সাদা আসবাবে সাজানো একটি ঘর হতে পারে টাইমলেস ফ্যাশন। স্থপতি ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের কাছেও এটি প্রচলিত ধারণা। সাদা আসবাব ঘরে বাড়ায় আলো ও উজ্জ্বলতা। ডিজাইনাররা গ্রীষ্মের সিগনেচার রং হিসেবে সাদাকেই প্রাধান্য দেন। কারণ, এ রং ঘরে আনে প্রশান্তি ও স্বস্তি। কোস্টাল, ফ্রেন্স প্রভিন্সিয়াল, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ও মিনিমাল থিমগুলো সাদা আসবাব সাজানোর ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয়। আমেরিকান ইন্টেরিয়র ডিজাইনার কেনেথ বোয়ের মনে করেন, ‘সাদা রঙের ওপর আলোর প্রতিফলনে বড় আকারের সাদা আসবাবও অনেকটা ছোট মনে হয়, যা অন্য গাঢ় রঙের ক্ষেত্রে হয় না। এ ছাড়া ঘরের স্পেসে আভিজাত্য আনতে সব থেকে কার্যকর হলো সাদা আসবাব।’
কিন্তু যেকোনো সাধারণ ফার্নিচারের থেকে সাদা ফার্নিচারের সৌন্দর্য ধরে রাখা বেশ কঠিন। এ ছাড়া সাদা আসবাবের যত্নের ধরনেও আছে অনেক পার্থক্য। সাদা ফার্নিচার সাদা ও সুন্দর রাখতে প্রথমেই যা মানতে হবে, তা হলো বারবার এগুলো সরানো যাবে না। অর্থাৎ এক ঘরে থেকে অন্য ঘরে আনা-নেওয়া না করাই ভালো। পেশাদারদের দিয়ে ঘরে আসবাব সাজানোই শ্রেয়। বাজারে সাদা আসবাবের জন্য অনেক ধরনের স্প্রে পাওয়া যায়। এগুলো রং ও উজ্জ্বলতা ঠিক রাখে বলে জানান স্থাপত্য ও অন্দরসজ্জাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান হাইভের প্রধান স্থপতি রাফিয়া মারিয়াম আহমেদ।
স্লিপকাভার ব্যবহার
সাদা আসবাবের রং, উজ্জ্বলতা ও এর ফিনিশিং ভালো রাখতে স্লিপকাভার ব্যবহার দারুণ উপায়। সব সময় কাভার দেওয়া থাকলে বাইরের ধুলো ও রোদের তাপ থেকে সুরক্ষিত থাকবে। আর ওপরের কাভারটি ময়লা হলে ধুয়ে ফেলার জন্য খুলতে হবে। তবে আবার কাভার ব্যবহারে আগে অবশ্যই শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে পরে কাভার বিছানো উচিত।
দাগ কমানো
সাদা আসবাবে খুব সহজেই দাগ লাগে। এই দাগ হালকা হলে বেশি ফুটে ওঠে। কিন্তু দাগ লেগে গেলে তা ফেলে রাখা যাবে না, সঙ্গে সঙ্গেই মুছে ফেলতে হবে। দাগ মোছার জন্য সিনথেটিক কাপড়ের বদলে সুতি কাপড় বা স্পঞ্জ ব্যবহার করতে হবে। সুতি কাপড় বা স্পঞ্জে দাগ উঠবে দ্রুত। এ ছাড়া সাদা আসবাবের দাগ তোলার জন্য একধরনের বার্নিশ পাওয়া যায়। এটিও দাগ তুলতে সাহায্য করবে। এমনকি সাধারণ সাবান–পানি দিয়েও দাগ তোলা যাবে। তবে অবশ্যই স্বাভাবিক পানি দিয়ে আবার মুছে নিতে হবে।
পরিষ্কার করা
যেকোনো আসবাবই ধুলো-ময়লা থেকে সুরক্ষিত রাখতে পরিষ্কার করা দরকার। কারণ, ধুলোর কারণে ফার্নিচারের রং ও চাকচিক্য নষ্ট হয়। সাদা আসবাব ভ্যাকিউম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করাই সবচেয়ে ভালো। এতে ময়লা পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি ঘষা লেগে কোনো ধরনের দাগ হবে না। তবে ভ্যাকিউম ক্লিনার না থাকলে নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। সাদা আসবাবে কোনোভাবেই শক্ত ব্রাশ ব্যবহার করা যাবে না।
লিন্ট রোলার ব্যবহার
কাপড় থেকে শুরু করে আসবাব,যেকোনো কিছু পরিষ্কারের আধুনিক ও সহজ একটি মাধ্যম হলো লিন্ট রোলার ব্যবহার, বললেন স্থপতি রাফিয়া মারিয়াম আহমেদ। এটি একধরনের রোলার,যার ওপরের কাগজে লাগানো থাকে গাম। ময়লা আসবাবে রোলারটি ঘোরালে ময়লা কাগজের গামের সঙ্গে লেগে উঠে আসে। কাগজের গাম শেষ হয়ে গেলে কাগজটি কেটে নিজের নতুন অংশটি আবার ব্যবহার করা যায়।
রোদে না রাখা
বিশেষজ্ঞরা রাফিয়া মারিয়াম আহমেদ যেকোনোফার্নিচার রোদে না রাখার পরামর্শ দেন। কারণ,রোদের তাপ কাঠের আসবাবের জন্য ভালো। কিন্তু সাদা আসবাবের ক্ষেত্রে তার বিপরীত। কারণ হলো রোদের তাপে সাদা রঙে আসে হলদে ভাব। তাই সরাসরি রোদ আসে—এমন স্থানে রাখা যাবে না সাদা ফার্নিচার।
ডিপ ক্লিন
সাদা ফার্নিচার মাসে এক দিন অবশ্যই ডিপ ক্লিন করতে হবে। ডিপ ক্লিনের ফর্মুলা ঘরে তৈরি করার নিয়ম বললেন এই বিশেষজ্ঞ। এর জন্য ২ ভাগ স্বাভাবিক পানি নিতে হবে আর এতে মিশাতে হবে ১ ভাগ সাদা ভিনেগার। এবার একটা নরম কাপড় দিয়ে আসবাব মুছে ফেলতে হবে।
তথ্য: অ্যাপার্টমেন্ট থেরাপি