১০ কোটি টাকায় বিক্রি হলো ১১৫ বছর বয়সী মোটরসাইকেল
মোটরসাইকেলপ্রেমীদের কাছে হার্লি–ডেভিডসন মানেই চোখ চকচক। মোটরসাইকেল ভালোবাসেন আর হার্লি–ডেভিডসনের বাহনে চড়ার স্বপ্ন দেখেননি, এমন লোকের সংখ্যা হাতে গুনে শেষ করা যাবে। বিশ্বখ্যাত মার্কিন মোটরসাইকেল নির্মাতা কোম্পানি হার্লি–ডেভিডসনের ১১৫ বছরের পুরোনো একটা মোটরসাইকেল নিলামে উঠেছিল গত মাসের শেষ দিকে। আর তা বিক্রি হয়েছে রেকর্ড ১০ কোটি টাকায়!
গত ২৮ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে নিলামে উঠেছিল মোটরসাইকেলটি। সেখানেই বিক্রি হয়েছে রেকর্ড ৯ লাখ ৩৫ হাজার ডলারে। ফলে ইতিহাসের সবচেয়ে দামি বাইক এখন হার্লি–ডেভিডসনের ওই ‘স্ট্র্যাপ ট্যাংক’। বাইকটির ফুয়েল ও অয়েল ট্যাংক নিকেল প্লেটেড স্টিলের ব্যান্ড দিয়ে মোড়ানো বলে সেটার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্ট্র্যাপ ট্যাংক’
হার্লি–ডেভিডসনের স্ট্র্যাপ ট্যাংক সিরিজের প্রথম দিককার মোটরসাইকেল এটা। ১৯০৮ সালে হার্লি-ডেভিডসন মোট ৪৫০টি মোটরসাইকেল তৈরি করেছিল। ধারণা করা হয়, এই মডেলের বাইক তৈরি করা হয়েছিল মাত্র ১২টি। বুঝতেইও পারছেন, ঠিক কতটা বিরল মডেলের বাইক এটা। এই মডেলের টিকে থাকা বাইকগুলো বেশির ভাগেরই আসল যন্ত্রাংশ বদলে ফেলা হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম এই নিলামে ওঠা বাইকটি, যার বেশির ভাগ যন্ত্রাংশ আজও অক্ষত। আর এতেই অনন্য হয়ে উঠেছে সেটা।
কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, গোটা দুনিয়ায় ‘মেকাম অকশনস’–এর নাম সুবিদিত। বাহন নিয়ে নিলাম ডাকে তারা। ওদের মোটরসাইকেল অংশের ব্যবস্থাপক গ্রেগ আর্নল্ড বলেন, ‘আমরা বাইকটির ভালো প্রচারণা চালিয়েছিলাম। আর হার্লি-ডেভিডসন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড। তাই আমরা ধারণা করেছিলাম, নিলামে বাইকটির ভালো দাম পাব। কিন্তু রেকর্ড দামে বিক্রি হতে দেখে আমরাও অবাক হয়েছি।’
আর্নল্ড আরও জানান, এই মোটরসাইকেলের প্রায় সব যন্ত্রাংশ এখনো অক্ষত রয়েছে। যেমন ট্যাংক, চাকা, ইঞ্জিন, বেল্ট পুলি, সিট কভার এবং মাফলার স্লিভ ইত্যাদি। সংস্কার করা হলেও বদলে ফেলা হয়নি বাইকের কোনো অংশ। যে কারণে অন্যান্য বাইকের তুলনায় সবার নজর ছিল এর দিকেই।
১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উইন্সকনসিন রাজ্যের একটা গোয়ালঘর থেকে ডেভিড উইলেইন নামের এক ব্যক্তি বাইকটা অক্ষত অবস্থায় আবিষ্কার করেন। পরবর্তী ৬৬ বছর তাঁর মালিকানায় ছিল বাইকটা।
এরপর ইন্ডিয়ানার ফোর্ট ওয়েইন শহরের পল ফ্রিহিল অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করেন বাইকটা। শেষ ২০১৫ সালে নিলামে উঠেছিল ১৯০৭ হার্লি–ডেভিডসন স্ট্র্যাপ ট্যাংক মডেলের একটা বাইক। অসংরক্ষিত সেই বাইক বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৮ কোটি টাকায়।