নিজের নান্দনিকতায় সাজান ঘর

ছবি: পেকজেলসডটকম

সুন্দর, সাজানো বাসা। সবার কাছে একান্ত কাম্য। অনেকে অন্যের সাজানো–গোছানো দেখে ভাবে, যদি এভাবে আমিও সাজাতে পারতাম নিজের ঘর, যা দেখলেই অন্যেরও মনে হবে এভাবে সাজাতে। পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখা অন্দর চোখেরও আরাম, মনেরও শান্তি। অনেকেই হয়তো বলবে, তার চাই ছবির মতো বাড়ি। এটা কিন্তু ভুল ধারণা। আসলে প্রতিটি মানুষেরই সাজানো–গোছানোর রয়েছে স্বতন্ত্র ধারা। কে কীভাবে বাড়ি সাজাবে, তা একদিকে যেমন নির্ভর করে তার ব্যক্তিগত রুচির ওপর, অন্যদিকে তার শৌখিনতা আর চাহিদা অনুযায়ী।

ফুল সৌন্দর্য বাড়াবে, প্রশান্তি দেবে
ছবি: পেকজেলসডটকম

আপনি কীভাবে আপনার বাড়িকে সবার কাছে তুলে ধরতে চাইছেন, তা–ই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং বাড়ি যেমনই হোক, নিজের হাতে যত্ন ও আদরে সাজালেই আপনার হাসিতেই হেসে উঠবে। অনেকেরই ধারণা, ঘর সাজাতে বিশেষ কিছু সামগ্রী প্রয়োজন এবং তা হতে হবে বেশ দামি বা খুব কেতাদুরস্ত কোনো ডেকোরেটিভ পিস। এমন ধারণা একেবারেই ভুল। সবার প্রথমে প্রয়োজন রুচি ও নান্দনিকতা বোধ। আরও একটি বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা প্রয়োজন, রঙের বিন্যাস। কারণ কালার প্যালেট এ ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা পালন করে। রং এমনই একটি বিষয়, যা চাইলেই পালটে ফেলা সম্ভব নয়। তাই কিছুটা নিজের মতো করে আর কিছুটা নিজের ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে বাড়ি সাজান।

পরিপাটি সাজের মূলত কথা হলো সুন্দর করে থাকার অভ্যাসে গড়ে তোলা। প্রতিদিনের কাজের মধ্যে ঘর গুছিয়ে রাখাটাও যোগ করুন। তাহলেই হয়তো আলাদাভাবে বাড়ি সাজানোর কথা ভাবতে হবে না। সঙ্গে যোগ করতে পারেন কিছু কৌশল।
সেন্টার টেবিলে একটা ফ্লাওয়ার ভাস, খুবই পরিচিত একটি বিষয়। এই দৃশ্যপট বদলাতে আনুন প্রকৃতির ছোঁয়া। ভাসের বদলে একটি ছড়ানো পাত্র রেখে তাতে পানি দিয়ে ভাসিয়ে রাখতে পারেন নানা রঙের ফুল এবং ছোট ছোট মোম।

অন্দর সজ্জায় সহায়ক অনুষঙ্গ হতে পারে রঙিন বোতল
ছবি: পেকজেলসডটকম

রঙিন কাচের বোতল এখন খুবই সহজলভ্য। অথবা বাড়িতে থাকা পরিত্যক্ত কাচের বোতলও নিজের মতো রং করে নেওয়া যায়। এতে রাখতে পারেন ফুল। ঘরের কোণে সাজিয়ে রাখলেও সুন্দর দেখাবে। মোমবাতি বা স্পার্ক লাইট দিয়েও সাজানো যায়।
ঘুরতে যাঁরা ভালোবাসেন, নানা জায়গা থেকে স্যুভেনির সংগ্রহ করুন। এতে সহজেই নিজের পছন্দের প্রকাশ ঘটবে। পাওয়া যাবে আপনার সত্তার পরিচয়। তবে এ ক্ষেত্রে অ্যারেঞ্জমেন্টের প্রতি গুরুত্ব দিন।

গোছানো বা সাজানোর ক্ষেত্রে পুরো বাড়িতে সামঞ্জস্য রাখা জরুরি। তার মানে এই নয় যে একই ধরনের জিনিস কিনতে হবে। তবে প্রতিটা ডেকোরেটিভ পিসের যেকোনো একটা মিল থাকতে পারে। তা রং, আকার বা উপাদানে হতে পারে।

স্মৃতি জাগরুক থাকবে ছবিতে, সজ্জায় আনবে মাত্রা
ছবি: পেকজেলসডটকম

অনেকে পারিবারিকসহ নানা ধরনের ছবি দেয়ালে সাজান। এ ক্ষেত্রে একই ধাঁচের ফ্রেমিং করা যেতে পারে। অথবা ছোট ছোট ছবি একটা বড় ফ্রেমেও সাজানো যায়।
বাজারে নানা ধরনের ঘর সাজানোর ডেকোরেটিভ পিস পাওয়া যায়। কারুকার্য করা শো পিস, নানা ধরনের পেইন্টিং, ইনোভেটিভ ফোটো ফ্রেম ইত্যাদি। বাড়ি যদি পুরোনো ধাঁচের হয়, তবে একরঙা পুরোনো ঘড়িটার বদলে কনটেমপোরারি ধাঁচের ঘড়ি রাখতে পারেন। অথবা ঘরের রং যদি খুব হালকা হয়, সে ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা আনতে রঙিন একটি পেইন্টিং যথেষ্ট।

পুরোনো ফেলনা জিনিস দিয়েও ডেকোরেটিভ পিস বানানো সম্ভব। পুরোনো বোতল থেকে শুরু করে সিডি, কেটলি কিংবা প্লেট, সবই হতে পারে, তাতে দিন রঙের ছোঁয়া। দেখতে যেমন নান্দনিক হবে, তেমনই ঘরও সেজে উঠবে।

থাকতে পারে দু’চারটা স্যুভেনির পিস
ছবি: পেকজেলসডটকম

শুধু ঘর সাজালেই হবে না, সেগুলো পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখার দিকেও নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যাঁদের বাড়িতে ধুলোর রাজত্ব বেশি, তাঁরা খুব ছোট ডেকোরেটিভ পিসের বদলে বড় পিস রাখলে পরিষ্কার করতেও সুবিধে হবে।

ঘর সাজাতে একটি কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, অনেক বেশি শো পিস বা ডেকোরেটিভ পিসে ঘর ভরে ফেলবেন না। কারণ, বাড়ি তো আরামের জায়গা, তাকে অযথা জিনিসে ভরিয়ে তুললে চোখের এবং নিজের আরাম নষ্ট হবে। পরিমিতিবোধটা থাকতেই হবে, যা অন্যের অন্দর থেকে আপনার অন্দরকে আলাদা করবে।