সিজিপিএ কখনো জ্ঞানের পরিমাপক নয়

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) সমাবর্তনে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেয়েছেন অপসরা আহসান। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ছিদরাতুল মুনতাহা

অপসরা আহসান
ছবি: সংগৃহীত

স্বর্ণপদক পেলেন। কেমন লাগছে?

এই অনুভূতি আসলে বলে বোঝানো যাবে না। এটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি। খুব ভালো লাগে, যখন দেখি আমাদের পরিশ্রমের প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আমি মাত্র আমার জীবন শুরু করেছি। এখনো অনেক কিছু শিখতে, বুঝতে ও জয় করতে হবে। আমার বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী এবং যাঁরা আমার জীবনে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ; তাঁরা আমার এই সাফল্যে আমার থেকে বেশি খুশি। এটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছে।

আরও পড়ুন

প্রতি সেমিস্টারে ভালো রেজাল্ট ধরে রাখা তো সহজ বিষয় না। আপনার কি কোনো বিশেষ কৌশল ছিল?

এটা ঠিক যে প্রতি সেমিস্টারে ধারাবাহিকভাবে ভালো করা কঠিন। তবে আমার মনে হয় পড়াশোনায় নিয়মিত হলে এটা অনেক সহজ হয়ে যায়। এমন নয় যে আমাদের কোর্সের বিষয়বস্তু খুব বেশি কঠিন। তবে দিন শেষে আমি মনে করি আমার সফলতার সবকিছুই নিয়মিত প্রচেষ্টার ফল। একটি সমস্যার মুখোমুখি আমি প্রায়ই হয়েছি—আশপাশের অনেকেই ধরে নেয়, যেহেতু আমার ভালো সিজিপিএ আছে, সেহেতু আমি “সব জানি”। যা মোটেও সত্য নয়।

আমি মোটেও এমন কেউ নই। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, সিজিপিএ কখনো জ্ঞানের পরিমাপক নয়। বরং এটি ধারাবাহিকভাবে কঠোর পরিশ্রম করার ফল।

বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের কোন অভিজ্ঞতা আপনার সারা জীবন মনে থাকবে?

ছাত্রাবস্থায় আমি বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। স্নাতক করার সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কিছু ‘বিজনেস কেস কম্পিটিশন’–এ অংশগ্রহণ করেছি, যেগুলো আমাকে আলাদাভাবে পরিচিত করে। এ ছাড়াও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের উন্নতির জন্য যতটুকু সম্ভব অবদান রাখার চেষ্টা করেছি।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির হাত থেকে স্বর্ণপদক নিয়েছেন অপসরা
ছবি: সংগৃহীত

ক্যাম্পাস জীবন কেমন ছিল?

দারুণ। ২০১৭ সালে যখন স্নাতক শুরু করি, তখন শুধু পাস করতে চাইতাম। কিন্তু এখন আমার জীবনের একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বাংলাদেশের একটি সাধারণ পরিবারে বড় হওয়ার ফলে এমন কাউকে বিয়ে করতে চাইতাম, যার ছায়ায় আমি আরামে জীবন কাটাতে পারব। কিন্তু এখন আমি নিজেই কারও ছায়া হতে সক্ষম। স্বর্ণপদক পাওয়া আমার কাছে নিঃসন্দেহে অনেক বড় ব্যাপার।

কিন্তু আইইউবি আমাকে সবচেয়ে বেশি যেটা দিয়েছে তা হলো আত্মবিশ্বাস, স্বাধীনতা এবং আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ার সক্ষমতা। যেটা আমার মনে হয় বর্তমান বিশ্বে সব নারীর থাকা উচিত।

আপনার ছেলেবেলা কোথায় কেটেছে?

আমার বাবা যেহেতু সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন, সেহেতু আমার বেড়ে ওঠা সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে। তবে জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে। আমি বিএএফ শাহীন ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে 'ও' লেবেল এবং বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে 'এ' লেভেল করেছি।

এখন কী করছেন?

ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেটর হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে কর্মরত আছি।