সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন? জেনে নিন দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ৭টি স্মার্ট কৌশল
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আমরা প্রায়শই ভুগি সিদ্ধান্তহীনতায়। এটা নাকি ওটার দোলাচলে পার হয়ে যায় অনেকটা সময়। কোনো কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতা আমাদের এতটাই ভোগায় যে অন্যান্য কাজেও এর প্রভাব পড়তে থাকে। চলুন জেনে নিই, কীভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন এমন ৭টি পদ্ধতির কথা।
১. অপশন কমাতে থাকুন
হাতে যত বেশি অপশন থাকে, আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া তত কঠিন হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটা কার্যকরী পদ্ধতি হতে পারে এক এক করে হাতে থাকা অপশন কমানো। অফিসে যাওয়ার আগে কোন শার্টটা পরবেন, কিংবা রাতে কী রান্না করবেন—এ ধরনের সিদ্ধান্তে জীবনে খুব একটা প্রভাব পড়ে না। তাই এগুলোতে সময় নষ্ট করবেন না।
২. ব্যবহার করুন ১০-১০-১০ কৌশল
যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন, তবে ভবিষ্যতে এটি কী প্রভাব ফেলবে এ সম্পর্কে ভাবুন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভাবুন এই সিদ্ধান্ত আপনার জীবনে ১০ মিনিট, ১০ দিন পর, ১০ মাস বা ১০ বছর পর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে যে ফলাফল আসবে তাতে আপনি খুশি থাকবেন কি না। একটা ফোন কেনার ১০ মাস পর পর্যন্ত আপনি যদি খুশি থাকেন, তাহলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এটাই যথেষ্ট। আবার বাড়ি কেনা বা দেশের বাইরে চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভাবুন আপনি ১০ বছর পর আপনার এই সিদ্ধান্তে খুশি থাকবেন কি না।
৩. ভালো ও খারাপ দিক আলাদা করুন
সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি কার্যকর পদ্ধতি এর ভালো ও খারাপ দিক তুলনা করা। একটি কাগজ নিন। মাঝ বরাবর দাগ টানুন। এক পাশে লিখুন ভালো দিক, অপর পাশে খারাপ দিক। একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে ভালো ও খারাপ কী হতে পারে তা নিয়ে ভাবুন, সেগুলো লিখুন। যদি খারাপের দিকে পাল্লা ভারী হয়, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৪. নিজের মনের কথা শুনুন
যখন দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন, তখন নিজের অভিজ্ঞতা ও অন্তর্দৃষ্টি কাজে লাগান। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে নিজের মনের কথা শুনুন। আপনার যদি মনে হয় একটি বিকল্প অন্যগুলোর চেয়ে ভালো, তাহলে এই সিদ্ধান্তেই অটল থাকুন।
৫. দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হলে হাতে থাকা তথ্য যাচাই করুন
অনেক ক্ষেত্রে কঠিন সিদ্ধান্তও খুব তাড়াতাড়ি নিতে হয়। তখন নতুন তথ্য সংগ্রহ করার পরিবর্তে হাতে থাকা তথ্যগুলোর দিকে নজর দিন। কখনো কখনো আমাদের হাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যথেষ্ট তথ্য থাকে, আমরা সেগুলোর দিকে নজর দিই না। ফলে সিদ্ধান্ত নিতে সময় ব্যয় হয়, অস্থিরতা কাজ করে।
৬. অতীতে নেওয়া সিদ্ধান্তের ফল বিশ্লেষণ করুন
আপনি যদি অতীতে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যার ফল ইতিবাচক ছিল, তবে ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারেন। তবে ফলাফল খুব একটা ভালো না হলে সেই সিদ্ধান্তের প্রভাব বিশ্লেষণ করুন এবং ভুল থেকে শিক্ষা নিন।
৭. অন্যদের সঙ্গে কথা বলুন
কখনো আমরা এমন পরিস্থিতিতে পড়ি যখন নিজ থেকে কিছু আর চিন্তা করতে পারি না। সবকিছু ধোঁয়াশা লাগে। চিন্তা করার ক্ষমতা, বুদ্ধি গুলিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে থাকলে আপনার সমস্যাটি নিয়ে পরিবার, বন্ধু বা সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন। তাঁদের মতামত নিন। আপনি যদি এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন যা সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা নেই, তবে অভিজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন, তাঁদের পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফোর্বস