লেপ, চাদর ব্যবহারের আগে যা করতে হবে

শীতের পোশাক বের করে ধুলা ঝেড়ে নেওয়ার সময় এখনই
মডেল: তন্বী, ছবি: সুমন ইউসুফ

শহরে এখনো শীত জেঁকে বসেনি, তবে তুলে রাখা শীতের পোশাক বের করে ধুলা ঝেড়ে নেওয়ার এখনই সময়। হাতে সময় থাকতেই বদ্ধ হয়ে পড়ে থাকা গরম পোশাকে রোদ লাগিয়ে নিন ভালোভাবে। শীতের পোশাক, কাঁথা-কম্বল ব্যবহারের আগে সেগুলোর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন আছে, জানান আকিজ কলেজ অব হোম ইকোনমিকসের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমাইয়া হোসেন। বছরের অল্প কয়েকটা দিন এই কাপড় ব্যবহার করা হয় বলে বাকি সময়ে আবদ্ধ অবস্থায় থাকে। ফলে এতে গন্ধ বা স্যাঁতসেঁতে ভাব হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এখন বৃষ্টি নেই, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কড়া রোদ পড়ে। শীতের পোশাক রোদে দেওয়ার জন্য এ সময়টা বেশ উপযুক্ত।

শীতের পোশাক

শীতের সোয়েটার বাড়িতে একটু সাবধানে ধুয়ে ফেলা যায়। সোয়েটার পরিষ্কার করতে ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। ডিটারজেন্টের সঙ্গে ২ চা-চামচ ভিনেগার দিয়ে সেই পানিতে সোয়েটার পরিষ্কার করে ফেলুন অথবা শ্যাম্পু দিয়ে সোয়েটার পরিষ্কার করতে পারেন। এতে উলগুলো নরম থাকবে। ধোয়া শীতের শাল ও সোয়েটার ভালোভাবে রোদে দিয়ে ঝরঝরে করে নিন। শীতের পোশাকে সরাসরি সুগন্ধি ব্যবহার না করাই ভালো।

শ্যাম্পু আর পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন সোয়েটার
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

শিশুদের পোশাক

শিশুদের শীতের কাপড় খুব ভালোভাবে এপাশ-ওপাশ উল্টিয়ে রোদে দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিন। শীত শেষে শীতের কাপড় তুলে রাখার পর আলমারি বা বাক্সে ছোট ছোট ধূলিকণা থেকে একধরনের ছোট ছোট কীট তৈরি হয়। এই কীটসহ জামাকাপড়, লেপ, কম্বল ও মাফলার পরলে তা নাকে প্রবেশ করে শরীরে অ্যালার্জি তৈরি করে। সঙ্গে সঙ্গে হাঁচি–কাশি শুরু হয়। অনেকের এই হাঁচি-কাশি পুরো শীতকাল স্থায়ী হয়। তাই এখনই পুরোনো কাপড় মচমচে করে রোদে শুকিয়ে নিন। প্রয়োজনে কয়েক দিন পরপরই রোদে দিন অথবা ধুয়ে ইস্তিরি করে পরুন। নতুন কেনা কোনো শীতের কাপড়ের বেলায়ও একই ধরনের নিয়ম অনুসরণ করা উচিত।

শীতের লেপ, কম্বল বের করার সময় চলে এল বলে
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

লেপ ও কম্বল

আপনার লেপটি যদি শিমুল তুলার হয়, তাহলে সেটি ধোয়া যাবে না। এমনকি ড্রাই ওয়াশও করানো যাবে না। তার চেয়ে লেপটি রোদে দিন। দুপুরের কড়া রোদে ঘণ্টা দুয়েক রাখলেই চলবে। উল্টে-পাল্টে লেপের দুই পাশেই রোদ লাগান। এতে লেপে থাকা স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর হয়ে যাবে।

গত শীতে কম্বল ধুয়ে না রাখলে এখনই লন্ড্রিতে ড্রাই ওয়াশ করতে দিন। সেখানে বিশেষ উপায়ে পরিষ্কার করা হয় বলে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। অনেকেই কম্বল না ধুয়ে ব্যবহার করেন। কিন্তু যতই যত্ন করে রাখুন না কেন এতে ধুলা জমে যায়। বাড়িতে কম্বল ধুতে হলে কোমল ডিটারজেন্ট দিয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এ ছাড়া লন্ড্রি ওয়াশ উপযোগী কম্বল গুঁড়া সাবান মেশানো পানিতে ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলুন। খেয়াল রাখতে হবে কম্বল শুকাতে যেন খুব বেশি সময় না লাগে। এতে কম্বলের পশম ও রং নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কম্বল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি ঝরিয়ে ছায়াযুক্ত ও বাতাস রয়েছে এমন জায়গায় শুকাতে দিন। কম্বল ব্যবহার করার সময়ও মাঝেমধ্যে রোদে দিন।

ভাঁজ করা কঠিন হলে ঝুলিয়ে রাখুন জ্যাকেট
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

কম্বল বা লেপে অবশ্যই কভার ব্যবহার করবেন। শীতের মৌসুমে অনেকেই ডাস্ট অ্যালার্জিতে ভোগেন। অধিকাংশ সময় শীতের পোশাকে ও কম্বলে ধুলা জমে থাকে। সে ধুলা থেকেই এমন অ্যালার্জির সমস্যা দেখা যায়। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শীতের জিনিস ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখুন।