বাথরুমের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত যেভাবে পরিষ্কার করবেন

বাথরুম পরিচ্চন্ন না থাকলে রোগ জীবানু ছড়াতে পারে। স্থান কৃতজ্ঞতা: রয়া মুনতাসীর
ছবি: কবির হোসেন

অন্য জায়গা যেমনতেমন, বাসার বাথরুম ঝকঝকে রাখাটা বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ। ছোট্ট একটা ঘর, কিন্ত তাতে নানা রকম দরকারি জিনিসপত্র। তাই বাথরুম পরিষ্কার করার সময় প্রতিটি জায়গা ধরে ধরে ধোয়ামোছা লাগে। বাথরুম ঝকঝকে করতে ধাপে ধাপে কীভাবে পরিষ্কার করবেন, তা–ই দেখে নিন।

ভেন্ট রাখুন ধুলাবালুমুক্ত

সাধারণত বাথরুমের দেয়ালের ওপরের দিকে ঘুলঘুলি বা ভেন্টিলেটর থাকে। যে জায়গা দিয়ে ভেতরের বাতাস বাইরে চলাচল করে, সেই জায়গাটুকু পরিষ্কার রাখা জরুরি। এতে দেখতে যেমন পরিচ্ছন্ন লাগবে, আগুন লাগার ঝুকিও কমে আসবে। ঘুলঘুলি (ভেন্ট) দীর্ঘদিন পরিষ্কার করা না হলে ময়লা জমে সেখান থেকে আগুন ধরার সুযোগ তৈরি হয়। তাই এই জায়গাটুকু পরিষ্কার করুন সাবধানে।

ভেন্ট পরিষ্কার করতে হবে সাবধানে
ছবি: পেক্সেলস

মাইক্রোফাইবার কাপড় অথবা পেপার টাওয়েল দিয়ে এই জায়গা পরিষ্কার করুন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের সামনের অংশ দিয়ে এই জায়গার ধুলাবালু পরিষ্কার করতে পারেন। এরপর একটি পাত্রে ভিনেগার ও পানির সঙ্গে কিছুটা তরল সাবান মিশিয়ে মুছে নিলে এই জায়গা সহজেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

প্রতি ছয় মাসে কমপক্ষে একবার বাথরুমের এই অংশ ডিপ ক্লিন করা জরুরি।

দেয়ালের টাইলস চকচকে করতে

বাথরুমের দেয়ালে ব্যবহারের জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে ট্রেন্ডে আছে সাদা ও ধূসর রঙের টাইলস। সাদা টাইলস বাথরুমের সৌন্দর্য বাড়ায়, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

বাথরুমের টাইলস ঝকঝকে রাখুন
ছবি: পেক্সেলস

তবে এই ধরনের টাইলস নিয়মিত পরিষ্কার না করলে দ্রুত ময়লা হয়ে যায়। তবে ময়লা যেমন দ্রুত হয়, সেটা পরিষ্কার করার উপায়টাও সহজ। একটু পানির সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন। এবার সেটা টাইলসের যে জায়গাগুলোতে দাগ পড়েছে, সেখানে লাগান। তারপর সেটা স্ক্রাব ব্রাশের সাহায্যে ঘষে নিন। এবার পানি দিয়ে ধুয়ে দেখুন, নতুনের মতো ঝকঝকে হয়ে যাবে পুরো দেয়াল।

মেঝে যেন পিচ্ছিল না হয়

বাথরুমের মেঝে শুকনো রাখার চেষ্টা করুন
ছবি: পেক্সেলস

আপনার যদি বাথরুমের টাইলস পরিষ্কার করার উপায় জানা থাকে, তাহলে মেঝে পরিষ্কার করা সহজ হবে। মেঝে পরিষ্কার করতেও বেকিং সোডার পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। যদি বেশি দাগ থাকে, তাহলে পুরো মেঝেতে এই পেস্ট লাগিয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এবার সেটা ব্রাশ দিয়ে ঘষে তুলে ফেলুন। এবার আধা বালতি পানিতে কিছুটা তরল সাবান মিশিয়ে একটু ফেনা তুলে নিন। একটা মাইক্রোফাইবার কাপড় অথবা সুইফার (হাতলযুক্ত একধরনের মেঝে পরিষ্কারের উপকরণ) এই সাবানপানিতে ভিজিয়ে মেঝে মুছে নিন। বাথরুমে যদি কোনো ম্যাট বা পাপোশ থাকে, আলাদা করে সাবানপানিতে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।

ঝরনা ও শাওয়ারহেডে সহজ সমাধান

ঝরনায় যেন মরচে না পড়ে
ছবি: কবির হোসেন

বাথরুমের আরেকটি দরকারি উপকরণ হচ্ছে শাওয়ারহেড। গোসলের সময় এটি দিয়ে মাথা ও হাত–পায়ে ঠিকমতো পানি লাগানো হয়। আর শহুরে বাড়িতে ঝরনা ছাড়া গোসলখানা তো ভাবাই যায় না।

তরল সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নিন শাওয়ারহেড
ছবি: পেক্সেলস

সাধারণত এই উপকরণগুলো স্টিলের হয়ে থাকে। তাই দীর্ঘদিন ব্যবহারে এখানে একধরনের লালচে দাগ পড়ে, যেখান থেকে মরিচা ধরতে পারে। এই দাগ দূর করার জন্য বাজারে তরল ক্লিনার পাওয়া যায়। একটি ব্রাশের গায়ে এই তরল লাগিয়ে মিনিট দুই পর ঘষে নিলেই হয়ে যাবে।

কমোডে লিকুইড ঢেলে ব্রাশ দিয়ে ঘষে নিন
ছবি: পেক্সেলস

বেসিন ও কমোডের পরিচ্ছন্নতা

বাথরুমের বেসিন ও কমোড পরিষ্কার রাখতে দুই ধরনের ক্লিনার দরকার পড়বে। প্রথমে কমোডটি ভিজিয়ে তাতে টয়লেট ক্লিনার দিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। এই সময়ে বেসিন পরিষ্কার করতে ডিটারজেন্ট পাউডারের সঙ্গে কিছুটা পানি মিশিয়ে নরম কাপড় বা নেট দিয়ে ঘষে নিন। বেসিনের মাঝে ছিদ্রুযুক্ত জায়গাটা আলাদা করে ঘষতে হবে। বেসিন পরিষ্কার করা হলে এবার ব্রাশের সাহায্যে কমোড ঠিকমতো ঘষে পরিষ্কার করুন।

আয়না পরিষ্কারের পর শুকনো কিছু দিয়ে মুছে নিতে হবে
ছবি: পেক্সেলস

বেসিনের আয়নায় সহজ সমাধান

আয়না পরিষ্কার করতে অনেকে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন। তবে এর চেয়ে সহজ সমাধান আছে। রান্নাঘর থেকে একটা মগে একটু ভিনেগার ঢেলে তাতে পানি মিশিয়ে আয়নায় লাগান। এরপর খবরের কাগজ দিয়ে আয়নাটা মুছে নিন। শেষে একটু পানি স্প্রে করে নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই আয়না হয়ে উঠবে নতুন।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট