নবজাতকেরও কি ডেঙ্গু হয়

নবজাতকও ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেছবি: পেক্সেলস

যেকোনো বয়সের শিশুদের মতো নবজাতকও (জন্ম থেকে জীবনের প্রথম ২৮ দিন) ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে এটি বিরল।

দুভাবে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব। প্রথমত, গর্ভকালের শেষের দিকে মা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে ডেঙ্গু ভাইরাস গর্ভের ফুল/প্লাসেন্টার (রক্তনালির) মাধ্যমে পেটে থাকা শিশুকে বা জন্মের সময় নবজাতককে আক্রমণ করতে পারে। দ্বিতীয়ত, জন্মের পর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মশা সরাসরি নবজাতককে কামড়ালে সে আক্রান্ত হতে পারে।

লক্ষণ ও শনাক্তের উপায়

নবজাতক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তার লক্ষণগুলো অনেকটা নবজাতকের অন্য সংক্রমণের লক্ষণগুলোর মতোই বলে অনেক সময় আলাদা করা মুশকিল। যেমন জ্বর, কখনো যা উচ্চমাত্রার, শরীরে র‍্যাশ, মায়ের দুধ খেতে না চাওয়া ইত্যাদি। অনেক সময় বমি করতে থাকে, খুবই কান্নাকাটি করে, থামানো মুশকিল হয়, আবার কখনো নেতিয়ে পড়তে পারে। কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট এমনকি মাড়ি, নাক দিয়ে রক্তপাতও হতে পারে।

তবে ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য একটা বিষয় বিবেচনায় আনা জরুরি। যেমন চারদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, গর্ভবতী মা জ্বরে বা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি না। এ রকম প্রেক্ষাপটে নবজাতকের উল্লিখিত যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে তার ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি মাথায় রাখতেই হবে। এ জন্য রক্তের অন্যান্য পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গুর জন্য নির্ধারিত রক্ত পরীক্ষাগুলো যেমন সিবিসি, ডেঙ্গু এনএস১, ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি, লিভারের এসজিপিটি, প্রথ্রম্বিন টাইম করে রোগ শনাক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুন

সতর্কতা ও চিকিৎসা

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো নবজাতকের নিচের যেকোনো একটা লক্ষণই সতর্কতা সংকেত। এর মধ্যে রয়েছে পেট ফুলে যাওয়া, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, মায়ের দুধ খেতে না পারা, নেতিয়ে পড়া, বারবার বমি হওয়া, নাক-মুখ বা মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত ইত্যাদি।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নবজাতককে বারবার মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের। জ্বরের তীব্রতা বেশি হলে নির্দিষ্ট মাত্রায় প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বর কমাতে হবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি হাসপাতালে রেখে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক বা নার্সের তত্ত্বাবধানে রাখা যায়। এতে শিশুর কোনো জটিলতা তৈরি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আর এটা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে মা-বাবাকে অবশ্যই উল্লিখিত সতর্কতা সংকেতগুলো ভালোভাবে মনে রাখতে হবে। এগুলোর কোনো একটা দেখা দিলেই দেরি না করে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করে নিবিড় তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

আরও পড়ুন