ঢাকায় কী চলছে এবং নতুন বইয়ের খবর

ঢাকায় এল দুবাইয়ের ‘ইলাফ’

তাইয়্যেবা তাবাসসুম

দুবাইয়ের ব্র্যান্ড ‘ইলাফ’এখন ঢাকায়। হোটেল শেরাটনের গ্র্যান্ড বলরুমে মধ্যপ্রাচ্যের আবহ আর সাজসজ্জায় জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডটির উদ্বোধন অনুষ্ঠান হলো ২৩ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের ফ্যাশনিস্তাদের কাছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রিমিয়াম নকশা ও শৈলীর পোশাকগুলো পৌঁছে দেওয়াই ‘ইলাফ’-এর লক্ষ্য।

ইলাফের পোশাকের ফ্রেবিক, সেলাই থেকে শুরু করে ডিজাইন—সবই দুবাই থেকে করা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ফ্যাশনসচেতন মানুষের মধ্যে আন্তর্জাতিক মান ও গুণসম্পন্ন জামাকাপড়ের একটি বাজার তৈরি হয়েছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের মডেস্ট ডিজাইনের পোশাকগুলোর নির্ভরযোগ্য তেমন কোনো জায়গা বাংলাদেশে ছিল না। বাংলাদেশে ‘ইলাফ আল দুবাই’-এর স্টোর উদ্বোধনের এটি একটি অন্যতম কারণ বলে জানান আহমেদ তুহিন রেজা ও তানজিলা এলমা দম্পতি। বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ‘হাউস অব আহমেদ’-এর এই দুই কর্ণধারের উদ্যোগেই বাংলাদেশে এসেছে ইলাফ।

তানজিলা এলমা বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেকেই হয়তো দেশে তেমন গুণগত মানের আবায়া, বোরকা, কাফতান, ম্যাক্সি বা ছেলেদের জুব্বা, তোপ না পেয়ে বিদেশ থেকে কিনে আনেন। তাঁদের জন্যই আমাদের ইলাফ ব্র্যান্ড।’ তানজিলা এলমা নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, ‘ইলাফের পোশাকের ফ্রেবিক, সেলাই থেকে শুরু করে ডিজাইন—সবই দুবাই থেকে করা। দুবাইয়ে নিজস্ব কারখানায় প্রশিক্ষিত দেশি-বিদেশি কারিগরদের নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা। আমাদের বাংলাদেশের মসলিনের ওপর করা কিছু কাজও বিদেশিরা খুব প্রশংসা করছেন। আমাদের কারিগরেরাও দুবাইয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কাজ করছেন। এখানে রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের অনেক বড় ব্যাপার রয়েছে।’

ইলাফ ব্র্যান্ডে আছে ছেলেদের পোশাকও
ছবি: সংগৃহীত

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। উপস্থিত ছিলেন বিদেশি রাষ্ট্রদূত, দেশি-বিদেশি শিল্পপতি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল ইলাফ আল দুবাইয়ের পোশাকে জনপ্রিয় মডেলদের ফ্যাশন শো। চার শতাধিক অতিথির উপস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের মিউজিক ও সুবাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত ফ্যাশন শোয়ের নির্দেশক ছিলেন আজরা মাহমুদ। জান্নাতুল পিয়া, শিরিন আক্তার শিলা, মিথিলা, জেসিকাসহ প্রায় ৩০ জন দেশি-বিদেশি মডেল ইলাফ আল দুবাইয়ের দৈনন্দিন ও পার্টিতে পরার উপযোগী আবায়া, বোরকা, কাফতান, শার্ট-স্কার্ট, প্রিন্ট শার্ট, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, জুব্বা, স্কার্ফসহ মধ্যপ্রাচ্য ধাঁচের পোশাকে রানওয়ে আলোকিত করেন। অনুষ্ঠানের কো-স্পনসর ছিল এরাবিকা ও আল হারামাইন। ফুটওয়্যার স্পনসর ছিল এপেক্স এবং মেকআপ পার্টনার প্রাইভ বাই নাহিলা হেদায়েত।বনানীর ১২ নম্বর সড়কের ৪৪ নম্বর বাড়িতে ইলাফ আল দুবাইয়ের স্থায়ী আউটলেট।

রেসিপির বই

পার্ল থেকে প্রকাশিত বইটি রকমারিতেও পাওয়া যাবে
ছবি: সংগৃহীত

রন্ধনশিল্পী দিল আফরোজ সাইদার ১০১টি রেসিপি নিয়ে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে সাইদাজ ড্রিংকস রেসিপি। এই বইয়ে আছে বিভিন্ন ধরনের পানীয় যেমন চা, কফি, জুস, স্মুদি ও মিল্কশেকের রেসিপি। এর মধ্যে রোজায় খাওয়া যাবে, এমন ৩০টি রেসিপিও আছে। পার্ল থেকে প্রকাশিত বইটি রকমারিতেও পাওয়া যাবে।

আদি জামদানির নকশা নিয়ে বই

আদি জামদানি নকশা বইটি পাওয়া যাবে সেবা নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে
ছবি: সংগৃহীত

২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সিনেপ্লেক্স অডিটরিয়ামে হয়ে গেল আদি জামদানি নকশা বইয়ের প্রকাশনা ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক ও সাহিত্যিক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের প্রধান পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকারী আইউব আলী।

আদি জামদানি নকশা বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ছবি: সংগৃহীত

বইটি তৈরির নেপথ্য গল্প বলেন বইয়ের সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের সভাপতি চন্দ্রশেখর সাহা। বইয়ের প্রকাশনাসহ জামদানি প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত জানান সেবা নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সাইদা রোকসানা খান। বইটিতে জামদানির পুরোনো নকশা এবং শাড়ির লে-আউট ও পুরোনো নকশায় সাজানো শাড়ির নতুন লে আউট দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জামদানির বর্তমান বাজার, কলকা নকশা, জামদানির বিবর্তন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে সেবা নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। গবেষণা ও ডিজাইনের কাজ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদ। সেবা নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে বইটি পাওয়া যাবে।

ফ্যাশন সামিট

সামিট আয়োজনের একটি অংশ
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আলোকি কনভেনশন হলে ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো ‘এপেক্স বাংলাদেশ ফ্যাশন লিগ্যাসি-সামিট এবং শো’। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ ফ্যাশন লিগ্যাসি। সামিটে নানা আলোচনায় উঠে আসে সাম্প্রতিক সময়ে ফ্যাশনশিল্পের নানামুখী চ্যালেঞ্জ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে ফ্যাশন বাজারজাতকরণে বিবর্তন এবং দেশের সম্ভাবনাময় রূপচর্চাশিল্পের হালচাল; পাশাপাশি ছিল ফ্যাশন শো। তুলে ধরা হয় এপেক্সের সাব-ব্র্যান্ড মুচি, নিনো রসি, ভেঞ্চুরিনি, ম্যাভেরিক, যাটারিয়ার ঈদ সংগ্রহ। মঞ্চে চমন চৌধুরী, সানায়া কুচোর, লুসো বেলা এবং আনযারা ব্র্যান্ডের সংগ্রহও প্রদর্শিত হয়।

সামিটে আলোচনায় উঠে আসে নানা বিষয়
ছবি: সংগৃহীত

আয়োজনটি সম্পর্কে বাংলাদেশ ফ্যাশন লিগ্যাসির প্রতিষ্ঠাতা আশিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ফ্যাশনকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দিতে বাইরের ফ্যাশন ডিজাইনারদের সঙ্গে শক্ত নেটওয়ার্ক বা সম্পর্ক তৈরি করা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাবে বাংলাদেশ ফ্যাশন লিগ্যাসি।’

অনুষ্ঠানটির আয়োজন সহযোগী ছিল সেরা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। মেকআপ পার্টনার ছিল অরা বিউটি লাউঞ্জ, মিডিয়া পার্টনার ‘হাল ফ্যাশন’, আতিথেয়তায় সহায়তা করেছে হোটেল রেনেসাঁ গুলশান ঢাকা।

বাইরের ফ্যাশন ডিজাইনারদের সঙ্গে শক্ত নেটওয়ার্ক বা সম্পর্ক তৈরি করার জন্যই আয়োজন করা হয় এই সামিটের
ছবি: সংগৃহীত

দেশ-বিদেশের ফ্যাশন উদ্যোক্তা, ভোক্তা ও অনুরাগীদের একত্র করতে সম্প্রতি যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ ফ্যাশন লিগ্যাসি।