পুরোনো আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে কিনতে হবে নতুন আসবাব

দুই ধারার আসবাবের মিশেলে ঘর সাজানো যায়। তবে দরকার সৃজনশীল পরিকল্পনা।

নতুন আসবাবের সঙ্গে মেলাতে চাইলে পুরোনো চেয়ারের ফোমের ওপর নতুন কাপড় দিয়ে পরিবর্তন আনতে পারেনছবি: নকশা

শাহনুমা শারমিন বিয়ের পর দীর্ঘদিন ধানমন্ডির একটি বাড়িতে ভাড়া থেকেছেন। তবে পরিবার বড় হওয়ায় কিছুদিন আগে বাসা বদল করেছেন। আগের বাসাটি তিনি সাজিয়েছিলেন বিয়ের সময়ের ভারী কারুকাজ করা আসবাবে। শাহনুমা জানান, নকশা পুরোনো হলেও আগের প্রতিটি আসবাবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক আবেগ। তাই এগুলোকে বাদ দিতে চান না, বরং এর সঙ্গে কিছু নতুন আসবাব যোগ করার ইচ্ছা আছে।

পুরোনো চেয়ার দুইটির সঙ্গে নতুন কেনা ছোট টেবিলটি হতে পারে এমন
ছবি: নকশা

অন্দর সাজাতে কারও পছন্দ ভারী কারুকাজের পুরোনো আসবাব, কারও আবার একেবারে হালের মিনিমাল বা হালকা নকশার আসবাব। আবার দুই ধারার মিশেলও গৃহসজ্জার ট্রেন্ডে আছে। তবে মিশ্র আসবাবে ঘর সাজাতে দরকার সৃজনশীল পরিকল্পনা।

পুরোনো ও নতুন আসবাব মিলিয়ে ঘর সাজাতে চাইলে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন অন্দরসজ্জা প্রতিষ্ঠান চতুষ্কোণের পরিচালক কান্তা কবির। দুই ঘরানার আসবাবের মধ্যে যেকোনো একটি সাদৃশ্য থাকা জরুরি।

এখনকার আসবাবে বার্নিশ রং ছাড়াও সাদা, ঘিয়ে, খয়েরি, হালকা হলুদ, গোলাপি, নীল, রূপালি, সোনালি রং ট্রেন্ডি। অন্যদিকে সাবেকি ধারার আসবাবে কালচে রংয়ের ব্যবহারই বেশি দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে দুই ধারার রঙের বৈপরীত্য কমাতে হবে। এ জন্য পুরোনো আসবাবের রং কিছুটা হালকা করা হবে ভালো সমাধান।

নতুন আসবাবে পুরোনো আসবাবের কোনো একটি নকশার মিল রাখতে পারেন। এতে সব আসবাব একই সেটের মনে হবে।
ছবি: নকশা

ঘরের কোথায় কোন আসবাব রাখা হচ্ছে, তা–ও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দুই ধরনের আসবাব এক ঘরে রাখলে পুরোনো আসবাব এক কোনায় রাখা ভালো। এতে তা খুব বেশি নজরে আসবে না। পুরোনো আসবাবের বদলে বরং নতুন আসবাবের ওপর কৃত্রিম আলো ব্যবহার করতে পারেন। পুরোনো আসবাবে হ্যান্ড পেইন্টও করতে পারেন।

ফোম, রঙিন কাপড় ব্যবহার করা আধুনিক আসবাবে ঘর সাজাতে চাইলে পুরোনো আসবাবেও কিছুটা পরিবর্তন আনা জরুরি। পুরোনো চেয়ার, সোফার হাতল ও পায়ায় ফোমের ওপর রঙিন কাপড় দিয়ে পরিবর্তন আনা সম্ভব।

নতুন ও পুরোনোর ফিউশনও করতে পারেন। খাবার টেবিলের পায়া অপরিবর্তিত রেখে টেবিলের ওপরে কাঠের বদলে মার্বেল পাথর ব্যবহার করতে পারেন।

পুরোনোর সঙ্গে আধুনিক আসবাবে ঘর সাজানোর ইচ্ছা থাকলেও বাজেট নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকেন। ইকুয়েটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্ট (ইএমআই) কিন্তু হতে পারে বাজেট সমস্যার সমাধান। হাতিল, বহু, ঈশোর মতো অনেক আসবাব প্রতিষ্ঠান থেকে ইএমআই পদ্ধতিতে কেনা যাবে পছন্দের আসবাব। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই থাকতে হবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড।

হাতিলের পরিচালক সফিকুর রহমান জানান, হাতিলে অনেক বছর আগে থেকেই রয়েছে ইএমআই সুবিধা। বর্তমানে বাড়তি বাজারদরের কারণে ইএমআই-এর ব্যবহার বেড়েছে। হাতিলে মোট ২১টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ক্রেতারা কোনো সুদ ছাড়াই আসবাব কেনাকাটা করতে পারবেন। ৩ মাস, ৬ মাস , ৯ মাস ও ১২ মাসের ইএমআই সুবিধা মিলবে। তবে ১২ মাসের ইএমআই সুবিধা থাকছে নির্দিষ্ট ১২টি ব্যাংকের কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য। আসবাব কেনাকাটায় ক্রেতারা ৬ ও ৯ মাসের ইএমআই সুবিধাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিয়ে থাকেন। তবে এখন অনেকে ১২ মাসের কিস্তিও বেছে নেন। এতে কমে যায় কিস্তির টাকার পরিমাণ এবং অল্প অল্প করে পরিশোধের সময়ও পাওয়া যায়। হাতিলে সব ধরনের আসবাব কেনাকাটাতেই ইএমআই সুবিধা দেওয়া হয়। তবে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকার কেনাকাটা করতে হবে।

নতুন আসবাব কিনতে পারেন ইকুয়েটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্টের (ইএমআই) মাধ্যমে
ছবি: নকশা

আসবাব প্রতিষ্ঠান বহু থেকে যেকোনো আসবাব কেনাকাটায় পাওয়া যাবে ইএমআই সুবিধা। বহুর সেলস এক্সিকিউটিভ পপি আক্তার জানান, বহুতে ৩, ৬ ও ১২ মাসের ইএমআই সুবিধা রয়েছে। তবে সিটি ব্যাংক ও ইবিএল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরাই কেবল এই সুবিধা পাবেন। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিনা সুদে কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের সুযোগও থাকছে। এ ছাড়া ইএমআই পাওয়ার জন্য বহু থেকে কোনো সর্বনিম্ন পরিমাণ টাকার কেনাকাটা করার প্রয়োজন নেই। এখান থেকে যেকোনো ঘরানার ১টি বা ২টি আসবাব কিনেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে।