ভালোবাসা দিবসের আগেই আজ ‘ভ্যালেন্টিসমাস দিবস’, জানেন তো দিবসটি সম্পর্কে?

মডেল: তিথি ও টুটুল
ছবি: সুমন ইউসুফ

‘বেশির ভাগ খ্রিষ্টমাসেই আমার প্রেম হয়েছে। প্রেমে পড়েছি আমি।’

একটি লেখায় সংগীতশিল্পী-অভিনেতা অঞ্জন দত্ত লিখেছিলেন। তার মানে ক্রিসমাসের সঙ্গে প্রেমের যোগ আছে। থাকবে নাই–বা কেন! ক্রিসমাস তো প্রেমের কথাই বলে—মানবপ্রেম ও স্রষ্টাপ্রেম। ফলে সংগত কারণেই এর সঙ্গে সম্পর্ক আছে ভ্যালেন্টাইন দিবসেরও। এই দিনে ভালোবাসাবাসিতে মেতে ওঠে পৃথিবীর প্রেমিক যুগল। ভালোবাসার লাল রঙে ভরে ওঠে চারপাশ। ওদিকে ক্রিসমাসের প্রতীকী রংও লাল। কেবল তা-ই নয়, ক্রিসমাস ও ভ্যালেন্টাইন—দুইয়ের মধ্যে আছে আরও দারুণ কিছু মিল। দুটিরই উৎসস্থল প্রাচীন রোম। দুটি উৎসবের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দুজন সেন্টের নাম—সেন্ট নিকোলাস ও সেন্ট ভ্যালেন্টাইন।

তবে এরিন হারম্যানের মাথায় বোধ হয় এত কিছু ছিল না। ভদ্রমহিলার বাবা ডুয়াইন হারম্যান তখন খুব অসুস্থ। তখন বলতে ২০১৮ সালের শেষ দিক। দিন দিন ডুয়াইনের শরীর আরও খারাপ হচ্ছে। পরিবারের সবাই খুব চিন্তিত। এরই মধ্যে চলে এল বড়দিন। স্বাভাবিকভাবেই কোনো আয়োজন হলো না। উৎসব উদ্‌যাপনের তো প্রশ্নই আসে না। বাক্সবন্দী উপহার খুলেও দেখা হলো না। তাঁরা যে উপহার কিনেছিলেন, তা–ও কাউকে দেওয়া হলো না। খুবই বিবর্ণ, বিষণ্নভাবে চলে গেল সেই ক্রিসমাস।

আরও পড়ুন
আজ সেই ১০ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টিসমাস দিবস
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মারা গেলেন এরিনের বাবা। দেখতে দেখতে ফেব্রুয়ারিও চলে এল। দোরগোড়ায় ভ্যালেন্টাইন দিবস। আচ্ছা, আমাদের পালন করতে না পারা ক্রিসমাস উৎসব আর আসন্ন ভ্যালেন্টাইন উৎসব—দুটিকে একসঙ্গে মিলিয়ে কোনো একদিন পালন করা যায় না! ভাবলেন এরিন। যে–ই ভাবা সে–ই কাজ। ভ্যালেন্টাইন দিবস ও ক্রিসমাসের মাঝামাঝি একটি দিন বাছা হলো—১০ ফেব্রুয়ারি। দুটি শব্দের প্রথমাংশ ও শেষাংশ মিলিয়ে নামকরণ করা হলো ‘ভ্যালেন্টিসমাস’। আপাতত সে বছর দিনটিকে পারিবারিকভাবেই পালন করলেন তাঁরা। কিন্তু এমন একটি দারুণ দিন, উদ্‌যাপনের এমন সুন্দর উপলক্ষ কি আর চাপা পড়ে থাকে! ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ল আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। হালে অন্যান্য মহাদেশের কিছু দেশেও এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

আজ সেই ১০ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টিসমাস দিবস। সর্বপ্রেম ও ব্যক্তিপ্রেমের অপূর্ব মিশেলে চালু হওয়া এই দিনটি কিন্তু পালন করা যেতে পারে। পরিবারের সবাই মিলে সুন্দর সময় কাটাতে পারেন। কিংবা প্রিয় মানুষকে নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন রাস্তায়। একসঙ্গে ঘুরে দেখতে পারেন বৈভবের বিপরীতে বাস করা মানুষের অসহায়ত্ব। তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। যেতে পারেন হাসপাতালে। কোনো রোগীকে রক্ত দান করতে পারেন। রোগগ্রস্ত মানুষের পাশে বসে তাঁকে সাহসের কথা বলতে পারেন। তবেই না প্রেম সুন্দর, জীবন সুন্দর!

ন্যাশনাল টুডে ডটকম অবলম্বনে