ক্রিকেটের বিচিত্র ৫ আউট

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লেখা হলো টাইমড আউটের ঘটনা। তবে টাইমড আউটের নজির প্রথম হলেও বিভিন্ন সময় ঘটেছে কিছু বিচিত্র আউটের ঘটনা। এমনই ৫ ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছেন রাফিয়া আলম

কেভিন পিটারসেন
ছবি: রয়টার্স

হেলমেট খুলে হিট উইকেট

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের হেলমেটের ফিতা নিয়ে ক্রিকেট–দুনিয়ায় তোলপাড়। তবে একবার ব্যাটসম্যানের আস্ত হেলমেটখানাই কিন্তু খুলে পড়েছিল স্টাম্পের ওপর। ফলাফল? হিট উইকেট। বলছিলাম ২০০৭ সালের কথা। ওল্ড ট্রাফোর্ডে চলছে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ডোয়াইন ব্রাভোর বল সামলাতে গিয়ে ইংলিশ ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেন আউট হয়েছিলেন এভাবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ম্যাচটা জিতেছিল ইংল্যান্ডই। ৬০ রানের ব্যবধানে।

কুমার সাঙ্গাকারা
ছবি: সংগৃহীত

ব্যাট ছুটে গেল স্টাম্পের দিকে

শুধু হেলমেটের কারণেই নয়, হাত থেকে ছুটে যাওয়া ব্যাটের কারণেও হিট উইকেট হয়েছেন ব্যাটসম্যান। ২০০৯ সালে কমপ্যাক কাপের ফাইনাল ম্যাচে কুমার সাঙ্গাকারার হাত থেকে ব্যাট ছুটে গিয়ে আঘাত হেনেছিল স্টাম্প। ৩৩ রানে ইতি ঘটেছিল সাঙ্গাকারার সেই ইনিংসের। ৩২০ রানের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি শ্রীলঙ্কা দলের পক্ষে। ৪৬ রানে ম্যাচটা হেরেছিল তারা।

মাইকেল ক্লার্ক ও অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস
ছবি: সংগৃহীত

এ কেমন ক্যাচ!

২০০৬ সালে মেলবোর্নে ভিবি সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে অদ্ভুত এক ক্যাচ নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার তিলকরত্নে দিলশান। জিহান মুবারকের করা বলটা খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে দাঁড়ানো মাইকেল ক্লার্কের পায়ে লেগে বল চলে গেল ওয়াইড মিড-অনে দাঁড়িয়ে থাকা দিলশানের কাছে। দিলশানও লুফে নিলেন বলটা। সাইমন্ডস আউট। তবে হাসিখুশি সাইমন্ডস হাসিমুখেই মেনে নিয়েছিলেন নিজের দুর্ভাগ্য। আউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছিলেন ৬৬ রান। ১১৬ রানে ম্যাচটা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ? ‘অভাগা’ অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস।

শচীন টেন্ডুলকারের সেই আউট
ছবি: সংগৃহীত

শোল্ডার বিফোর উইকেট

১৯৯৯ সালে অ্যাডিলেড ওভালে শচীন টেন্ডুলকারের সেই শোল্ডার বিফোর উইকেটের ঘটনাটা হয়তো অনেকেরই মনে আছে। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং চলছে। স্টিভ ওয়াহ মাঠ সাজিয়েছেন বাউন্সারের জন্য। বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা। বাউন্সার এড়াতে বসে পড়লেন শচীন। কিন্তু বল খুব একটা বেশি উচ্চতায় উঠল তো না-ই, বরং আঘাত হানল শচীনের বাহুতে। এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করলেন ম্যাকগ্রা। আম্পায়ার ড্যারেল হারপার রায় দিলেন ম্যাকগ্রার পক্ষেই। ভারতের স্কোর দাঁড়াল ৪ উইকেটে ২৭। শেষমেশ ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস। ২৮৫ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচটা হেরেছিল তারা। তবে শচীনের সেই আউট নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে, আদৌ বলটা স্টাম্পে আঘাত হানত কি না, তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।

ভারসাম্য রাখতে পারেননি ব্যাটসম্যান ইনজামাম-উল-হক
ছবি: সংগৃহীত

আরেক হিট উইকেট

২০০৬ সালের আরেকটি ঘটনার কথা না বললেই নয়। এটিও অবশ্য হিট উইকেট। ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড সফরে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। লিডসে চলছে তৃতীয় টেস্ট, পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস। ইংলিশ বাঁহাতি অর্থোডক্স বোলার মন্টি পানেসারের বল সামলাতে গিয়ে ভারসাম্য রাখতে পারলেন না ব্যাটসম্যান ইনজামাম-উল-হক। উল্টে গিয়ে আঘাত হানলেন স্টাম্পে। ২৬ রানেই বিদায় নিতে হলো তাঁকে। সেই টেস্টে ইংল্যান্ডের কাছে ১৬৭ রানের ব্যবধানে হেরেছিল পাকিস্তান।

সূত্র: ইএসপিএনক্রিকইনফো