পরিচালকের অফিস যেমন হবে

অফিসের অভ্যন্তরীণ নকশা সেই পদের সঙ্গে মানানসই হতে হবে
ছবি : কবির হোসেন

ডিরেক্টর বা পরিচালক একটি কোম্পানির অন্যতম শীর্ষ পদ। অফিসে তাঁর কক্ষটির অভ্যন্তরীণ নকশা সেই পদের সঙ্গে মানানসই হতে হবে। অফিসস্পেসের একটি বড় অংশ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কক্ষের জন্য নিবেদিত। কিছু অফিসে একটি সম্পূর্ণ ফ্লোর এমডির অফিসের জন্য বরাদ্দ থাকে, জানান অ্যারে আর্কিটেক্টসের প্রধান স্থপতি আল ইমরান। তিনি আরও জানান, অফিসের অভ্যন্তরীণ সজ্জা প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী হতে পারে।

পরিচালকের টেবিল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কক্ষের আয়তন খুব গুরুত্বপূর্ণ
ছবি : সাবিনা ইয়াসমিন

আসবাব কেমন হবে

পরিচালকের কক্ষের আসবাবের মধ্যে প্রথমেই আসে টেবিলের কথা। টেবিল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কক্ষের আয়তন খুব গুরুত্বপূর্ণ। টেবিলের সঙ্গে চেয়ারটিও হতে হবে মানানসই। এখন অনেক ধরনের আরামদায়ক চেয়ার পাওয়া যায়। চেয়ার এমন হওয়া উচিত যেন দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা যায়। সেই সঙ্গে দর্শনার্থীদের চেয়ারগুলোও হতে হবে অন্যান্য নকশার সঙ্গে মানানসই। অনেক সময় আগত অতিথিদের বসার জন্য প্রয়োজন হয় সোফা। সোফাটি হতে পারে কাঠের তৈরি, চামড়ার অথবা ভেলভেটে মোড়া। অনেক সময় পরিচালকদের অফিসে কিছু ব্যক্তিগত জায়গার প্রয়োজন হয়। কক্ষে জায়গা থাকলে এ ধরনের একটি ব্যক্তিগত স্থান তৈরি করতে পারেন। নকশায় কিছু হালকা আসবাব, দেয়ালে আয়নাসহ ছোট ক্যাবিনেট থাকতে পারে।

একটি শব্দরোধী কক্ষ তৈরি করুন

ম্যানেজিং ডিরেক্টরের অফিসে নানা কারণেই গোপনীয় মিটিং করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই কক্ষকে সাউন্ডপ্রুফ বা শব্দরোধী করে তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নকশা করার সময় সঠিক বায়ুপ্রবাহ ও প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।

অফিস ডিজাইনে উচ্চমানের লাইট বসানোর কথা মাথায় রাখতে হবে
ছবি : সাবিনা ইয়াসমিন

দেয়ালের রং নির্বাচন

পরিচালকের কক্ষের পরিবেশ হতে হবে আনুষ্ঠানিক। অফ হোয়াইট, ধূসর, নেভি ব্লু—এ ধরনের কক্ষের জন্য মানানসই। অনেক সময় নির্দিষ্ট একটি দেয়ালে প্রাধান্য সৃষ্টি করার জন্য বিপরীত কোনো রং করা যেতে পারে।

সঠিক আলোর ব্যবস্থা

অফিস ডিজাইনে উচ্চমানের লাইট বসানোর কথা মাথায় রাখতে হবে। একটি অফিসে বিভিন্ন ধরনের আলোর ব্যবস্থা থাকে, তবে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অফিসে এলইডি বা সিএফএল লাইটসহ সরাসরি ও আধা প্রত্যক্ষ উভয় আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে।

মেঝেও হতে হবে আরামদায়ক

পরিচালকের কক্ষের অন্য সবকিছুর সঙ্গে মেঝের দিকেও নজর দিতে হবে। সাধারণত খুব ভালো মানের টাইলস দেওয়া হয় এই কক্ষে। কার্পেট বা রাগস ব্যবহার করা যেতে পারে।

ডেস্কে থাকতে পারে এমন শৌখিন জিনিস
ছবি : সাবিনা ইয়াসমিন

অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য যোগ করুন

ফলস সিলিং, দেয়ালে প্যানেলিং ও টিভি ইউনিটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। স্নিগ্ধ ও সতেজ পরিবেশ তৈরির জন্য ঘরের কোনায় কিছু গাছ থাকতে পারে। কোনো দেয়ালে বড় একটি বা ছোট কয়েকটি পেইন্টিং ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। অনেকে দেয়ালে বিশেষ কোনো স্বীকৃতি বা ক্রেস্ট সাজিয়ে রাখতে চান। সে ক্ষেত্রে ঘরের অন্যান্য আসবাব এবং রঙের সঙ্গে মানিয়ে তাক করে নেওয়া যেতে পারে। এমডির অফিসের অভ্যন্তরীণ নকশা করার সময় গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিস সবচেয়ে বেশি মনে রাখা উচিত, তা হলো আনুষ্ঠানিক ভাব। পুরো ডিজাইনেই এটি বজায় রাখা উচিত। পরিচালকের কক্ষের আসবাবসহ প্রতিটি জিনিসে উচ্চমানের দীর্ঘস্থায়ী উপকরণ ব্যবহার করা উচিত। অবশ্য এটা প্রতিষ্ঠানের বাজেটের ওপর নির্ভর করে।

ইশো ফার্নিচারের প্রধান স্থপতি পিনাকপাণি সাহা জানান, জায়গা স্বল্পতার কারণে আজকাল সবাই স্লিম অ্যান্ড স্মার্ট অর্থাৎ হালকা নকশার আসবাব পছন্দ করছেন। পরিচালকের কক্ষের জন্য এক্সিকিউটিভ টেবিলটির আদর্শ দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ ঠিক রেখে ভারী ভাব কমিয়ে এনে অনেকটা হালকা নকশা করা হয়েছে ইশো ফার্নিচারে। সঙ্গ চেয়ারগুলোয় হেড রেস্ট দেওয়া থাকে। এ ছাড়া পরিচালকের কক্ষে ক্যাবিনেট, খোলা শেলফ থাকতে পারে বলে জানান তিনি। হাতিল, ইশো ফার্নিচারসহ বড় বড় আসবাবের দোকানে পেয়ে যাবেন কিস্তিতে অর্থাৎ ইএমআইতে কেনাকাটা করার সুবিধা।