ঘর সাজান নিজেদের পছন্দে

বিয়ের পর কেউ নিজের মতো করে আলাদাভাবে নতুন সংসার শুরু করেন। কেউ আবার শ্বশুরবাড়িকেই গড়ে তোলেন নিজের নতুন ভুবন। জীবনের এই নতুন অধ্যায় যেখানেই শুরু হোক না কেন, শোবার ঘরটি সাজানো হোক নবদম্পতির মনের মতো করে।

স্থাপত্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান মেটামরফিকের স্থপতি ফারাহ মৌমিতা জানান, নতুন সংসার সাজানোর আগে সব দম্পতির মনে নানা ধরনের প্রশ্ন আসে। কীভাবে বাসা সাজাবেন, সাজানোর জন্য কী কী কিনবেন, কোথা থেকে কিনবেন, খরচ কেমন পড়বে ইত্যাদি। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে একটু পরিকল্পনা করে নিলে সাধ আর সাধ্যের মধ্যেই নিজের শোবার ঘরটি সাজিয়ে নিতে পারবেন।

শোবার ঘর নবদম্পতিদের জন্য একান্তই ব্যক্তিগত জায়গা।
ছবি: কবির হোসেন

শোবার ঘর একেবারেই আপনার ব্যক্তিগত জায়গা। সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে যেখানে আপনি নিভৃত মুহূর্ত কাটান। তাই আপনার রুচি ও ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন সেখানে থাকা উচিত। জায়গার সঠিক ব্যবহারে ছোট বাড়িও সুন্দর করে সাজানো সম্ভব। বাড়িটি যদি বড়ও হয়, প্রথমেই প্রচুর আসবাব কেনার প্রয়োজন নেই, যা একান্ত প্রয়োজন, বরং সেখানেই বিনিয়োগ করুন। শোবার ঘরের আসবাব বলতে প্রথমেই মনে আসে একটা খাট, ড্রেসিংটেবিল আর আলমারির কথা। বেডরুমের আয়তন অনুযায়ী এসব আসবাব পছন্দ করে নিন। এরপর আসে পর্দা। শোবার ঘরে দুই স্তরের পর্দা হলে ভালো। এতে পর্যাপ্ত আলো এবং গোপনীয়তা—দুটি বিষয়ই বজায় থাকে। দেয়ালের রঙের সঙ্গে মানানসই ও হালকা রঙের পর্দা হলে ঘরটি বড় মনে হবে।

শোবার ঘরে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আলো। শোবার ঘরে ব্যবহার করুন ফ্লোর মাউন্ট আলো। এতে ঘর অন্ধকার থাকলেও গোটা ঘরেই একটা আলোর আভা ছড়িয়ে থাকবে। বেডসাইড ল্যাম্প ব্যবহার করুন অথবা ডিম লাইট। ঘরের মধ্যে জায়গা থাকলে এক পাশে একটি বসার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। দুটি চেয়ার আর ছোট একটি টেবিল, যেখানে দুজন বসে কফি খেতে পারেন বা বইও পড়তে পারেন। অথবা দুই সিটের একটি আরামদায়ক সোফাও রাখতে পারেন। সঙ্গে থাকতে পারে বিন ব্যাগ কিংবা অটোম্যান ডিভান। জায়গা কম থাকলে মেঝেতে কার্পেট বা শতরঞ্জি পেতে রাখুন। প্রয়োজনে সেখানেও বসতে পারবেন।

পুরো মেঝে কার্পেট দিয়ে না ঢেকে ছোট ছোট রাগস বা থ্রোস ব্যবহার করুন। কুশন কাভার, রাগস, বেড রানারের মতো ছোট ছোট জিনিস উজ্জ্বল রঙের বেছে নিন। এতে শোবার ঘরে আন্তরিক ও উষ্ণ আমেজ চলে আসবে। এখনকার সময় বাজারে নানা ধরনের সুগন্ধি ও সুবাসিত মোম পাওয়া যায়। ঘরের সব জায়গায়ই ব্যবহার করতে পারেন এই মোম।

সম্ভব হলে ঘরের এক কোনায় রাখুন গল্প করার আয়োজন
ছবি: কবির হোসেন

নবদম্পতিরা কী ধরনের আসবাব প্রথমেই কেনেন, জানতে চাইলে হাতিল ফার্নিচারের পরিচালক শফিকুর রহমান বলেন, প্রথমেই তারা একটি বেডরুম সেট, এক সেট সোফা এবং একটি ডাইনিং টেবিল নিতে চান। তাঁদের কাছে আসবাব কিনতে আসা নবদম্পতিদের পছন্দের শীর্ষে থাকে হাতিলের একই ডিজাইনের খাট, আলমারি, ড্রেসিংটেবিল। যেসব নবদম্পতি শোবার ঘরে অনেক বেশি আসবাব চান না​, তাঁরা বেছে নিতে পারেন বহু ব্যবহারে উপযোগী আসবাব। আয়না আছে এমন আলমারি বেছে নিন, জামাকাপড় গুছিয়ে রাখার পাশাপাশি তাহলে সেটি ড্রেসিংটেবিলের চাহিদাও পূরণ করবে। ফলে নবদম্পতিদের আর আলাদা করে ড্রেসিংটেবিল কিনতে হবে না। বাজারে মডিউলার আলমারিও পাওয়া যায়, একই সঙ্গে যা আলমারি, সু র‍্যাক ও কেবিনেটের কাজ করে।

শোবার ঘরের জন্য মিলিয়ে সেট কিনতে চাইলে হাতিল থেকে পেয়ে যাবেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মধ্যে। ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ ছাড়।

নব দম্পতিদের শোয়ার ঘর হোক ছিমছাম
ছবি: কবির হোসেন

এ ছাড়া রাজধানীর রোকেয়া সরণিতে বেশ কিছু আসবাবের দোকান রয়েছে। সাশ্রয়ী মূল্যে কাঠের আসবাব কিনতে চাইলে যেতে পারেন রাজধানীর পান্থপথ, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, লালবাগে। কাঠের আসবাব ছাড়াও আজকাল বোর্ড, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম আর প্লাস্টিকের তৈরি আসবাবও ঘরে মানিয়ে যায় বেশ। দামও তুলনামূলক কম।