কেমন হবে শোবার ঘরের আসবাব
আধুনিক অন্দরের আসবাবের নকশা এখন এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে কম আসবাবেই মেটে সব প্রয়োজন। তাই পুরোনো ধাঁচের ভারী নকশার কাঠের আসবাবের পরিবর্তে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে হালকা নকশার বোর্ডের আসবাব। কারণটা মূলত জায়গার স্বল্পতা আর রুচির পরিবর্তন। হালকা নকশার সাদামাটা আসবাব জায়গা নেয় কম।
কাঠের পরিবর্তে বোর্ডের আসবাবও নিতে পারেন। বাজারে পাওয়া যায় বহু ধরনের বোর্ড। অনেক প্রতিষ্ঠানও বোর্ডের আসবাব তৈরি করে। আসবাবের জন্য পানিরোধী, মানসম্মত বোর্ড ব্যবহার করা হলে তা টেকসই হয়। কাঠের চেয়ে বোর্ডের দাম কম। বোর্ডে ঘুণ ধরে না, বোর্ড বাঁকাও হয়ে যায় না। বোর্ড দিয়ে নিজের পছন্দমতো রং এবং বৈচিত্র্যময় নকশায় আসবাব গড়িয়েও নিতে পারেন। কাঠরঙা আসবাবের চেয়ে এখন হালকা, নিরপেক্ষ রঙের আসবাবের চাহিদা বেড়েছে। ঘরের দেয়ালেও ব্যবহার করা হচ্ছে এসব রং। এ প্রসঙ্গে বলছিলেন সৃষ্টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড কনসালটেন্সির প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি তাসনিম তূর্যি।
যেমন আসবাব
খাট, পাশটেবিল আর এক পাশের দেয়ালে ক্যাবিনেট বা ক্লজেট হলেই শোবার ঘরে আপনার বেশির ভাগ প্রয়োজন মিটে যাবে। সম্ভব হলে একপাশের পুরো দেয়ালে ক্যাবিনেট করে নিতে পারেন। ক্যাবিনেটের বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে আরও নানা চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারেন আপনি। সাদা, ধূসর, হালকা তামাটে বা হালকা কফি রঙের আসবাব বেছে নিতে পারেন। মোকা মুজ রং এবং হালকা বেজ রংও আধুনিক অন্দরে দারুণ জনপ্রিয়।
সাদামাটা নকশায় দৃষ্টিনন্দন অন্দর
খাটে বড় আকারের ফুল-পাতার কারুকাজ একসময় জনপ্রিয় ছিল। এখন সাদামাটা নকশার খাট বেছে নেওয়া হচ্ছে। সাদামাটা নকশার যেকোনো আসবাব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সহজ। নকশায় বৈচিত্র্য আনতে খাটের মাথার দিককার অংশ অর্থাৎ হেডবোর্ডটিকে কাপড় বা রেক্সিনে মুড়িয়ে নেওয়ার চল রয়েছে। এই কাপড় বা রেক্সিনের জন্যও নিরপেক্ষ রং বেছে নিতে পারেন। অনেকে হালকা নীল, সি ব্লু বা ফিরোজা রঙের হালকা শেডও পছন্দ করেন। অন্যান্য রঙের হালকা শেডও বেছে নেওয়া যেতে পারে। এভাবে ঘরে কিছুটা রঙের ছোঁয়া আনা যায়। পাশটেবিলের জন্যও হালকা নকশা বেছে নেওয়া হচ্ছে এখন। পাশটেবিলে পায়ার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। পায়ায় সোনালি, কালো কিংবা কাঠ রং ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাজের আয়নাখানি
আধুনিক অন্দরে ড্রেসিং টেবিল জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। বরং দেয়ালের ক্যাবিনেটের পাল্লাজুড়ে লম্বা আয়না লাগিয়ে নেওয়ার চল হয়েছে। তাতে জায়গা বাঁচে। সাজসজ্জার অনুষঙ্গ ছোট দেয়াল ক্যাবিনেটে গুছিয়ে রাখতে পারেন। আলাদাভাবে গুছিয়ে রাখলে প্রয়োজনের সময় এগুলো খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। আবদ্ধ জায়গায় রাখা হয় বলে সহজে ময়লাও হয় না। কেউ কেউ আবার টেলিভিশন ক্যাবিনেটের একপাশেই আয়না লাগিয়ে নেন। তাতে টেলিভিশন ক্যাবিনেটেই ড্রেসিং টেবিলের চাহিদা মিটে যায়।
ক্যাবিনেটে আরও বৈচিত্র্য
জায়গা ও প্রয়োজন অনুযায়ী নানা আকারের ক্যাবিনেট গড়িয়ে নিতে পারেন। ক্যাবিনেটগুলোর পাল্লা চারকোনা, গোল কিংবা ডিম্বাকৃতির করা যেতে পারে। চাইলে ক্যাবিনেটের পাল্লায় কিছু হালকা কারুকাজও করিয়ে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে জামদানি মোটিফ, জ্যামিতিক মোটিফ কিংবা বিমূর্ত মোটিফ কাজে লাগাতে পারেন। ক্যাবিনেটের কিছু অংশ আবার পাল্লাবিহীনও হতে পারে। এমন নানা বৈচিত্র্য এনে কম আসবাবেই চমৎকারভাবে সাজাতে পারেন শোবার ঘর।