বাগানে বা বারান্দার টবে খুব সহজে অপরাজিতা ফুল ফোটাবেন যেভাবে
মুগ্ধতা ছড়ানো চমৎকার নীল রঙের ফুল অপরাজিতা। নীল রঙের বলে অনেকেই একে ‘নীলকণ্ঠ’ নামে ভুল করেন। কেননা ‘নীলকণ্ঠ’ নামে আলাদা একটি ফুলই আছে প্রকৃতিতে। তবে কেবল নীল নয়, আকাশি থেকে শুরু করে বেগুনি, হালকা বেগুনি, গোলাপি, ধূসর ও সাদা রঙের অপরাজিতারও দেখা মেলে। ফুলটি সিঙ্গেল পেটাল বা এক পাপড়ির তো হয়ই, মাল্টি পেটাল বা একাধিক পাপড়িতেও দেখা যায়। বাগানের সৌন্দর্য বাড়ানো এই রঙিন ফুলের পাপড়ি ডুবিয়ে চা বানিয়েও খাওয়া যায়, যা বেশ স্বাস্থ্যকর। চলুন, বাগানে কীভাবে অপরাজিতার আগমন ঘটাবেন, তা নিয়ে বিস্তারিত জানা যাক আজ।
উপযুক্ত টব নির্বাচন
শুরুতে ছোট কিংবা বড় যেকোনো টবের মাটিতেই অপরাজিতার বীজ বুনতে পারেন। বীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা গজাবে। লতিয়ে ওঠা চারা ৪-৬টি পাতা ছেড়ে বড় হয়ে উঠলে ১০ ইঞ্চি ব্যাসের টবে স্থানান্তর করতে পারেন। তুলনামূলক বড় টব গাছের শিকড় বৃদ্ধি ও সুস্থ–সবলভাবে বেড়ে উঠতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। প্রতিটি টবে সুস্থ–সবল একটি বা দুটি চারাই যথেষ্ট।
উপযুক্ত মাটি নির্বাচন
অপরাজিতা বেশ শক্তপোক্ত গাছ, যেকোনো ধরনের মাটিতেই দিব্যি বেড়ে উঠতে পারে, ফুল ফোটায়। এর কোনো অভিযোগ নেই। ফলে মাটি নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তারও কারণ নেই। চাইলে ফুল ফোটার সময় টবের মাটির সঙ্গে গোবর বা কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট–জাতীয় জৈবসার যোগ করতে পারেন।
বীজ অথবা কাটিং থেকে চারা উৎপাদন
সহজেই বীজ বা কাটিং থেকে অপরাজিতার চারা গজানো সম্ভব। কোনো গাছে অপরাজিতা ফুলের উপস্থিতি টের না পেলে ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন, ফুলের পাশাপাশি মটরশুঁটির মতো ঝুলতে থাকা ফল বা বীজপত্রের দেখা পেয়ে যাবেন। কাঁচা অবস্থায় সবুজ আর পরিপক্ব হলে শুঁকিয়ে বাদামি রং ধারণ করে বীজপত্রটি। শুকিয়ে আসা বাদামি বীজপত্র বীজ সংগ্রহ করতে পারেন। বীজ দেখতে অনেকটা বরবটির বীজের মতো, আকারে ছোট আর কালো বা খয়েরি রঙের।
এবার বীজগুলো বাগানে বা টবের ঝুরঝুরে মাটিতে বপন করে দিলেই হলো। যেহেতু খুব শক্ত গড়নের বীজ, তাই আগের দিন সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভেজা বীজগুলো বপন করতে পারেন। আবার গাছ একবার বড় হলে তার থেকে বীজ পড়েও আপনাআপনি চারা গজাতে দেখা যায়।
আর কাটিং করার জন্য, পাতা ফেলে দিয়ে অপরাজিতার লতানো ডাল আর্দ্র মাটিতে রোপণ করে দিলেই হলো। কয়েক দিনের মধ্যেই শূন্য ডালে পাতা মেলে নতুন রূপে বেড়ে উঠবে গাছ।