ঘরে প্রশান্তি ধরে রাখতে

গ্রীষ্মের দাবদাহ বেড়েই চলছে। বাইরে বের হলে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। এমনকি ঘরেও অনেকটা একই অবস্থা। বর্ষা শুরু না হওয়া পর্যন্ত প্রশান্তির বাতাস বইবে বলে মনে হচ্ছে না। এ গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে যতটা সম্ভব ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাই ঘরের ভেতর ধরে রাখতে হবে শীতল পরিবেশ। তবেই না কিছুটা সময়ের জন্য হলেও রেহাই পাওয়া যাবে গরম থেকে। তাই ঘরকে করে তুলুন সামার ফ্রেন্ডলি। অনেকে হয়তো গরমে এসির ওপর বেশি নির্ভরশীল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা এই তাপানুকূল যন্ত্রের ওপর নির্ভর করা মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। সে জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে ঘর ঠান্ডা রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

২৪ ঘণ্টা তাপানুকূল যন্ত্রের ওপর নির্ভর না করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
ছবি: পেকজেলসডটকম

বাইরে গ্রীষ্মের প্রখরতা। অস্বস্তির পারদ যেন বেড়েই চলছে। গরমে ঘরেও দমবদ্ধ অবস্থা। অনেকের কাছে ঘরের ভেতর প্রশান্তির একমাত্র উপায় বলতে এসি। কিন্তু সব সময় এসি চালানো যেমন সম্ভব নয়, তেমনই স্বাস্থ্যসম্মতও নয়। আবার অনেকের বাড়িতেই শুধু বেডরুমে এসি থাকে। অন্য ঘরে সহ্য করতে হয় গরমের দাপট। আর যেহেতু এখনো চলছে লকডাউন, সেহেতু প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না। তাই ঘরকেই প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা রাখতে পারলে, প্রশান্তি পাওয়া যাবে দ্বিগুণ। শুধু মেনে চলতে হবে কিছু কৌশল।

দুপুরবেলার তাপ যেন ঘরে প্রবেশ না করে। এ জন্য দুই লেয়ার পর্দা ব্যবহার করতে হবে। হালকা রঙের সুতি বা নেটের পরদার নিচে ভারী পর্দা রাখুন। দুপুরবেলা রোদ ও তাপ বাড়তে শুরু করলে দুটো পর্দাই একসঙ্গে টেনে দিন। এতে ঘরে কিছুটা কম আলো প্রবেশ করলেও ঘর ঠান্ডা থাকবে। তবে সন্ধ্যাবেলা এই ভারী পর্দা সরিয়ে শুধু হালকা পর্দা টেনে দিতে হবে। কারণ, সন্ধ্যায় বাতাস একটু ঠান্ডা হয়ে আসে। বিকেলবেলাতেই জানালা খুলে দিন, যদিও রোদ একেবারে পড়ে যাওয়া না পর্যন্ত পর্দা পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়া যাবে না। এই পদ্ধতি ঘর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।

এই সময়ে প্রয়োজন দুটো পর্দা
ছবি: পেকজেলসডটকম

অনেকেই অকারণে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা দিনের বেলা প্রয়োজন ছাড়া লাইট জ্বালিয়ে রাখে। এতেও ঘর কিছুটা হলেও গরম হয়। এগুলো বন্ধ রাখুন। এ ছাড়া ফোন চার্জ হয়ে গেলে সুইচ অফ করে রাখুন। সাধারণ বাল্ব বা টিউবলাইট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। কারণ, এগুলো ঘর বেশি গরম করে। এর বদলে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করাই ভালো। গরমের সময় প্রয়োজনে রাতের বেলা ঘরে হালকা আলো ব্যবহার করলে, ঘর বেশ ঠান্ডা থাকবে।

বেডশিট ব্যবহারে সতর্ক হন। বেডরুমে লিনেন বা সুতির বেডশিট ব্যবহার করুন। সিল্ক বা যেকোনো মোটা ফেব্রিকের বেডশিট এড়িয়ে চলুন। রং এর ক্ষেত্রেও হালকা রং বেছে নিন। খুব গাঢ় রং কিংবা ভারী কাজের বেডশিট ব্যবহার নাকরাই ভালো। বালিশ ও কুশনের ক্ষেত্রেও একই ধরন মেনে চলুন।

গরমে কার্পেট বা ম্যাট ব্যবহার না করাই ভালো
ছবি: পেকজেলসডটকম

গরমে কার্পেট বা ম্যাট ব্যবহার না করাই ভালো। সবচেয়ে ভালো গরম শুরুর আগেই এগুলো গুটিয়ে রাখা। ড্রয়িংরুমে বড় কার্পেট বা বেডরুমে ভারী ম্যাটগুলো গরমে অতিরিক্ত তাপ শোষণ করে। তাই ঘরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। কার্পেট বা ম্যাট তুলে রাখলে ঘরও বড় দেখাবে। এত হাঁটাচলাও আরামদায়ক হবে। বিকল্প হিসেবে মেঝেতে মাদুরের বা চাটাই পেতে দিন। কুশন এবং গদি দিয়ে মেঝেতেই বসার ব্যবস্থা করুন। গরমে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যাবে।

যাঁরা টপ ফ্লোরে বসবাস করেন তাঁদের গরম সহ্য করতে হয় অনেক বেশি। অতিরিক্ত তাপ থেকে বাঁচতে ছাদে শেড লাগাতে পারেন। শেডের ব্যবস্থা করা না গেলে দুপুরবেলা সিলিং ফ্যানের বদলে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করুন। কারণ, সিলিং ফ্যান ওপরের গরম বাতাস টেনে নিচে নামায়, ফলে আরও বেশি গরম লাগে। আর দাবদাহের সময়, বাটিতে বরফের কিছু টুকরো টেবিল ফ্যানের সামনে রেখে ফ্যান চালান। এতে ঘর বেশ ঠান্ডা হবে। তবে হিউমিডিটি খুব বেশি থাকলে এই প্রক্রিয়া কাজে দেবে না। সন্ধ্যাবেলা বা রাতে জানালার কাছে টেবিল ফ্যান চালান। বাইরের ঠান্ডা হাওয়া ঘরে আসবে।