ছোট্ট বারান্দার নান্দনিকতায়

ঘরের বারান্দায় গাছপালা মানেই পরিবেশটা একেবারে অন্যরকম।কৃতজ্ঞতা: সাবিহা কুমু, ছবি: প্রথম আলো

গাছপালা তো থাকবেই, তার সঙ্গে ঘরের বারান্দায় যদি থাকে একটু বসার আয়োজন তাহলে কেমন হবে বলেন তো? ঢাকা শহরের বেশির ভাগ ফ্ল্যাট বাড়িগুলোর বারান্দা আয়তনে এতই ছোট হয়ে থাকে যে সেখানে গাছপালা রাখাই দায়। এই অল্প পরিসরে বসার আয়োজন করাটা একটু কষ্টকরই বটে।

একটু বুদ্ধিখাটিয়ে কাজ করলেই বারান্দাকে রাখতে পারবেন মনের মতো।
কৃতজ্ঞতা: বিনু রাজিয়া, ছবি: প্রথম আলো

তবে একটু বুদ্ধি খাঁটিয়ে আর অন্দরসজ্জার নিয়ম নিতি মেনে সাজালে ঘরে থাকা জিনিস দিয়েই কিন্তু সেজে উঠতে পারে আপনার ছোট্ট বারান্দা টি। করোনা সংক্রমণে ঠেকাতে যেহেতু এখন বাইরে যাওয়া মানা তাই অবসর কাটানোর জন্য এই বারান্দাই হয়ে উঠতে পারে ঘরের প্রিয় স্থান।

কমবেশি সবার বাসায় বাড়তি কুশন বা গদি থাকে। বারান্দায় একটু আয়েশ করে সময় কাটাতে বসার জন্য মেঝেতে বিছিয়ে নিতে পারেন এমন বড় কুশন বা গদি। এই ধরনের জিনিসের ব্যবহার ছোট পরিসরের ঘরকে বড় দেখাতে সাহায্য করে, এমনটাই বলা হয় অন্দরসাজে পাঠে। আলাদা কুশন কাভার থাকলে তো ভালোই তবে তা থাকলেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। বাড়িতে থাকা গামছার কাপড় কাভার হিসেবে গদি বা কুশনে ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে দেয়ালে হেলান দিয়ে একটু আয়েশ করে বসার জন্য রাখতে পারেন ছোট্ট কুশন। তবে বাড়তি কুশন বা গদি না থাকলেও চিন্তা নেই।

ঘরে থাকা ছোট ছোট মোড়া বা জল চৌকিগুলো সাজিয়ে রাখতে পারেন বারান্দায়। টুকটাক এই আসবাব গুলি কম বেশি সবার বাড়িতেই থাকে। তবে খেয়াল রাখবেন এসব আসবাব যেন প্লাস্টিকের তৈরি না হয়। কারণ বারান্দা ঘিরে থাকা সবুজ গাছগাছালির সঙ্গে প্লাস্টিকের আসবাব একেবারেই বেমানান। তাই বারান্দার আসবাব হিসেবে এখন কাঠ, বেত বা বাঁশের তৈরি মোড়া বেশ জনপ্রিয়তা দখল করে আছে। এ ছাড়া হাতে আঁকা (হ্যান্ড পেইন্টের) মোড়াও রাখতে পারেন বারান্দায়।

ছোট্ট পরিসরের বারান্দাতে করতে পারেন চায়ের কর্নার
ছবি: প্রথম আলো

শুধু বসার আয়োজনই নয়, ছোট্ট পরিসরের এই বারান্দাতেই কিন্তু করতে পারেন চায়ের কর্নারও। এ ক্ষেত্রে যদি মেঝেতে বসার আয়োজন থাকে তাহলে কাঠের টুল বা ছোট মোড়ায় হতে পারে এই চা পর্বের আয়োজন। খুব বেশি কিছু নয়, ধূমায়িত চায়ের কাপ আর তা পাশে রাখা ছোট পট প্ল্যান্ট কিন্তু এনে দেবে ভালো লাগার ছোঁয়া। এ ছাড়াও ছোট ছোট কিছু ক্র্যাফট পণ্য যদি রেখে দেওয়া যায় টেবিলে তা ও এনে দেবে শৈল্পিক আবহ। তবে মোড়া বা টুলে বসার আয়োজন থাকলে সান্ধ্যকালীন চা পর্বের আয়োজনটা মেঝেতেই বেশি জমে উঠবে। বারান্দার মেঝেতে শতরঞ্জি বিছিয়ে তার ওপর বাঁশের ম্যাট বা রানারে রাখা যেতে পারে চা খাবার পাত্রটি। সময়টা তো শরৎকাল। এই সময়ের ফুল রাখা যেতে পারে আয়োজনের এক কোণে।

এদিকে রাতের বেলা বারান্দায় আলোকসজ্জার ব্যবস্থা তো থাকেই, তবে দিনের আলোতেও আলোকসজ্জায় চমক আনতে পারেন বারান্দায়। এ জন্য বারান্দার একটি কোণ বেছে নিন। এই কোণে গাছ রাখার জন্য একটু নান্দনিক মাটির পাত্র ও পটারি ব্যবহার করতে পারেন।

মাটির বোলে পানি দিয়ে ছড়িয়ে দিন রং বেরংয়ের নকশা করা মোম। বোলে কিছু গোলাপের পাপড়ি দিয়ে দিন
ছবি: প্রথম আলো

মাটির বোলে পানি দিয়ে ছড়িয়ে দিন রং বেরংয়ের নকশা করা মোম। বোলে কিছু গোলাপের পাপড়ি দিয়ে দিন। গোলাপের সুগন্ধে আর মোমের মায়াবী আলোয় দেখুন না কেমন স্নিগ্ধ হয়ে উঠেছে আপনার ঘরের ছোট্ট বারান্দাটি।