এই বর্ষায় যত্নে থাকুক ফুলগাছ
গাছের যত্নে একেক মাসে একেক রকম সার দেওয়া ভালো। গাছের জন্য রোদ চাই অন্তত একবেলা। ছাদে রাখতে পারেন। রোদেলা বারান্দাও মন্দ নয়।
বর্ষায় প্রকৃতি থাকে সবুজ ও সতেজ। বর্ষায়ই ফোটে বেলি, জুঁই, টগর, দোলনচাঁপা, কামিনী আর স্পাইডার লিলি। তালিকায় আরও আছে সুগন্ধি গন্ধরাজ আর রজনীগন্ধা। কাঠগোলাপ, অপরাজিতা, দোপাটি, নয়নতারা, জবাও বর্ষার ফুল। জলজ ফুল শাপলাও ফোটে বর্ষায়। কদম আর বকুলও এই মৌসুমের দারুণ দুটি ফুল। সুগন্ধি এসব ফুলে সহজেই সাজাতে পারেন ঘর। অন্দরে আসবে সজীবতা। দেখাবেও অন্য রকম। ফুলদানি বা বোতলে যেমন কয়েকটি ফুল রাখতে পারেন, তেমনি ফুলের মালাও ঝুলিয়ে দিতে পারেন ঘরের এক কোণে। অফিসের ডেস্কেও রাখতে পারেন ফুল। ফুল কিংবা ফুলের মালা বর্ষার দিনে সাজের অনুষঙ্গ হিসেবেও দারুণ। ব্যাগের হাতলেও ঝুলিয়ে নিতে পারেন ফুলের মালা।
ফুলগাছের যত্ন
এসব ফুলের গাছও বাড়িতে রাখতে পারেন। বাড়ির বাগানে যোগ হবে ভিন্ন মাত্রা। ফলবীথি হর্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা জান্নাতুল মার্জিয়া জানালেন, এসব গাছের যত্নআত্তির নিয়ম।
• দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি এবং পচা গোবর সমান পরিমাণে মিশিয়ে নিন। এসব গাছের জন্য এ মাটিই উপযুক্ত।
• গাছ লাগানোর সময় সতর্ক থাকুন, যাতে গোড়া নড়ে না যায়। বিশেষত কাটিং থেকে করা চারার ক্ষেত্রে খুব সাবধান থাকতে হবে।
• এসব গাছের জন্য রোদ চাই অন্তত একবেলা। ছাদে রাখতে পারেন। রোদেলা বারান্দাও মন্দ নয়। তবে গাছ লাগানোর পর প্রথম এক সপ্তাহ পর্যন্ত ছাদে, অর্থাৎ পূর্ণ রোদে রাখাই ভালো। এক সপ্তাহ পর বারান্দায় রাখা যেতে পারে। তবে সেখানে খুব একটা রোদ না পেলে সপ্তাহে একদিন সারা দিনের জন্য ছাদে রেখে আসা উচিত।
• এক মাস পর থেকে প্রতি মাসে একবার করে সার দিতে হবে। এ সময় শর্ষের খইল ভেজানো পানি, জৈবসার কিংবা ভার্মিকমপোস্ট—যেকোনো একটি প্রয়োগ করতে পারেন। রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে চাইলে বেছে নিন টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট) সার। একটি বড় বা মাঝারি গাছের জন্য ১ চা-চামচ টিএসপিই যথেষ্ট। ছোট আকৃতির গাছের জন্য পরিমাণ কমিয়ে দিন। তবে গাছের যত্নে একেক মাসে একেক রকম সার দেওয়া ভালো। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাই সব কটিই প্রয়োগ করতে পারেন।
• সারের বিকল্প হিসেবে গাছের পাতায় প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটর স্প্রে করতে পারেন দেড়-দুই মাস অন্তর।
• মাসে একবার পাতায় মাকড়নাশক স্প্রে করা ভালো।
খেয়াল রাখুন
• গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেবেন না।
• ফুলদানির পানি তিন দিনের মধ্যেই বদলে দিন।
• বাড়িতে শিশু ও পোষা প্রাণী থাকলে রাসায়নিক সার এবং মাকড়নাশক স্প্রে ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।