ঘরের ভেতরে যেভাবে আরামদায়ক উষ্ণ আবহ পাবেন

শীতে মেঝেতে ব্যবহার করতে পারেন এমন কাপড়ের ম্যাট। কৃতজ্ঞতা: সোর্স, মডেল: বর্ষা
ছবি : সাবিনা ইয়াসমিন

এখনো যেন শীত আসব, আসছি করছে। শিগগিরই হয়তো আসবে। তখন বাইরে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপুনি দিলেও ঘরের ভেতরে চাই আরামদায়ক উষ্ণ আবহ। শীতের ছোবল থেকে বাঁচতে তাই ঘরের অন্দরসজ্জায় যুক্ত করতে পারেন টুকিটাকি কিছু অনুষঙ্গ।

 মেঝে রাঙাবে শতরঞ্জি,
পায়েও দেবে আরাম

কাঁটার মতো পায়ে বিঁধে ঘরের কনকনে শীতল মেঝে। ঘরের ভেতর সারাক্ষণ জুতা পরে থাকাও এক বিড়ম্বনা। তাই ঘরের যেসব স্থানে সবচেয়ে বেশি সময় কাটানো হয়, সেখানে মেঝেতে বিছিয়ে নিতে পারেন বাহারি শতরঞ্জি। শত রঙের রঙিন সুতোয় বোনা চোখজুড়ানো সব নকশা। নামীদামি বিদেশি কার্পেটগুলোকেও যেন ছাপিয়ে যায় দেশে তৈরি শতরঞ্জি। মখমল, ভেড়ার লোম ও পাট—তিন ধরনের শতরঞ্জির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন রাজধানীর ধানমন্ডির শতরঞ্জি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী তারেক আজাদ। তিনি বলেন, দেখতে সুন্দর, নরম এবং দামে কম হওয়ায় ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে মখমলের সুতায় তৈরি শতরঞ্জি। শুধু শীতেই নয়, বছরজুড়েই অন্দরের শোভা বাড়াতে পারে দেশীয় এই কৃষ্টি। আর শীতে সৌন্দর্যের চেয়ে পায়ের আরামটাই হয়ে ওঠে এর মুখ্য কাজ, বলছিলেন তারেক আজাদ। তাই শীতেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায় শতরঞ্জির ক্রেতার আনাগোনা। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থভেদে বাজারে নানান আকারের শতরঞ্জি পাওয়া যায়। তাই ভিন্ন আকার এবং নানা প্রকারের শতরঞ্জির দাম পড়বে ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

 সোফায় ভাঁজ করে রাখা নকশিকাঁথা   

শীতের বিকেলে আরাম করে সোফায় বসে চা কিংবা কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে শীত উপভোগ করার মজাই আলাদা। এ সময় শীত থেকে বাঁচতে শোবার ঘর থেকে কম্বল বা কমফোর্টার নিয়ে আসেন অনেকে। এমন যেন করতে না হয়, সে জন্য সোফায় রেখে দিতে পারেন একটি নকশিকাঁথা। ঢাকার আসাদগেটের সোর্স-এর বিক্রয়কর্মী মুক্তা ইসলাম বলছিলেন, একেবারে নতুন একরঙা নকশিকাঁথার পাশাপাশি পুরোনো শাড়ি-কাপড় থেকে তৈরি কাঁথাগুলোও দেখতে বেশ চমৎকার। ঘরের ভেতর সাময়িকভাবে এগুলোর ব্যবহার খুব আরামদায়ক হতে পারে। দাম ১ হাজার ৭০০ থেকে ১০ হাজার টাকা।

ঘরে উষ্ণতা ছড়াতে ল্যাম্পশেড বেশ কাজের
ছবি: সুমন ইউসুফ

 ঘর উষ্ণ রাখবে ল্যাম্পশেড

ঘরের আবহ বদলে দিতে একটি ল্যাম্পেশেডই যথেষ্ট। তবে শীতে এর কার্যকারিতা একটু অন্য রকম। ঘরে উষ্ণতা ছড়াতে ল্যাম্পশেড বেশ কাজের, বলছিলেন যাত্রার উৎপাদন ব্যবস্থাপক তাসমিয়া ফরহাদ। পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘শীতে ঘরের সাজের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন ভিন্ন নকশা এবং ধাঁচের এক বা একাধিক ল্যাম্পশেড।’ সোর্সের মুক্তা ইসলাম বলছিলেন, ‘ল্যাম্পশেডে বড় বাল্ব ব্যবহার করে ঘরে রাখতে পারেন।’ তাই শীতে অনেকেই শোবার কিংবা বসার ঘরে একের অধিক ল্যাম্পশেড সাজান। এতে অন্দরসজ্জার সঙ্গে ঘরে আরামদায়ক আবহ সৃষ্টি হয়। ল্যাম্পশেডের দাম পড়বে ৩৫০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা।

মেঝে রাঙানোর পাশাপাশি শতরঞ্জি পায়েও দেবে আরাম
ছবি : সাবিনা ইয়াসমিন

জানালা-দরজায় উইন্ডচাইম

শীতে ঘরে এবং বাইরে একধরনের ম্যাড়মেড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। পরিবেশ ও মনের উদাস ভাব দূর করতে অনেকেই তাই ঘরকে একটু রঙিন করে সাজিয়ে তুলতে চান। তাঁদের উদ্দেশে উইন্ডচাইম নেওয়ার পরামর্শ দিলেন তাসমিয়া ফরহাদ। তিনি বলেন, কাগজ, কাঠ, মাটি বা ধাতব নানা রকম রঙিন উইন্ডচাইম পাওয়া যায়। এগুলো দরজা বা জানালায় ঝুলিয়ে দিলে খুব হালকা আওয়াজ সৃষ্টি করে, ঘরে একধরনের মন ভালো করা আবহ তৈরি করে। দাম পড়বে ১৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা।

শোবার ঘরের সজ্জায় কম্বল-কমফোর্টার

শীতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ কম্বল বা কমফোর্টার। যাঁদের আছে, তাঁরা রোদে দিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করে নিন। নতুন কিনতে চাইলে বেছে নিতে পারেন নান্দনিক সব ডিজাইন। আজকাল ব্লকের কমফোর্টার বেশ পছন্দ করছেন ক্রেতারা, জানালেন তাসমিয়া ফরহাদ। তিনি বলেন, শোবার ঘরে দেশীয় ধাঁচ যুক্ত করতে বিদেশি প্রিন্টের পরিবর্তে ব্লকের কমফোর্টারগুলো বেশি চলছে। এ ছাড়া রঙিন কম্বল ও পছন্দসই কমফোর্টার দিয়ে সাজিয়ে রাখতে পারেন শোবার ঘরের বিছানা। যেকোনো ব্র্যান্ডের দোকান বা নিউমার্কেটে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় পেয়ে যাবেন ভালো মানের আরামদায়ক কম্বল ও কমফোর্টার।