রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবে বিজ্ঞানপ্রেমীদের জোট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের সদস্যদের একাংশছবি: সংগৃহীত

এক দশক আগেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিজ্ঞানভিত্তিক সংগঠন খুব একটা ছিল না। সারা পৃথিবীতে যখন প্রযুক্তির জয়জয়কার, তখন ক্যাম্পাসে জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা শুধু একাডেমিক পড়ালেখায় আটকে থাকবে, তা কী করে হয়! এগিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের ছাত্র জহুরুল ইসলাম। ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি একঝাঁক উদ্যোগী তরুণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব।

তবে বিজ্ঞান ক্লাবের কার্যক্রম এখন আর শুধু বিজ্ঞানেই সীমাবদ্ধ নেই। বিভিন্ন আত্মোন্নয়ন ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ, যেমন বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ, পরিবেশসচেতনতা, ক্যারিয়ারবিষয়ক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি নানা কার্যক্রমের সঙ্গেই সংগঠনটি এখন যুক্ত। জাতীয় বিজ্ঞান মেলা ও বইমেলা আয়োজন, স্কুল-কলেজে সায়েন্স শো, সমসাময়িক বিষয়ে কর্মশালা, স্যুভেনির ও ম্যাগাজিন প্রকাশনা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালনের মতো কাজগুলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব প্রতিবছরই করে।

আরও পড়ুন

ইউথ আপস্কিল নেটওয়ার্ক ইউনেটের সঙ্গে সম্প্রতি যেমনএকটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে সায়েন্স ক্লাব। এর মাধ্যমে সংগঠনের সদস্যরা ক্যারিয়ার–সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, নির্দেশনা ও বিভিন্ন সুবিধা ইউনেট থেকে নিতে পারবেন। এ ছাড়া গত বছর ক্লাবটি আয়োজন করে ‘আরইউএসসি পরিবেশ সপ্তাহ ২০২৪’। এর আওতায় ক্যাম্পাসের পরিবহন চত্বর, শহীদ মিনার, বিজ্ঞান ভবনসহ মোট ১৩টি স্থানে বসানো হয় ইকো-স্মার্ট ডাস্টবিন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি মাসুদ বলেন, ‘ইকো-স্মার্ট ডাস্টবিনে কাচ, পচনশীল বস্তু ও প্লাস্টিক—তিন ধরনের বর্জ্য ফেলার আলাদা আলাদা জায়গা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও রাজশাহীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজে আমরা এই ডাস্টবিন স্থাপন করব।’

২০১৮ সালে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর থেকে সরকারি নিবন্ধন পায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব। ২০২৩ সালে ওয়াইসিআই লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডে ‘বেস্ট ক্লাব অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের বিশেষ অনুদান, টেলিস্কোপ উপহার ছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিবছর ক্লাবটি অনুদান পায় এক লাখ টাকা। তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে পাঁচ লাখ টাকার প্রকল্প এবং সুরেন্দ্রনাথ দাশ ও ভজসুন্দরি দাশ মেমোরিয়াল ফান্ড থেকেও বড় অঙ্কের অনুদান পায় রাবি সায়েন্স ক্লাব।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট্ট গণ্ডি পেরিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে সায়েন্স ক্লাব। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিধি হিসেবে ক্লাবে যুক্ত হচ্ছে। ক্লাবের সদস্যরাও তাদের নিয়ে নতুন নতুন পরিকল্পনা করছেন। বিজ্ঞানের আলো দেশের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে চান ক্লাবের সদস্যরা।