‘আমাদের পড়ালেখার বড় অংশই পুলিশের সঙ্গে যুক্ত, তাই এটা একটা দারুণ সুযোগ’
ব্যবহারিক জ্ঞান ছাড়া ক্লাসরুমের পড়ালেখা অসম্পূর্ণ—এ কথা মাথায় রেখে বিশেষ একটি উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ। বাংলাদেশ পুলিশের প্ল্যানিং অ্যান্ড রিসার্চ উইংয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে তারা। স্মারকের আওতায় অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ ও বাংলাদেশ পুলিশ যৌথভাবে সহযোগিতামূলক বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ ছাড়া পুলিশ কর্মকর্তারা অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি করার ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে এ–সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয় ১১ ডিসেম্বর। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এতে স্বাক্ষর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শামসুন্নাহার। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন জিয়া রহমান, অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান শাহারিয়া আফরিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারসহ অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা।
সমঝোতা স্মারকের সুবিধার বিষয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহারিয়া আফরিন মুঠোফোনে বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে চুক্তি করা মানে পুলিশ স্টাফ কলেজ, সিআইডিসহ সবার সঙ্গে চুক্তি। স্মারকের আওতায় আমাদের শিক্ষার্থীরা পুলিশের ল্যাব থেকে শুরু করে তাদের বিভিন্ন স্থাপনা ব্যবহার ও পরিদর্শন করতে পারবে। যেমন ধরুন, আমরা কারাগার পরিদর্শনে যেতে চাই। এখন কারাগারে তো সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারে না। নানা ধরনের আনুষ্ঠানিকতা থাকে। ধরুন, আমরা কিশোর সংশোধনকেন্দ্রে যেতে চাই, সিআইডির ল্যাবে যেতে চাই, এসব এখন সম্ভব। শুধু আমরাই যে সুবিধা পাব, তা নয়। আমাদের লাইব্রেরিতে বইয়ের যে সংগ্রহ আছে, সেটি তারা ব্যবহার করতে পারবে। আমাদের শিক্ষকদের অধীনে পিএইচডি, এমফিল ও প্রফেশনাল মাস্টার্স করতে পারবে।’
যাঁদের জন্য এই আয়োজন, সেই শিক্ষার্থীরা বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন? অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মুস্তাহিদ রিয়াদ বলেন, ‘যেহেতু আমাদের পড়ালেখার একটা বড় অংশই পুলিশের সঙ্গে যুক্ত, সুতরাং ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের সঙ্গে কাজ করার যে সুযোগ আমরা পাচ্ছি, সেটা দারুণ একটা বিষয়। অপরাধসংক্রান্ত তাত্ত্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তর পড়ালেখা করি, তার বাস্তবিক প্রয়োগটা যদি বাংলাদেশ পুলিশে করা যায়, তবে সেটা অপরাধ ও অপরাধী দুটো কমাতেই সাহায্য করবে। পুলিশের মান বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি আমাদের মধ্যে যাঁরা সেখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন, তাঁরাও অনেক কিছু শিখতে পারবেন।’