সামাজিক মাধ্যমে মৃত্যুর খবর যেভাবে প্রকাশ করবেন

পরিবারে কারও মৃত্যু হলে দ্রুত যোগাযোগ এবং সময় বাঁচানোর জন্য খবরটা অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান। খবর পোস্ট করা থেকে শুরু করে সমবেদনা জানানোর বিষয়গুলোতে কিছু আদবকেতা অনুসরণ করা ভালো। এতে শোকার্ত ব্যক্তি শোক মোকাবিলা করার সময় পাবেন। নিজেদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝিও কম হবে। 

শোকার্ত ব্যক্তি শোক মোকাবিলা করার সময়
ছবি: পেক্সেলস

পোস্ট করা

চেনা–জানা কেউ মারা গেলে অনেকেই সেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথমে জানাতে চান। এ ধরনের ঘোষণা মৃতের পরিবার বা পরিবারের খুব কাছের কারও ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। কখন এবং কীভাবে পোস্ট করে জানানো হবে, সেই অধিকার তাঁদের দিলেই ভালো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ হয় দ্রুত, নেটওয়ার্কও বড়। মৃত্যুর পর থাকে নানা ব্যবস্থাপনা। একই কথা বারবার ফোনে বলাটাও যেন ক্লান্তকর হয়ে ওঠে এই সময়। জরুরি কাজগুলোও বাধাগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া শোক মোকাবিলা করার জন্য একটা সময়ও দরকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যুর সংবাদ এবং পরবর্তী ব্যবস্থাপনার কথা জানিয়ে দিলে সময় এবং শক্তি দুটিই যথাযথভাবে ব্যবহার করা যাবে। তবে পরিবারের বাইরে কেউ কিছু জানাতে চাইলে সেটা তাঁদের জিজ্ঞেস করে নিন।        

সঠিক তথ্য

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যুর খবর পোস্ট করার সময় তথ্য সঠিক কি না, নিশ্চিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভুল তথ্যের কারণে তৈরি হয় ভুল–বোঝাবুঝি। পাশাপাশি মৃত্যুর খবর শুনে অনেকে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আগবাড়িয়ে কথা না বলাই ভালো। যিনি মারা গেছেন, তাঁর নিকটাত্মীয়রাই সিদ্ধান্ত নিক, কার কতটুকু জানা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন

সাড়া দেওয়া

যে যোগাযোগমাধ্যমে খবরটি জেনেছেন বা জানানো হয়েছে, সেই মাধ্যমেই ফিরতি জবাব দিন। অনলাইনে সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন, কিন্তু ফোন বা খুদে বার্তা পাঠানোর জন্য তাড়াহুড়া করবেন না। ব্যতিক্রমভাবেও সাড়া দিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, শিশুদের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে অথবা শহরের বাইরের আত্মীয়দের আতিথেয়তা দিয়ে সাহায্য করার প্রস্তাব দিতে পারেন।

সংবেদনশীল তথ্য পোস্ট করার সময় সেটিংস ঠিক করে নিন
ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন প্রোফাইলটির কী হবে

যিনি মারা গেছেন, পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর অনলাইন প্রোফাইলটির কী হবে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কখনো কখনো মৃত ব্যক্তির প্রোফাইল মুছে ফেলা হয়, কখনো কখনো পৃষ্ঠাটি সংরক্ষণ করা হয়। এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরিই পরিবারের ওপর নির্ভর করবে।

আরও পড়ুন

ছোটখাটো কথাবার্তা এড়িয়ে চলুন

সমর্থন জানাতে গিয়ে অনেক সময় প্রয়োজন নেই, এমন কথাও অনেকে বলেন। ‘যা হয়েছে ভালো হয়েছে, সে এখন ভালো জায়গায় আছে’, এমন আলগা কথাবার্তা এড়িয়ে চলুন। দীর্ঘ জীবন কাটিয়েছেন, এমন বলাটাও হয়তো পরিবারের ঘনিষ্ঠদের ভালো না–ও লাগতে পারে। কারণ, পরিবার হয়তো মনে করতে পারে, এটি যথেষ্ট দীর্ঘ ছিল না।

সেটিংস বুঝে নিন

কোনো সংবেদনশীল তথ্য পোস্ট করার সময়, শেয়ার করার সময় অথবা মন্তব্য করার সময়, যেমন মৃত্যুর সময় নিশ্চিত করুন যে কে কে এটি দেখতে পাবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গোপনীয়তার সেটিংস আলাদা। সেট করে দিলে নির্দিষ্ট পোস্ট অনেকেই দেখতে পাবেন না। আপনি যদি ইনস্টাগ্রামে কোনো পোস্ট শেয়ার করার সময় ফেসবুকের সঙ্গে সংযুক্ত করেন, তাহলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ফেসবুকেও চলে যাবে। কীভাবে তথ্য তুলে ধরতে চান, সেটা পোস্ট করার আগেই চিন্তা করে নিতে হবে।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুন