ডানহাতিদের চেয়ে বাঁহাতি মানুষ অধিক বুদ্ধিমান ও সৃষ্টিশীল, রোজগারও করেন বেশি

বাঁ হাতের ভেলকি, বাঁ হাতের খেল, বাঁ হাতের ব্যাপার কিংবা কথায় বাঁ হাত ঢোকানো—বাঁ হাত নিয়ে এমন সব প্রবাদ হরহামেশাই ব্যবহার করি আমরা। আবার ছেলেদের বাঁ হাতের তালু চুলকালে নাকি অর্থব্যয় হয়। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে উল্টো, ঘটে অর্থযোগ। সমাজে এমন বিশ্বাসও চালু আছে।

বিখ্যাত কয়েকজন বাঁহাতি মানুষ
ছবি: সংগৃহীত

দেশে দেশে বাঁ হাত নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কারও কম নয়। প্রাচীনকাল থেকেই বাঁহাতি মানুষদের সইতে হয়েছে নানা অপবাদ-অবজ্ঞা। তাঁদের এমনকি দুর্ভাগ্যের প্রতীকও মনে করা হতো। ভারতীয় উপমহাদেশে বাঁহাতিদের ওপর নানা ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ছিল। প্রাচীন মিসরে তাঁদের পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হতো না।

এ দিকে ডান শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘রাইট’, যার আরেক অর্থ ‘ঠিক’। তবে কি ‘বাম’ মানে ‘বেঠিক’! লাতিন শব্দ ‘সিনিস্টার’ অর্থ ‘বাঁ’। অথচ ইংরেজিতে অশুভ বা দুর্ভাগা বোঝাতে ব্যবহৃত হয় এই শব্দ। এভাবে যুগে যুগে নানা অযৌক্তিক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন বাঁহাতিরা।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধ্যানধারণা পাল্টেছে। তাও যেনতেন পাল্টানো নয়, রীতিমতো ইতিবাচক মনোভাব এখন তাঁদের প্রতি। আর হবেই না বা কেন! বিশ্বে বাঁহাতি মানুষের সংখ্যা মাত্র দশ শতাংশের কিছু কম বা বেশি। কিন্তু শতাংশের হিসাবে ছোট এই তালিকায় যেসব নাম আছে, জানলে আপনাকেও ভাবতে হবে নতুন করে। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, চিত্রকর লেওনার্দো দা ভিঞ্চি, দার্শনিক অ্যারিস্টটল, সংগীতজ্ঞ মোৎজার্ট, ধনকুবের বিল গেটস, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিংবা অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন—নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবচেয়ে উজ্জ্বল এই মানুষেরা সবাই বাঁহাতি। গবেষণা বলছে, বাঁহাতি মানুষেরা তুলনামূলকভাবে অধিক বুদ্ধিমান ও সৃষ্টিশীল। তাঁদের উপস্থিত বুদ্ধি বেশি। তাঁরা নাকি ডানহাতি মানুষের চেয়ে রোজগারও করেন বেশি।

বিশ্বে নিজ নিজ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল অনেক মানুষ বাঁহাতি

আজ ১৩ আগস্ট, আন্তর্জাতিক বাঁহাতি দিবস। ১৯৭৬ সালে ‘লেফট হ্যান্ডার্স ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন ডি আর ক্যাম্পবেল নামের এক ব্যক্তি। তাঁর হাত ধরে দিবসটির যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯২ সালে লেফট হ্যান্ডার্স ক্লাবের উদ্যোগে বড় করে পালন করা হয় দিনটি। এরপর ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে