১৯৪৮ সালের শুরুতেই ভাষার প্রশ্নে বাঙালি জনগোষ্ঠীর শিক্ষিত অংশ সোচ্চার হয়ে ওঠে। পূর্ব বাংলা কংগ্রেস পার্টির সদস্য কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সে বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনে উর্দু ও ইংরেজির সঙ্গে বাংলাকেও অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহারের দাবি উত্থাপন করেন। এ নিয়ে বেশ হট্টগোল হয়ে যায়। এরই মধ্যে তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের এক যৌথ সভায় ১১ মার্চ সাধারণ ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অত্যন্ত সফল ও সর্বাত্মকভাবে পালিত হয় এ কর্মসূচি। চলমান ধর্মঘট-হরতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুল হক, কাজী গোলাম মাহবুব, শওকত আলী, অলি আহাদসহ বেশ কজন ছাত্রনেতাকে। আন্দোলনের বর্ণনা পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়েও। তিনি লেখেন, ‘১১ মার্চ ভোরবেলা শত শত ছাত্রকর্মী ইডেন বিল্ডিং, জেনারেল পোস্ট অফিস ও অন্যান্য জায়গায় পিকেটিং শুরু করে।’
যাহোক, ছাত্রনেতাদের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। অন্য দাবিদাওয়াসহ বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে আন্দোলরত ছাত্রদের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে বাধ্য হয় তৎকালীন সরকার। ১৫ মার্চ বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়।
১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের এ ঘটনার পরের বছর, তথা ১৯৪৯ সালে প্রথমবারের মতো দিনটি ভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির চূড়ান্ত আন্দোলনের আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১৯৫১ সাল পর্যন্ত দিনটি পালিত হতো।