খালি বাসা রেখে ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন, এই কাজগুলো করেছেন তো

খালি বাসার রান্নাঘরের সাবধানতা মেনে চলুন
আঁকা: এস এম রাকিবুর রহমান

ঈদে বাড়ি যাওয়ার আগে কত কাজ। নিজেদের কেনাকাটা, প্রিয়জনের জন্য উপহার, টিকিট কাটা, ব্যাগ গোছানো। অনেকে এরই মধ্যে বাড়ির পথ ধরেছেন, অনেকে শেষ মুহূর্তের গোছগাছ করছেন। বাড়ি যাওয়ার আনন্দের মধ্যেও কিছু দুশ্চিন্তা থেকেই যাবে। যেমন ফাঁকা বাসার নিরাপত্তা। বাসা ছেড়ে যাওয়ার আগে কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিলে এই বাবদে চিন্তাটুকু দূরে রাখা যায়।

বাসার যেসব সরঞ্জাম বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেগুলোর প্রতি যত্নশীল হতে হবে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দেখে নেন, যেসব সরঞ্জাম বন্ধ রাখা উচিত, সেগুলো ঠিকঠাকভাবে বন্ধ করা হয়েছে কি না। দরজা-জানালাও ভালোভাবে বন্ধ করেছেন কি না দেখে নেন। ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদেরকেও সচেতন থাকতে অনুরোধ করে যাওয়া ভালো। বাড়ির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নানা উপায় জানালেন ঢাকার গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়ন্সের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা শরীফ।

মূল্যবান সামগ্রী ও অন্যান্য

বাসার নিরাপত্তা ঠিক রাখতে তালা লাগানোর পর চেক করে দেখুন।
ছবি: পেক্সেলস

প্রতিটি ঘরের সব দরজা-জানালা ভালোভাবে বন্ধ করে যেতে হবে। তবে রান্নাঘরের জানালার একটি পাল্লা কিছুটা খুলে রাখা ভালো। সে ক্ষেত্রে রান্নাঘরের জানালায় শক্তপোক্ত নেট লাগিয়ে রাখুন। তা ছাড়া রান্নাঘরের জানালা আংশিক খোলা রাখলে অবশ্যই রান্নাঘরের দরজাটা ভালোভাবে আটকে দিতে হবে। অর্থাৎ ভালো মানের তালা দিয়ে রাখতে হবে।

বাসার মূল দরজায় সাধারণ তালার পরিবর্তে বিশেষ ধরনের সিকিউরিটি লকের ব্যবস্থা করা ভালো। আজকাল অনেক স্মার্ট তালা পাওয়া যায়, যেগুলো আপনার ফোনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। যেকোনো জরুরি অবস্থায় মুঠোফোনে সে সংকেত পাঠাবে।

বাসায় এমন অনেক মূল্যবান সামগ্রী রাখা থাকে, যা ব্যাংকের লকারে কিংবা আপনজনের কাছে রেখে যাওয়া সম্ভব, যাঁরা এই সময় বাড়ি যাচ্ছেন না। পরিবারের সদস্যদের একাডেমিক মূল সনদগুলো এভাবেই অন্য কারও বাসায় রেখে যেতে পারেন।

বারান্দায় কাপড়চোপড় মেলে রেখে যাবেন না। এগুলো বৃষ্টিতে ভিজে যেতে পারে কিংবা বাতাসে উড়ে কোনো বৈদ্যুতিক তারে আটকে দুর্ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে।

গ্যাস ও পানি

ভুলে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখেননি তো?
আঁকা: এস এম রাকিবুর রহমান

বাসার সব ঘরেই ভেন্টিলেশন বা বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা উচিত, বিশেষ করে রান্নাঘরে। ভালোভাবে চুলা ও পানির কল বন্ধ করুন। আপনি যখন ঈদের আনন্দে মেতে উঠেছেন, সেই সময় আপনার ফাঁকা বাসার রান্নাঘর কিন্তু মারাত্মক দুর্ঘটনার উৎস হয়ে থাকতে পারে। ঈদের পর ফিরে এলে যার শিকার হতে পারেন আপনি বা আপনার পরিবারের কোনো সদস্য। সুতরাং এই বিষয়ে হেলাফেলা চলবে না। ফিরে এসে ঘরে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করে এরপর চুলায় আগুন জ্বালাবেন, এর আগে লাইটার বা ম্যাচের কাঠিও ধরাবেন না।

পানির কল ছাড়া থাকলে পুরো ভবনে পানির সংকট দেখা দেবে
আঁকা: এস এম রাকিবুর রহমান

অনেক সময় রান্নাঘর বা বাথরুমে পানি চলে গেলে আমরা ভুলে কল খুলে রাখি। বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পর পানি এলে অবস্থাটা কী হবে, একবার ভেবে দেখুন। চুলা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম মেনে চলুন।

বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম

বৈদ্যুতিক সংযোগ খুলে ফেলা জরুরি

ফ্রিজে এমন কিছু রাখবেন না, যা আপনি ফিরে আসার আগেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফ্রিজে কিছু থাকুক আর না থাকুক, ফ্রিজ চালু রাখাই ভালো। এসি, টেলিভিশন, ওভেন, রাউটার, কম্পিউটার প্রভৃতি সামগ্রী অর্থাৎ ফ্রিজ ছাড়া বাসার যাবতীয় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বন্ধ করে সেগুলোর প্লাগ খুলে রাখুন। ঢেকে রাখলে ধুলা পড়বে না। ছোটখাটো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কেবিনেটে ঢুকিয়েও রাখতে পারেন। ফ্রিজ ছাড়া বৈদ্যুতিক সংযোগের অন্যান্য সব সুইচ বন্ধ রাখুন। মুঠোফোনের চার্জার কিংবা অন্য কোনো কিছুই বৈদ্যুতিক সকেটে সংযুক্ত করে রাখা যাবে না। এ ছাড়াও যে ঘরে ফ্রিজ আছে, সেই ঘর বাদে বাকি ঘরগুলোর ফিউজ বন্ধ করে রাখা ভালো।

আরও পড়ুন