অল্প কথার গল্পকথায় আলুর চপ

আলুর চপ। মুখরোচক। খাওয়া যায় নানাভাবে। আর এই আলুর চপে ফিরে পাওয়া যায় হারানো শৈশব।

আহ্‌! জিবে জল এসে যায়। পেতাম যদি এক বাটি মুড়ি আর আলুর চপ। বলতে কি, মধ্যবিত্ত বাঙালির কাছে আলুর চপ অতিপ্রিয় এক মুখরোচক খাবার। যেমন তার স্মার্ট লুক, তেমন তার মুখে গলে যাওয়া অপূর্ব স্বাদ। ওপরে মুচমুচে খোলের ওপর কামড় পড়লে অন্য রকম অনুভূতি হয়। মসলাদার হালকা ঝাল আলুর চপে খুঁজে পাই হারানো শৈশব।

চপের পীঠস্থান হচ্ছে কলকাতা। এ সিটি অব জয়ের অলিতে-গলিতে আর জনপ্রিয় রেস্তোরাঁগুলোতে আলুর চপ জনপ্রিয় পদ। নানা বৈচিত্র্যের চপ সেখানে তৈরি হয়। আলুর চপ, চিকেন চপ, ভেজিটেবল চপ, মাটন চপ, ফিশ চপ, সয়া চপ। আমার কিশোরবেলার কলকাতার। থিয়েটার দেখতে রবীন্দ্রসরণিতে যেতাম। সেখানে বিরতিকালে চপ খেতাম। সে যে কী অসাধারণ সবজি চপ। বিট দেওয়ার কারণে চপের রং গাঢ় গোলাপি থাকত ভেতরে। আর ওপরটা খুব মচমচে। ছোট ছোট চপ আনন্দ ছড়াত।

হলের বাইরে বেশ একটা জটলা দেখা যেত চপ কিনতে। কলকাতার রেস্তোরাঁয় চপ পরিবেশিত হয় চাটনির সঙ্গে। অনেকে এটি কাঁচা পেয়াজ, কাঁচা মরিচ, কাসুন্দি, ধনেপাতার চাটনি দিয়ে খেতে পছন্দ করেন। পাড়ায় পাড়ায় দোকানে যে চপ পাওয়া যায়, তা সাধারণত বেসনের গোলায় চুবিয়ে ভাজা হয়। তাকে আলুনি বলে আমাদের বাংলাদেশে। রোজার সময় চপের বহুল প্রচলন ও জনপ্রিয়তা দেখি। চপ খেতে ছেলে–বুড়ো সবাই ভালোবাসে। চপের বন্ধু হচ্ছে কাটলেট। সে গল্প আরেক দিন।

সবাই চপ খান আর আনন্দ মেতে উঠুন।

উপকরণ

সেদ্ধ আলু, লাল মরিচগুঁড়া, ধনেগুঁড়া, জিরাগুঁড়া, গোলমরিচের গুঁড়া, হলুদগুঁড়া, এলাচগুঁড়া, দারুচিনির গুঁড়া, লবণ, চিনি, লেবুর রস, পাউরুটি, ব্রেডক্রাম, তেল, ঘি, ধনেপাতা ও কাঁচা মরিচকুচি। আধা ভাঙা চিনাবাদাম, পেয়াজকুচি ও ডিম।

প্রণালি

সব মসলা, পেঁয়াজ তেলে চার মিনিট ভেজে নিতে হবে। এবার সেদ্ধ আলু স্ম্যাশ করে নিয়ে তার সঙ্গে আলুসেদ্ধ মেশাতে হবে। স্বাদমতো লবণ ও চিনি দিতে হবে। এরপর ধনেপাতাকুচিও মিশিয়ে দিয়ে ডিমাকৃতি করে চপ তৈরি করে নিতে হবে। গোলও করা যেতে পারে।

এবার চপগুলো প্রথমে ফেটানো ডিমের সাদায় চুবিয়ে পরে ব্রেড ক্রামে গড়িয়ে নিয়ে ডুবো তেলে ভেজে গরম-গরম পরিবেশন করতে হবে।
রেসিপি প্রদায়ক: সৌখিন শেফ