একটি বাসায় ঢুকতে প্রথম নজর পড়ে বসার ঘরে। তাই বসার ঘর সব সময়ই পরিপাটি রাখা চাই বলে জানালেন স্থাপত্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান মেটামরফিকের স্থপতি ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার ফারাহ মৌমিতা। বসার ঘরে অনেকেরই বুকশেলফ থাকে। বুকশেলফে বই রাখার বরাবরের নিয়ম পাল্টে ছবিতে দেখানো নিয়মে মাঝারি বা বড় বাস্কেট নিয়ে এর মধ্যে ফাইল, বই, ম্যাগাজিন ভাগে ভাগে নাম লিখে রাখলে তা দেখতে অনেক বেশি সাজানো দেখাবে। জায়গাটা আরেকটু সুন্দর করে তুলতে স্পটলাইট অথবা ল্যাম্প ও ছোট ধরনের গাছ রাখলে তা দেখতে আরও নান্দনিক দেখাবে।
মৌমিতা জানান, বাসার অন্যান্য ঘর থেকে যে জায়গাটি গোছানো রাখতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তা হলো রান্নাঘর। আজকাল সব রান্নাঘরেই ক্যাবিনেট করা থাকে, তাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে তেমন একটা অসুবিধা হয় না। তবে এ ক্ষেত্রে ক্যাবিনেটের বাইরে রাখা কাচের জার, মসলা কিংবা নাশতার জন্য রাখা জ্যাম-জেলি বা ব্রেড যদি মাঝারি সাইজের কোনো বাস্কেটে রাখা হয়, তবে তা গোছানো থাকবে, দেখতেও ভালো লাগবে। রান্নাঘর বা ডাইনিং টেবিলের জন্য মানানসই হবে, এমন বাস্কেট কিনে তা সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার পছন্দমতো জায়গায়।
স্টেশনারি জিনিস এলোমেলোভাবে না রেখে ছোট একটি বাস্কেটে রাখলে অগোছালো দেখাবে না। এ ক্ষেত্রে জিনিসভেদে ছোট ছোট বিভিন্ন বাস্কেট ব্যবহার করতে পারেন। আর কোন বাস্কেটে কোন আইটেম রাখা হলো, তা বোঝার সুবিধার্থে একটু মোটা ধরনের রঙিন কাগজ নিয়ে সাইনপেন বা মার্কার দিয়ে নাম লিখে তা বাস্কেটের ওপরে বা পাশে আটকে দিন। কালারফুল স্টিকি নোটসও ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে বাস্কেটের বর্ডার রঙিন রিবন দিয়ে ডিজাইনও করে নিতে পারেন। সেলাইয়ের সরঞ্জাম সুন্দর ছোট একটি ঝুড়িতে রেখে দিলে দরকারের সময় খোঁজাখুঁজি করতে হবে না।
যাঁদের বাড়িতে ছোট বাচ্চা আছে, তাঁদের জন্য খেলনা গুছিয়ে রাখা বেশ কষ্টকর। বাচ্চারা যেহেতু যখন-তখন খেলনা বের করে ফেলে। তাই ড্রয়ারে বা ক্যাবিনেটে খেলনা তুলে রাখাও খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এর চেয়ে বিভিন্ন রুমের কোনায় কাপড়ের বাস্কেট বা ঝুড়ি রেখে দিন। খেলা শেষে খেলনাগুলো ঝুড়িতে ভরে রাখুন। দেখবেন আপনার দেখাদেখি খেলা শেষে বাচ্চারাও খেলনা ঝুড়িতে রেখে দিচ্ছে।
অপরিষ্কার কাপড়ও এদিক-সেদিক ফেলে না রেখে বরং সেগুলো একসঙ্গে করে রাখুন লন্ড্রি বাস্কেটে। বাচ্চাদের কাপড়ের জন্য আলাদা বাস্কেট রাখতে পারেন। আবার সাদা রঙের কাপড়ের জন্য ভিন্ন বাস্কেট ব্যবহার করতে পারেন। এতে পরবর্তী সময়ে কাপড় ধোয়ার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
বাস্কেট বা ঝুড়ি হতে পারে বিভিন্ন সাইজ ও আকৃতির। গোলাকার, ওভাল শেপ, লম্বাটে কিংবা চ্যাপ্টা ধরনের। প্রয়োজনভেদে বাসার কোন অংশের জন্য বাস্কেট নিচ্ছেন, তা ভেবে কিনলে ঘরে রাখলে তা দেখতেও বেশ ফ্যাশনেবল দেখাবে।
বাস্কেট হতে পারে বাঁশের তৈরি অথবা বেতের কিংবা পাটের তৈরি। স্টিল ও প্লাস্টিকের বিভিন্ন রঙের বাস্কেটও এখন পাওয়া যায় পান্থপথ, কলাবাগান, নিউমার্কেট, মিরপুরসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায়। সুযোগ থাকলে ঢাকার বাইরে থেকেও কিনতে পারেন বেতের বিভিন্ন ধরনের বাস্কেট। বাস্কেটের দাম সাইজ ও আকৃতিভেদে একেক জায়গায় একেক ধরনের হয়ে থাকে। তাই কেনার আগে অবশ্যই ভালোমতো দেখে কিনতে হবে আর যত্নও করতে হবে যেন অতিরিক্ত ধুলাবালু পড়ে রং নষ্ট না হয়ে যায়।
আড়ং, যাত্রা, জয়িতা, দোয়েল চত্বর, সোর্স, ইউনিমার্টসহ বিভিন্ন অনলাইন শপেও পেয়ে যাবেন পছন্দসই বাস্কেট। নকশা ও আকারভেদে বাঁশ, বেত, পাট, হোগলা ও খেজুরপাতার এসব ঝুড়ির দাম পড়বে ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকার মতো।