কমিউনিকেশন স্কিল রপ্ত করার ৩ বই, অ্যাপ ও কোর্স

প্রতিযোগিতা যত বাড়ছে, তত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে যোগাযোগের দক্ষতা। ডিগ্রি আছে, ভালো ফল আছে, তবু কেবল এই দক্ষতার অভাবে অনেকে পিছিয়ে পড়ছেন। কীভাবে ‘কমিউনিকেশন স্কিল’ বা যোগাযোগের দক্ষতা রপ্ত করবেন? এখানে থাকল সহায়ক ৩টি বই, অ্যাপ ও কোর্সের খোঁজ।

বই থেকে শেখা

১. এইচবিআর’স টেন মাস্ট রিডস অন কমিউনিকেশন

হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউয়ের (এইচবিআর) এই সংকলনটি বিশেষভাবে পেশাদার কর্মীদের জন্য তৈরি। এতে বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন গবেষণা ও কৌশল একত্র করে প্রকাশ করা হয়েছে।

এইচবিআর’স টেন মাস্ট রিডস অন কমিউনিকেশন

বইটি পড়লে কঠিন পরিস্থিতিতে আলাপ–আলোচনা নিষ্পত্তির (নেগোসিয়েশন) কৌশল শেখা যাবে। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে কীভাবে আলোচনা সফলভাবে শেষ করা যায়, কীভাবে নিজেকে আরও বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা যায়, এসবও জানতে পারবেন।

২. টেড টকস: দ্য অফিশিয়াল টেড গাইড টু পাবলিক স্পিকিং

যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা—জনসমক্ষে কথা বলা বা পাবলিক স্পিকিং। অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতার প্ল্যাটফর্ম ‘টেড টকস’ সারা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়। এ বইটি লিখেছেন ‘টেড’-এর প্রধান ক্রিস অ্যান্ডারসন।

টেড টকস: দ্য অফিশিয়াল টেড গাইড টু পাবলিক স্পিকিং

তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে কার্যকর যোগাযোগের নানা কৌশল শিখিয়েছেন। কেন আমাদের যোগাযোগগুলো ব্যর্থ হয়, বইটি পড়লে তা-ও জানতে পারবেন।

আরও পড়ুন

৩. টকিং টু স্ট্রেঞ্জারস: হোয়াট উই শুড নো অ্যাবাউট দ্য পিপল উই ডোন্ট নো

লেখক ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েলের এই বই যোগাযোগকে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শেখায়।

টকিং টু স্ট্রেঞ্জারস: হোয়াট উই শুড নো অ্যাবাউট দ্য পিপল উই ডোন্ট নো

মানুষের আচরণ ও প্রেরণা বোঝার জন্য বইটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অপরিচিতদের সঙ্গে কথা বলার বিভিন্ন কৌশল শিখতে পারবেন এই বই থেকে।

অ্যাপ থেকে শেখা

১. টেড

টেডের অ্যাপে প্রচুর বক্তৃতা পাবেন। নানা বিষয়ের আলোচনা পাবেন। এগুলো মন দিয়ে শুনলে ও দেখলে আপনার মধ্যেও অন্যের সামনে নিজের ধারণা উপস্থাপনের আগ্রহ জাগতে পারে। কীভাবে গল্প বলতে হয়, কীভাবে শ্রোতার মনোযোগ ধরে রাখতে হয়, কীভাবে প্রেজেন্টেশন স্লাইডের সঙ্গে কথার সামঞ্জস্য রাখতে হয়, সবটাই শিখতে পারবেন।

২. চ্যাটজিপিটি

বলতে পারেন এ আর নতুন কী। তবে চ্যাটজিপিটিও কিন্তু যোগাযোগ শেখার কার্যকর টুল হতে পারে। চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে আপনি পেশাদার ই–মেইল বা রিপোর্ট লেখার অনুশীলন করতে পারেন। জটিল ধারণাকে সরল ভাষায় ব্যাখ্যা করার জন্য অনুরোধ করতে পারেন। এটি আপনার লিখিত যোগাযোগের স্পষ্টতা ও শব্দভান্ডার (ভোকাবুলারি) বাড়াতে সাহায্য করবে।

৩. ইংলিশ কনভার্সেশন প্র্যাকটিস

ইংরেজি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এ ধরনের অ্যাপ খুব কার্যকর। যোগাযোগের ভিত্তি হলো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সাবলীলভাবে কথা বলা। এই অ্যাপ বাস্তব জীবনের কথোপকথনের পরিস্থিতি ও সংলাপ সরবরাহ করে। এটি আপনাকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কীভাবে কথা শুরু করতে হয়, মতপ্রকাশ করতে হয় এবং প্রশ্ন করতে হয়, তা শিখতে সাহায্য করবে।

আরও পড়ুন

অনলাইন কোর্স থেকে শেখা

১. হোয়ার্টন কমিউনিকেশন স্কিলস (কোর্সেরা)

এটি পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির হোয়ার্টন স্কুল অব বিজনেসের একটি কোর্স। এতে পেশাদার পরিবেশে কার্যকর যোগাযোগের কৌশল শেখা যায়। এই কোর্স সেই শিক্ষার্থীদের জন্য আদর্শ, যাঁরা কর্মজীবনের শুরুতেই নেতৃত্ব ও ব্যবসায়িক যোগাযোগের ভিত্তি মজবুত করতে চান। কোর্সটি করলে পেশাদার প্রেজেন্টেশন এবং পিচিংয়ের কৌশল, শ্রোতাদের প্রভাবিত করার ও তাঁদের মনোযোগ ধরে রাখার উপায় শিখতে পারবেন।

২. ইন্টারপারসোনাল স্কিলস (কোর্সেরা)

কোর্সটি তৈরি করেছে বিখ্যাত প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইবিএম। যোগাযোগ মানে কেবল কথা বলা নয়, এটি ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সম্পর্ক তৈরির একটি প্রক্রিয়া। এই কোর্সটি বিশেষ করে আবেগকেন্দ্রিক বুদ্ধিমত্তা ও সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেয়। দলগত কাজ এবং নেগোসিয়েশনের জন্য বিভিন্ন কৌশল এই কোর্স থেকে শিখতে পারবেন।

৩. দ্য আর্ট অব কমিউনিকেশন (গ্রামীণফোন একাডেমি)

যেহেতু বাংলাদেশি তরুণদের জন্যই তৈরি, তাই গ্রামীণফোন একাডেমির এই কোর্স থেকে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যোগাযোগের কৌশল শিখতে পারবেন। এই কোর্সে দৈনন্দিন জীবনের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমের যোগাযোগের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যাঁরা যোগাযোগদক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার শিখতে আগ্রহী, তাঁদের জন্য এটা বেশ কাজের হতে পারে।