নতুন সংসারে বসার আয়োজন হোক রঙিন

নবদম্পতির বসার ঘরটা কিন্তু একটু ভিন্নভাবে সাজানো যেতে পারে। রঙের নানাবিধ নান্দনিক ব্যবহারে ফুটে উঠবে নবদম্পতির রুচিবোধ।

উজ্জ্বল রঙের আসবাব থাকতে পারে নবদম্পতিদের বসার ঘরে
ছবি: কবির হোসেন

রঙিন স্বপ্ন চোখে শুরু নতুন সংসার। এ সময় কতজনই তো দেখা করতে আসেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখে নবদম্পতির বসার ঘরটা কিন্তু একটু ভিন্নভাবে সাজানো যেতে পারে। যে রংটাকে মূল রং হিসেবে বেছে নেবেন, ঘরের সব অনুষঙ্গ যেন সেটির সঙ্গে মানানসই হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তার মানে কিন্তু এই নয় যে ঘরের সব আসবাব ও অনুষঙ্গ একই রঙের হতে হবে। একই রঙের বিভিন্ন শেড যেমন কাজে লাগানো যায়, তেমনি একেবারেই বিপরীত ধাঁচের রংও আনা যায়। বসার ঘরের রং নির্ধারণ, আসবাব বিন্যাস এবং অনুষঙ্গ বাছাইয়ের বিষয়ে এমন নানা পরামর্শ দিলেন রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের প্রধান ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলসান নাসরীন চৌধুরী।

আসবাব, পর্দা আর মেঝে

ভিন্নধারায় বসার ঘর সাজাতে চাইলে কিনতে পারেন ভিন্নধর্মী নকশার বেতের সোফা। মেঝেতে বিছিয়ে দিতে পারেন সবুজ শতরঞ্জি। এ ক্ষেত্রে সোফার কভারের জন্য বেছে নিন সবুজ, কমলা, লাল, হলুদে মেশানো কোনো গ্রামীণ চেকের কাপড়। পর্দার রং হোক চাঁপা সাদা; পেলমেটের জন্য বেছে নিন কালো কিংবা নেভি ব্লু রং, এই কালোর ওপর থাকুক লাল এমব্রয়ডারি, নীলের ওপর হলুদ। সব মিলিয়ে ঘরটা যেমন রঙিন হয়ে উঠবে, তেমনি পাবেন প্রশান্তিও। এমন অন্দরে ছবিও হয় দারুণ।

নবদম্পতিদের বসার ঘর হতে পারে এমনই উজ্জ্বল
ছবি: কবির হোসেন

কোণটুকুতেই ভিন্নতা

সোফা তো রইল। ঘরের এক কোণে দুটি মোড়াও রাখতে পারেন। একটির উচ্চতা হতে পারে ২০ ইঞ্চি, অন্যটির ১৮। বেতের সোফার কভার যে কাপড়ের হবে, সেই কাপড় দিয়েই মোড়ার কভার বানিয়ে নিতে পারেন। প্রতিটি মোড়া বেঁধে দিন কাপড়ের চিকন বেল্ট দিয়ে, ওপরে রেখে দিন কুশন। মোড়ার পাশে ৫ ফুট উঁচু একটা ল্যাম্পশেড রাখতে পারেন। ওই কোণেই রেখে দিতে পারেন মাটি, টেরাকোটা বা সিরামিকের ফুলদানি। অন্দরের উপযোগী গাছও রাখতে পারেন। এই কোণের জন্যই ঘরটি দেখাবে একেবারে আলাদা।

বাহারি আসবাবে

বিভিন্ন উচ্চতায় বসার ব্যবস্থা রাখার একটা উদাহরণ তো ওপরেই দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও কিন্তু বসার আয়োজন হতে পারে নানা ধরনের। নানা নকশার নানা উপকরণের সোফা রয়েছে বাজারে। বাজেট অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন পছন্দসই সোফার সেট। অনেকগুলো চেয়ার বা সোফাই যদি হয় বসার একমাত্র ব্যবস্থা, তাহলে এগুলোর রঙেই আনতে পারেন বৈচিত্র্য। একটি বা দুটি চেয়ার বা সোফা হতে পারে উজ্জ্বল, বাকিগুলোতে ব্যবহার করতে পারেন একই রঙের হালকা কোনো শেড। প্যাচওয়ার্কের কাজ করা অনুষঙ্গও ব্যবহার করতে পারেন সোফায় রঙের পরশ আনতে। মেঝেতে বসার ব্যবস্থাও কিন্তু দারুণ। তবে বয়স্ক অতিথিদের জন্য একটু উঁচু আসনের ব্যবস্থা রাখতে ভুলবেন না।

একটু উঁচু চেয়ারও রাখতে পারেন বসার ঘরে
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

দেয়ালেও রং চাই?

সোফাগুলো চাঁপা সাদা বা বিস্কুট রঙের হলে দেয়ালে বাহারি রঙের শোপিস বা ফ্রেম ব্যবহার করতে পারেন। দেয়ালে এমন রঙের উপস্থিতিতেও রঙিন হয়ে উঠবে নতুন সংসার। সোফার রং হালকা হলে রঙিন কুশন রাখুন। এ ক্ষেত্রে মেঝেতেও আনতে পারেন মেরুনের মতো উজ্জ্বল কোনো রং। তা ছাড়া পর্দা, টেবিলক্লথ ও অন্যান্য অনুষঙ্গে বিস্কুট রং বা চাঁপা সাদার সঙ্গে মেরুনের সমন্বয় করতে পারেন। আবার কেউ চাইলে বসার ঘরের পুরো একটা দেয়ালকেই লাল, নীল বা সি গ্রিনের মতো উজ্জ্বল কোনো রঙে রাঙিয়ে নিতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে ঘরের আসবাব ও অন্যান্য অনুষঙ্গ বাছাই করতে হবে একটু ভেবেচিন্তে। রঙের নানাবিধ নান্দনিক ব্যবহারে ফুটে উঠবে নবদম্পতির রুচিবোধ।

ফুলের ভালোবাসা

বসার ঘরের মাঝখানে যে টেবিলটা রয়েছে, সেখানে দৃষ্টিনন্দন কোনো পাত্র রেখে তাতে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দিতে পারেন। এই টেবিলে ফুলেল সৌরভের মোম রাখতে পারেন। তবে ফুলদানি কিংবা অন্য যে পাত্রেই পানি রাখা হোক না কেন, তিন দিন পেরোনোর আগেই পানি বদলে ফেলবেন। পানিতে গাছ রাখলে সেটির জন্যও একই কথা প্রযোজ্য।