধু রং করা পুতুল।… প্রিয় মেষ, চলতি সপ্তাহে আপনি আছেন সংখ্যা ৬-এর প্রভাবাধীন, কেননা আপনার রাশির ভর হচ্ছে ওই ৬-ই। আপনার চলতি সাত দিন কাটবে শুধুই ছক্কা মারতে মারতে। তবে, বর্তমান সময়ে হৃদয়ঘটিত ব্যাপারে আপনার পেছনের স্টাম্প তিনখানা ইয়ে হয়ে আসমানে উড়ে গেলে আমাকে গালমন্দ করতে পারবেন না।
বৃষ ২১ এপ্রিল-২১ মে। ভর # ১
টেলিভিশনে প্রায়ই ‘বুল বানান এবং বুল উস-সারণের চড়াচড়ি’ (ভুল বানান এবং ভুল উচ্চারণের ছড়াছড়ি) দেখা যায়। ‘ধারাবাহিক’ শব্দটিকে তাই শুনি দ্রাবাহিক, অবরোধকে অব্রোধ, স্থানীয়কে এস্থানীয় ইত্যাদি। কিন্তু না, খাঁটি বাংলাকে খাঁটি বাংলা উচ্চারণ করতেই হবে। প্রিয় বৃষ, পৃথিবীতে শতভাগ খাঁটি কিংবা শতভাগ ভেজাল বলে কিছু নেই। মানুষ হিসেবে আমাদের সবারই ভালো, মন্দ দিক আছে। তাহলেও আমাদের কাজ হচ্ছে নিজের ভালো–মন্দ বোঝা। অর্থাৎ, আত্মবিশ্লেষণের চর্চা করা। এরপর করণীয় যা তা হচ্ছে, নিজের চিহ্নিত মন্দগুলোকে যতটুকু সম্ভব ভালোর দিকে টেনে আনা। আজ থেকেই এ কাজ শুরু করে দিন, দেখবেন অশুদ্ধকে অতিক্রম করে কত জলদি আপনি শুদ্ধ হয়ে ওঠেন।
মিথুন ২২ মে-২১ জুন। ভর # ৬
আপনি জানেন, চা হচ্ছে মূলত একটি চীনা ভেষজ ওষুধ—যা আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর আগে চীনা সম্রাটদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো। আধুনিক বিজ্ঞান এই তত্ত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে। চায়ের মধ্যে আছে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ের শক্তি। ছাইয়ে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকার ফলে তা এমনকি ক্যানসার ঠেকাতেও সাহায্য করে। চীনা শাস্ত্রে সবাইকে দিনে কমপক্ষে চার কাপ ‘রং চা’ খেতে বলা হয়েছে। তাহলে প্রিয় মিথুন, আজ থেকে শুনে চা করুন পান। বার্তাটি অন্যদেরও জানিয়ে দিন।
কর্কট ২২ জুন-২২ জুলাই। ভর # ২
গেল সপ্তাহ আপনি যতটুকু ভালো ছিলেন—এ সপ্তাহেও প্রায় তা-ই থাকবেন বলে মোর মনে লয়। সত্যিই যদি তা হয়, তাইলে তো আর কোনো কথা নয়, চালাও ব্যাট খ্যাটর খ্যাট! ফালাও বল, উড়াও (উই)কেট! বলে বলে চার-ছয়, মোটেও তো কম নয়।… আমার এই শুভবার্তার ক্যাচ ধরতে না পারা কিংবা তা না বোঝার ভান করাটা আপনাকে মানাবে না ডিয়ার কটমট অ্যান্ড কটমটিয়া।
সিংহ ২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট। ভর # ১
আজ শনিবার। আসছে এক তুমুল ঝড়বৃষ্টি ও প্রবল আনন্দ ভরা সাত-সাতটি দিন। আনন্দটা কম হলেও খুব যে একটা কম হবে এমন বোধ হয় নয়। নিন, এবার তাইলে একখান হাসিই আমাকে উপহার দিন। ধন্যবাদ দিতে না চাইলে না দিন।
কন্যা ২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর। ভর # ২
ঈর্ষা ততক্ষণই সুন্দর, স্বাস্থ্যকর; যতক্ষণ সে সুস্থ প্রতিযোগিতার জন্ম দিচ্ছে। প্রিয় কন্যা, আমরা জানি আপনি ভুলেও কাউকে কখনো ল্যাং মেরে ফেলে দিয়ে এগিয়ে যেতে চান না। আপনি শুধু চান ক্রমিক চেষ্টা, কষ্ট ও শ্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজ পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করতে। নিজের সীমানাটুকু ছাড়িয়ে যেতে। চলতি সপ্তাহে আপনি নতুন এক চূড়া বিজয় করবেন। আগাম অভিনন্দন রইল!
তুলা ২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর। ভর # ২
‘বিজয়ী’ এবং ‘বিনয়ী’ শব্দ দুটি হছে গাছের একই পাতার এপিঠ-ওপিঠ। বইয়ের একই পাতার দুটি পৃষ্ঠা। একই মুদ্রার উভয় পিঠ। তা–ই আমরা দেখি। চির উন্নত-শির বিজয়ীও পুরস্কার গ্রহণের সময় মাথাটা সামনে ঝুঁকিয়ে দেন। বিনয়ে হন অবনত—বিনয়াবনত।… বর্তমান সময়ে আপনি একাধিকবার পুরস্কৃত হবেন। নজরুল কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে তাই উচ্চারণ করুন: চির উন্নত শির, শির নেহারি মম নত শির ঐ শিখর হিমাদ্রির।… ওই চেয়ে দেখুন, ধীরে এগিয়ে আসছে বিজয়ের মালা আপনারই দিকে। আপনাকে জানাই অগ্রিম অভিনন্দন।
বৃশ্চিক ২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর। ভর # ২
আপনার সামনে শুয়ে আছে ঝকঝকে সাতটি দিন—উচ্ছল উজ্জ্বল চঞ্চল ঝলমল। ব্যতিক্রম শুধু এক চিমটি বেদনার মতো প্রচ্ছন্ন একচিলতে স্মৃতি। তবে জানবেন, বেদনার আড়ালেই লুকিয়ে থাকে প্রথম আলোর মতো সূক্ষ্ম সুখের অনুভূতি।… চলতি সপ্তাহে দেখতে পাই আপনার নেগেটিভ ১০ শতাংশ এবং বাদবাকিটা … হা হা হা হা!…
ধনু ২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর। ভর # ৯
সারা জীবন আমি এক স্টেশনের টিকিট কেটে নেমে গেছি অন্য কোনো অচেনা–অজানা স্টেশনে। তাহলেও তো আমি থেমে থাকিনি। শুধু ধীর থেকে দ্রুত, দ্রুত থেকে দ্রুততর এবং কখনো হয়তোবা পুনরায় মন্থর হয়েছে আমার গতি। এভাবে দূরে চলে গিয়ে আমার মন হাহাকার করে গেয়ে উঠেছে সেই কোন কৈশোরে শোনা জিম রিভস-এর গান:… আ থাউজেন্ড মাইলস অ্যাওয়ে ফ্রম হোম, ওয়েটিং ফর আ ট্রেইন।… বাড়ি থেকে হাজার মাইল দূরে আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি একা/ আমার ট্রেনের অপেক্ষায়। প্রিয় ধনবান এবং ধনহীন ধনু, ‘ফিরে এসো ঘরে পরবাসী।’ ফিরে এসো তোমার হতাশা-ব্যর্থতা, শূন্যতা ছেড়ে আশা-সাফল্য এবং পূর্ণতার সবুজ প্রান্তরে।
মকর ২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি। ভর # ৩
বিজ্ঞান জানাচ্ছে, নবজাতক মায়ের মুখ এবং দেহের ভাষা—সবই বোঝে। মায়ের আদর পূর্ণভাবে গ্রহণ করে। আবার, মা এমনকি কপট বা মিথ্যা রাগ দেখালেও সে ঠোঁট ভেঙে কাঁদে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, শিশুরা ‘অবোধ’ হলেও ‘নির্বোধ’ মোটেই নয়। ওদিকে দেখুন, মা এবং বাবাও শিশুকে কাঁদিয়ে দিয়ে আদর করতে ভালোবাসেন। এ একটা খেলা আরকি। প্রিয় মকর, মা এবং বাবা, শিশু আপনার অভিব্যক্তি বোঝে, ভয় পায়, হাসে কাঁদে, খুশিতে হাত-পা ছুড়তে থাকে; ওদিকে আপনিও নিশ্চয়ই আপনার কিংবা অন্যের শিশুর অনুচ্চারিত এক্সপ্রেশন বুঝতে পারেন। তাহলেও বলব, শিশু মনস্তত্ত্ব নিয়ে একটু পড়াশোনা করুন। আপনার যোগাযোগ-দক্ষতা আরও বাড়িয়ে নিন। দেহে-মনে সুস্থ সুন্দর হয়ে উঠবে আপনার সোনার সন্তান।
কুম্ভ ২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি। ভর # ৯
জনৈক কুম্ভ জাতক এক জ্যোতিষীর কাছে এসে বলেন: ছার, মুই ‘কুংফু’ রাশির ইয়া, আর আমার ওয়াইপ (ওয়াইফ) হইলেন গিয়া ‘কুর্কুট রাশির মইলা (মহিলা)। এই লন আপনা ফিস—এইবার জলদি বলেন, আমার হাতে কয়ডা বিয়া আছে? জ্যোতিষী গম্ভীর গলায় জানান: আপনি যতগুলো বিয়ে করতে চান—তাঁর চেয়ে আপনার হাতে একটা কম বিয়ে আছে। মিস্টার কুংফু কিছু বুঝতে না পেরে জ্যোতিষীর দাড়িভর্তি মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। জ্যোতিষী অনাবশ্যক গর্জন করে তাঁর সহকারীকে বলেন: তুমি এসব ইডিয়টকে কেন অ্যাপয়েন্টমেন্ট দাও, ছাগল কোথাকার! প্রিয় কুম্ভ, চলতি সপ্তাহে যাকে যা বলার স্পষ্ট করে বলুন। শুভ!
মীন ১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ। ভর # ৩
ভোরের অশ্রুজলের চেয়ে পবিত্র জল আর নেই। এ কান্না তো মানুষকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় বর্ষার দুর্বার বন্যার মতো।… আপনার এই নিশ্চুপ কান্না কেউ দেখে না, কেউ সান্ত্বনা দিতেও আসে না। আর, আপনি নিজেও তো সেটাই চান।… নিজের জন্য গোপনে একটু কাঁদবার অধিকার সবারই আছে। আপনারও আছে। অশ্রুর ধারা ভাসিয়ে নিয়ে যায় আপনার মনের যা কিছু দুঃখ-কষ্ট-অপমানকে। আসুন, আমরা ফিরে যাই ফের ওই রবীন্দ্রনাথের কাছে। শুনি তাঁর একটি গানের কটি লাইন: … আমার দুঃখ জোয়ারের জলস্রোতে/ নিয়ে যাবে মোরে/ সব লাঞ্ছনা হতে।… দূরে যাব যবে সরে/ তখন চিনিবে মোরে/ আজ অবহেলা ছলনা দিয়ে ঢেকো না।… (ডেকো না আমারে, ডেকো না—হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
আপনি নিজেই আপনার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন শতকরা ৯০ থেকে ৯৬ ভাগ। বাকিটা আমরা ফেট বা নিয়তি বলতে পারি। ভাগ্য অনেক সময় অনির্দিষ্ট কারণে আপনা থেকেও গতিপথ বদলাতে পারে। এখানে রাশিচক্রে আমি ‘নিউমারলজি’ বা ‘সংখ্যা-জ্যোতিষ’ পদ্ধতি প্রয়োগ করেছি— কাওসার আহমেদ চৌধুরী